‘সঠিকভাবে রক্তচাপ মাপুন, নিয়ন্ত্রণে রাখুন এবং দীর্ঘজীবী হোন’- এই প্রতিপাদ্য নিয়ে শনিবার (১৭ মে) পালিত হলো বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস।

দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ কর্তৃক মে মাসব্যাপী ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে গণমুখী সেমিনার, বৈজ্ঞানিক সেমিনার, দেশব্যাপী বিনামূল্যে রক্তচাপ পরিমাপ, গণমাধ্যমে স্বাস্থ্য বিষয়ক অনুষ্ঠানমালা, সচেতনতামূলক পোষ্টার ও লিফলেট প্রকাশসহ নানা কর্মসূচি চলছে।

দিবসটি উপলক্ষে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতাল অ্যান্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউট, মিরপুর এর অডিটোরিয়ামে এক গণমুখী সেমিনার হয়। সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মো.

সাইদুর রহমান, সচিব, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়।

আরো পড়ুন:

কিটো ডায়েট সম্পর্কে চিকিৎসকের সতর্কবার্তা

গবি ক্যান্টিনে ফের দুরবস্থা, স্থায়ী সমাধান দাবি

সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ-এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক খন্দকার আব্দুল আউয়াল (রিজভী), স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহাসচিব অধ্যাপক ফজিলা-তুন-নেসা মালিক।

এছাড়া গণমুখী সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এপিডেমিওলজি অ্যান্ড রিসার্চ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক সোহেল রেজা চৌধুরী।

হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার (অব.) অধ্যাপক ডা. ইউনুছুর রহমান ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে সেমিনারটি সমাপ্ত হয়। প্রায় তিন শতাধিক বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন।

বক্তারা বলেন, উচ্চ রক্তচাপ একটি ‘নিরব ঘাতক’। আমাদের দেশে প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে প্রায় ২৫ শতাংশ মানুষ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন। কিন্তু আশঙ্কাজনক বিষয় হলো-এদের প্রায় ৫০ শতাংশই জানেন না যে তারা এই সমস্যায় আক্রান্ত।

উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ, স্ট্রোক, কিডনি বিকলসহ বিভিন্ন জটিল ও প্রাণঘাতী অসুস্থতার অন্যতম প্রধান ঝুঁকিপূর্ণ কারণ। তাই এই নীরব অথচ মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও চিকিৎসার জন্য জনসাধারণ, চিকিৎসক এবং সংশ্লিষ্ট সবার মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধি জরুরি।

উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলা উচিত। পাশাপাশি, এই রোগ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত ব্যায়াম, মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ এবং নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

উচ্চ রক্তচাপ শনাক্তকরণ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ বর্তমানে দেশের ৪৪টি জেলার ৩১০টি উপজেলার স্বাস্থ্য সেবা কেন্দ্রে অসংক্রামক রোগ কর্মসূচি নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। ইতোমধ্যে প্রায় ১৮২টি উপজেলার ১০ হাজারের বেশি স্বাস্থ্যকর্মীদের উচ্চ রক্তচাপ পরিমাপ ও এ সংক্রান্ত ওষুধ নির্দেশনা নিয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। মাঠপর্যায়ে রক্তচাপ মাপা, জীবনধারা পরিবর্তনের পরামর্শ, চিকিৎসকের কাছে রেফার করা ও সচেতনতা তৈরি-এই কাজগুলো নিয়মিতভাবে করে যাচ্ছে প্রশিক্ষিত কর্মীরা।

বর্তমানে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত রেজিস্টার্ড ৮ লাখের বেশি মানুষ এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এর মধ্যে ৫৫ শতাংশ মানুষের উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

এর আগে সকাল সাড়ে ৬টায় শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মিরপুর থেকে বিশ্ব উচ্চ রক্তচাপ দিবস উপলক্ষে একটি র‌্যালি শুরু হয়ে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন হাসপাতালে গিয়ে শেষ হয়। র‌্যালিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েকশ মানুষ অংশ নেন। 

ঢাকা/হাসান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ ক ৎসক

এছাড়াও পড়ুন:

সোনারগাঁয়ে ঐতিহ্যবাহী পাগলা গাছের মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের হামছাদী গ্রামে গাছের খুঁটিকে পূজা করে থাকেন হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা। ৫০০ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এই পূজা করছেন।পূজা উপলক্ষে সেখানে আয়োজন করা হয় মেলা। স্থানীয়রা মেলাটিকে ‌‌‘পাগলা গাছের মেলা’ নামেই চেনেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার শুরু হওয়া মেলায় যোগ দিতে আশপাশের এলাকার মানুষ ভিড় করছেন হামছাদী গ্রামে। শনিবার (১৭ মে) শেষ হবে মেলার আনুষ্ঠানিকতা। 

প্রতি বছর ৩১ বৈশাখ থেকে জৈষ্ঠ মাসের ২ তারিখ পর্যন্ত তিন দিনব্যাপী এ মেলার আয়োজন করা হয়। মূলত ৩১ বৈশাখ দুপুর থেকে হামছাদী গ্রামের বটতলায় মেলার পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। মেলার আনুষ্ঠানিকতা পূজা-অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়।

আরো পড়ুন:

মঙ্গলবার দিনব্যাপী কবি সুকান্ত মেলা, প্রস্তুতি সম্পন্ন

টাঙ্গাইলে জামাই মেলায় দর্শনার্থীদের ঢল

এলাকাবাসী জানান, ৫০০ বছর আগে হামছাদী গ্রামের ফনি সেন ও সুরেন্দ্র সেন নামের দুই ভাই ঘর তৈরির জন্য বার্মা থেকে ২০টি খুঁটি কিনে আনেন। জ্যৈষ্ঠ মাসের ১ তারিখ রাতে তারা দুই ভাই স্বপ্নে দেখেন, তাদের কেনা খুঁটি থেকে দুইটি খুঁটি নিজেদের দেবতা হিসেবে পরিচয় দিচ্ছে। খুঁটি দুইটি পাগল রূপ ধারণ করে তাদের উদ্দেশ্যে বলছিল, আমাকে ঘরের খুঁটির কাজে লাগাবে না। আমি তোমাদের দেবতা। আমাদের উপাসনা কর। এতে তোমাদের মঙ্গল হবে। পাপ থেকে মুক্তি পাবে। রোগ নিরাময় হবে।

এ ঘটনার পরের দিন দুই ভাই বাড়ি থেকে প্রায় ৫০০ গজ দূরে একটি পুকুর পাড়ে খুঁটি দুইটি দেখতে পান। এরপর থেকে তারা দুই ভাই খুঁটিগুলোকে দেবতা মনে করে পূজা করতে থাকেন। তখন থেকে ওই এলাকার হিন্দুরা গাছের খুঁটি দুইটিকে প্রতিবছর পহেলা জ্যৈষ্ঠে পূজা করতে শুরু করেন। পরে একটি খুঁটি হারিয়ে যায়।

এলাকাবাসী জানান, খুঁটিটি পূজামণ্ডপের পার্শ্ববর্তী একটি পুকুরে সারা বছর ডুবিয়ে রাখা হয়। পাগল ভক্তরা প্রতিবছর পুকুর থেকে খুঁটিটি উঠিয়ে দুধ দিয়ে গোসল করান। তারা ফল, ঘি, খাসি ও পাঠা পাগলা খুঁটির নামে উৎসর্গ করেন। পূজা শেষে খুঁটিটি আবারো ওই পুকুরের পানিতে ডুবিয়ে রাখা হয়। 

পূজা উপলক্ষে আয়োজিত মেলায় নারায়ণগঞ্জের পাশাপাশি ঢাকা, মানিকগঞ্জ, কুমিল্লা, নরসিংদীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে হিন্দুরা যোগ দিতে আসেন। অন্য ধর্মের লোকরাও আসেন।

শুক্রবার (১৬ মে) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেলায় নাগর দোলা, বাঁশের বাঁশি, কাঠের চেয়ার, হাতপাখা, চৌকি, মোড়া, চুড়ি, প্লাস্টিকের খেলনা, মিষ্টির দোকানসহ বিভিন্ন সামগ্রী সাজিয়ে বসেছেন দোকানিরা। 

হামছাদী গ্রামের ইমরান হোসেন বলেন, “পূজা উপলক্ষে মেলার আয়োজন হয়। এই মেলায় যোগ দিতে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতেই আসেন আত্মীয়-স্বজনরা। প্রতিবছর এ মেলার জন্য স্বজনরা অপেক্ষায় থাকেন।”

পূজা উদযাপন কমিটির সদস্য তপন কুমার চক্রবর্তী বলেন, “এ মেলা আমাদের হিন্দু সম্প্রদায়ের ঐতিহ্য বহন করে। মেলার আনুষ্ঠানিকতা পূজা অর্চনার মধ্য দিয়ে শুরু হয়।”

তিনি বলেন, “শান্তিপূর্ণভাবে মেলা উদযাপনের লক্ষ্যে এলাকায় নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। সন্ধ্যার পর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত মেলায় গীতা পাঠ ও কীর্তন পরিবেশিত হয়। এই পাগলা গাছের মেলা দর্শনার্থীদের উপস্থিতিতে মিলন মেলায় পরিণত হয়।”

ঢাকা/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমরা যুদ্ধ জিতেছি, তবে শান্তি চাই: শাহবাজ শরিফ
  • আমরা যুদ্ধ জিতেছি, তবে শান্তি চাই: পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর দাবি
  • ঈদের ছুটির সমন্বয়ে শনিবার খোলা পুঁজিবাজার
  • শনিবার খোলা থাকবে সব সরকারি অফিস
  • সোনারগাঁয়ে ঐতিহ্যবাহী পাগলা গাছের মেলায় দর্শনার্থীদের ভিড়
  • খুলনায় ওয়ালটনের আনন্দ শোভাযাত্রা ও ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প
  • উত্তরাঞ্চলেরই ২ কোটি মানুষ সেচের পানির অভাবে ক্ষতিগ্রস্ত
  • ইসলাম মিয়ার মায়ের দশম মৃত্যু বার্ষিকী আজ