রাজশাহীর তানোরের কলেজছাত্র চিত্তরঞ্জন পাল (২৬) হত্যার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। এ মামলায় তার প্রেমিকার বাবা, মা ও ভাবিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার (১৮ মে) তাদের আদালতে তোলা হবে।

নিহত চিত্তরঞ্জনের বাড়ি উপজেলার হাবিবনগর পালপাড়া গ্রামে। তার বাবার নাম মনোরঞ্জন পাল। একমাত্র ছেলে নিখোঁজ হওয়ার পরদিন তিনি তানোর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন। প্রেমঘটিত কারণে ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে বলে তার দাবি।

আরো পড়ুন: তানোরে যুবকের বস্তাবন্দী হাড়গোড় উদ্ধার

আরো পড়ুন:

মুন্সীগঞ্জে স্ত্রীকে কুপিয়ে হত্যার অভিযোগে স্বামী গ্রেপ্তার

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিয়ের আট দিনের মাথায় যুবক খুন, স্ত্রী আটক

নিখোঁজের ২০ দিন পর শনিবার (১৭ মে) সকালে হাবিবনগর এলাকার শিব নদের কচুরিপানার ভেতর চিত্তরঞ্জনের বস্তাবন্দী গলিত মরদেহ পাওয়া যায়। পরনে থাকা লুঙ্গি ও গেঞ্জি দেখে পরিবার তার মরদেহ শনাক্ত করে। এ ঘটনায় চিত্তরঞ্জনের বাবা মনোরঞ্জন পাল ছয়জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যা মামলা করেছেন।

গ্রেপ্তার তিনজন হলেন- একই গ্রামের স্বপন চন্দ্র পাল (৫৮), তার স্ত্রী ছবি রানী (৫০) এবং কাজলী রানী পাল (৩০)। মামলার অন্য তিন আসামি স্বপনের ছেলে সুবোদ পাল (৩০), মেয়ে কুমারী কামনা পাল (২৩) ও জেলার মোহনপুর উপজেলার পেয়ারপুর গ্রামের মো.

রাজু (৪৫)। গ্রেপ্তার কাজলী রানী পাল আসামি কামনা পালের চাচাতো ভাবি।

মামলার এজাহারের বর্ণনা অনুযায়ী, অনার্স তৃতীয় বর্ষের ছাত্র চিত্তরঞ্জনের সঙ্গে কলেজছাত্রী কামনা পালের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। উভয় পরিবারে বিষয়টি জানাজানি হলে মনোরঞ্জন তার ছেলের বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে স্বপন পালের বাড়ি যান। তারা বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করে বাড়ি থেকে বের করে দেন। কামনার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলে চিত্তরঞ্জনকে মেরে ফেলারও হুমকি দেওয়া হয়।

এরপরও তাদের প্রেমের সম্পর্ক চলতেই থাকে। কামনা নিয়মিত চিঠিও লিখতেন। গত ২৬ এপ্রিল রাতের খাবার খেয়ে মনোরঞ্জনের পরিবারের সবাই ঘুমিয়ে পড়েন। ভোর ৪টার দিকে বিদ্যুৎ চলে গেলে মনোরঞ্জনের ঘুম ভেঙে যায়। এ সময় তিনি দেখেন, চিত্তরঞ্জনের ঘরের দরজা খোলা, ভেতরে কেউ নেই। তারপর থেকে চিত্তরঞ্জনের খোঁজ পাওয়া যায়নি। গত ২৭ এপ্রিল থেকে কামনা ও তার ভাই সুবোদকেও এলাকায় দেখা যায়নি। মনোরঞ্জন ছেলের ব্যাপারে স্বপন চন্দ্র পালের কাছে জানতে চেয়েছিলেন। স্বপন তাকে এলোমেলো জবাব দেন এবং ধমক দেন। ছেলেকে খুঁজে না পেয়ে মনোরঞ্জন তানোর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।

এজাহারে বলা হয়, মামলার আসামিরা চিত্তরঞ্জনকে কৌশলে তাদের বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যার পর লাশ বস্তায় ভরে শিব নদে ফেলে দেন। শনিবার সকালে শিব নদে বস্তাবন্দী গলিত এই লাশ পাওয়া যায়। পরনের গেঞ্জি ও লুঙ্গি দেখে ছেলের লাশ শনাক্ত করেন মনোরঞ্জন।

তানোর থানার ওসি আফজাল হোসেন বলেন, “প্রেমঘটিত কারণেই চিত্তরঞ্জনকে হত্যা করে লাশ বস্তায় ভরে নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তার তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে।” 

তিনি আরো বলেন, “গ্রেপ্তারকৃতদের রবিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হবে। মামলার অন্য তিন আসামিকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।”

ঢাকা/কেয়া/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য জন র ব হত য র স বপন

এছাড়াও পড়ুন:

ফায়ারফক্সে আসছে এআই উইন্ডো

কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা বা এআইকেন্দ্রিক ব্রাউজারের বাজার দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার মধ্যেই ফায়ারফক্সে নতুন এআই উইন্ডো নামের বিশেষ সুবিধা যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মজিলা। সুবিধাটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় প্রয়োজন অনুসারে একটি সমন্বিত এআই সহকারীর সাহায্য নিতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়াই থাকবে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণে।

এক ব্লগ বার্তায় মজিলা জানায়, এআই উইন্ডো ব্রাউজিংয়ে ক্ষেত্রে এআই নির্দেশনা ও ব্যক্তিগত সহায়তার সুবিধা দেবে। সুবিধাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় থাকবে না। আগ্রহী ব্যবহারকারীরা চাইলে নিজে থেকেই চালু করবেন। যেকোনো সময় বন্ধ করা যাবে। এআইনির্ভর এই সুবিধা ওপেন সোর্স প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে।

ফিচারটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ কিছু ব্যবহারকারীর কাছে উপলব্ধ হয়েছে। মজিলা জানিয়েছে, যে কেউ চাইলে আগের মতোই ফায়ারফক্স ব্যবহার করে নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজড অভিজ্ঞতা পাবেন। আরও বেশি গোপনীয়তা চাইলে প্রাইভেট উইন্ডো ব্যবহার করতে পারবেন। এআই উইন্ডো ব্রাউজিংকে আরও ব্যক্তিগত উপায়ে ব্যবহারের সুযোগ দেবে।

এআই চালিত ব্রাউজারের ব্যবহার বাড়তে থাকায় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এখন সার্চবারের জায়গায় চ্যাটবট যুক্ত করা বা সম্পূর্ণ এআইনির্ভর ব্রাউজার তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে। ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস বা পারপ্লেক্সিটির কমেট পুরোপুরি এআই এজেন্টকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।

ভবিষ্যতে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলনির্ভর ব্রাউজারের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিযোগিতার মধ্যেও ভিন্ন অবস্থান তৈরি করতে চেষ্টা করছে মজিলা। তারা বলছে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা—এই তিন নীতি সামনে রেখে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দেওয়া হচ্ছে। ওয়েবকে সবার জন্য উন্মুক্ত, মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে চায় মজিলা। মজিলার ভাষ্য অনুযায়ী, ফায়ারফক্সে কোনো একক ইকোসিস্টেমে ব্যবহারকারীকে আটকে রাখা হবে না। এআই ব্যবহারের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতাও থাকবে না। কখন, কীভাবে বা আদৌ এটি ব্যবহার করবেন কি না, এমন সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যবহারকারীর।

এ বছরের জুনে ফায়ারফক্সের অ্যাড্রেসবারে থাকা ইউনিফায়েড সার্চ সুবিধায় সরাসরি পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের মাধ্যমে অনুসন্ধানের অপশন যুক্ত করে মজিলা। নতুন এআই উইন্ডো ফিচার যুক্ত হলে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা আরও বহুমাত্রিক হয়ে উঠবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ