চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১ নম্বর দক্ষিণ পাহাড়তলী ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর তৌফিক আহমেদ চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আজ শনিবার দুপুরে বিদেশে যাওয়ার সময় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। তৌফিক নগর যুবলীগের সদস্য। সাবেক কাউন্সিলর হত্যাসহ একাধিক মামলার আসামি।

পুলিশ জানায়, তৌফিকের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনে হামলার মামলা, অস্ত্র ও খুনের মামলা রয়েছে। তিনি ২০১৬ সালের ৫ মে হাটহাজারীর মির্জাপুরের যুবলীগ কর্মী নুরে এলাহীকে হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। এ ছাড়া কোতোয়ালি থানায় একটি অস্ত্র মামলা রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।

গ্রেপ্তার সাবেক কাউন্সিলর তৌফিক প্রয়াত নগর আওয়ামী লীগ নেতা এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী হিসেবে পরিচিত। তিনি বর্তমানে নগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।

তৌফিকের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ

যুবলীগ কর্মী নুরে এলাহী হত্যা মামলায় ২০১৮ সালে ১৫ জুলাই অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। পিবিআই চট্টগ্রামের পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ আদালতে কাউন্সিলর তৌফিককে আসামি করে চার পৃষ্ঠার অভিযোগপত্র জমা দিয়েছিল। ওই অভিযোগপত্রে নুরে এলাহী হত্যার বিস্তারিত উঠে আসে।

আদালতে জমা দেওয়া অভিযোগপত্রে বলা হয়, ‘হাটহাজারীর মির্জাপুর ইউনিয়নে আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী নুরুল আফছারের নির্বাচনী প্রচারণার শেষ দিন ছিল ২০১৬ সালের ৫ মে। ওই দিন বিকেলে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা শেষে সন্ধ্যায় হাটহাজারীর সরকারহাট বাজারে নির্বাচনী কার্যালয়ের সামনে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন নুরে এলাহীসহ ছয় থেকে সাতজন। ঘণ্টাখানেক পর সেখানে আসেন কাউন্সিলর তৌফিক আহমেদ চৌধুরী। একপর্যায়ে তিনি তাঁর হাতে থাকা একটি পিস্তল দেখিয়ে উপস্থিত সবাইকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘নতুন অস্ত্র কিনেছি, অনেক গুলি লোড করা যায়।’ এ কথা বলেই তিনি দুটি ফাঁকা গুলি ছোড়েন। নিচের দিকে আরেকটি ছোড়ার সময় নুরে এলাহী গুলিবিদ্ধ হন। মুহূর্তের মধ্যে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি। পরে তৌফিক ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত সরে পড়েন। ওই দিন রাতে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান নুরে এলাহী।

চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার (হাটহাজারী অঞ্চল) কাজী মো.

তারেক আজিজ প্রথম আলোকে বলেন, বিদেশে যাওয়ার সময় ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সাবেক কাউন্সিলর তৌফিক আহমেদকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে তাঁকে পল্টন থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। হাটহাজারীতে রয়েছে তিনটি। এসব মামলায় তাঁকে চট্টগ্রাম আনা হবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য বল গ

এছাড়াও পড়ুন:

আজ লতিফুর রহমানের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী

দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী গোষ্ঠী ট্রান্সকম গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান লতিফুর রহমানের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ১ জুলাই। ২০২০ সালের এই দিনে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের চিওড়া গ্রামে নিজ বাড়িতে তিনি ইন্তেকাল করেন। তাঁর জন্ম ১৯৪৫ সালে।

দেশের ব্যবসায় জগতে এক অনুকরণীয় নাম লতিফুর রহমান। ব্যবসায় সততা ও নৈতিকতার কারণে সবার কাছে তিনি ছিলেন একজন প্রথিতযশা ব্যক্তিত্ব। ব্যবসার ক্ষেত্রে সামাজিকভাবে দায়বদ্ধ ও ন্যায়পরায়ণ ব্যবসায়ী নেতা হিসেবে ২০১২ সালে লতিফুর রহমানকে সম্মানজনক অসলো বিজনেস ফর পিস অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে নরওয়েভিত্তিক বিজনেস ফর পিস ফাউন্ডেশন, অসলো। সৎ ও সফল উদ্যোক্তা হিসেবে তিনি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বহু স্বীকৃতি পেয়েছেন।

বাংলাদেশে স্বাধীন সম্পাদকীয় নীতির ভিত্তিতে পরিচালিত গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠায়ও লতিফুর রহমানের অবদান স্বীকৃত। তিনি দেশের সর্বাধিক পঠিত বাংলা দৈনিক প্রথম আলো ও ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টার-এর উদ্যোক্তা।

লতিফুর রহমানের শিক্ষাজীবন শুরু হয় ঢাকার সেন্ট ফ্রান্সিস স্কুলে। ১৯৫৬ সালে শিলংয়ের সেন্ট এডমন্ডস স্কুলে ভর্তি হন। পরে কলকাতার সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে সিনিয়র কেমব্রিজ পরীক্ষা দেন। ঢাকায় ফিরে এসে ১৯৬৬ সালে লতিফুর রহমান চাঁদপুরের পারিবারিক পাটকল ডব্লিউ রহমান জুট মিলস লিমিটেডে নির্বাহী হিসেবে যোগ দেন। ১৯৭২ সালে টি হোল্ডিংস লিমিটেড চালুর মাধ্যমে নাম লেখান চা রপ্তানি ব্যবসায়। ১৯৮৭ সালে তাঁর নেতৃত্বে ট্রান্সকম গ্রুপের যাত্রা শুরু। ওষুধশিল্প, বৈদ্যুতিক, ইলেকট্রনিকস, গণমাধ্যম, কোমল পানীয়, চা ও ভোগ্যপণ্যসহ বিভিন্ন ব্যবসা খাতে গ্রুপটির একাধিক কোম্পানি রয়েছে। ২০১৭ সালে ট্রান্সকম বেভারেজেস লিমিটেড পেপসিকোর ‘গ্লোবাল বটলার অব দ্য ইয়ার ২০১৬’ পুরস্কার পায়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সিনিয়র সিটিজেন ক্যাটাগরিতে ২০১৬ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত টানা পাঁচ বছর লতিফুর রহমান সর্বোচ্চ করদাতার পুরস্কার পেয়েছেন। তিনি মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি, ঢাকার (এমসিসিআই) সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই) ও ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশসহ ব্যবসা খাতের বিভিন্ন সংগঠনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।

লতিফুর রহমানের নাতি ফারাজ আইয়াজ হোসেন ২০১৬ সালের এই দিনে রাজধানীর গুলশানে হোলি আর্টিজান বেকারিতে জঙ্গিদের হামলায় নিহত হন। ফারাজ আইয়াজ হোসেন ট্রান্সকম গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সিমিন রহমানের ছেলে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাংলাদেশে সন্ত্রাসবাদ যাতে আবার মাথাচাড়া না দেয়
  • আজ লতিফুর রহমানের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী