ভারতে আবার বন্ধ পাকিস্তানিদের ইউটিউব চ্যানেল
Published: 3rd, July 2025 GMT
চব্বিশ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই আবার বন্ধ হয়ে গেল বিশিষ্ট পাকিস্তানি ব্যক্তিদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অ্যাকাউন্ট। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আবার দেখা যাচ্ছে না পাকিস্তানি অভিনেতা–অভিনেত্রী–খেলোয়াড়সহ বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমের ইউটিউব চ্যানেল। গতকাল বুধবার এসব চ্যানেলের ওপর জারি হওয়া নিষেধাজ্ঞা শিথিল হয়েছিল, কিন্তু আজ সকাল থেকেই আবার বন্ধ।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনপ্রিয় এসব অ্যাকাউন্ট সরকারিভাবে আবার নিষিদ্ধ করা হয়েছে কি না, সে বিষয়ে কিছু জানা যায়নি। কিন্তু সেগুলো খুলতে গেলে দেখা যাচ্ছে, তাতে লেখা—‘আইনগত দাবির দরুন এই অ্যাকাউন্ট ভারতে বন্ধ রাখা হয়েছে।’
পেহেলগাম হত্যাকাণ্ড ও অপারেশন সিঁদুরের পর ভারতে এসব চ্যানেলের সম্প্রচার নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। অভিযোগ, ওই চ্যানেলগুলো ভারতের বিরুদ্ধে নানা ধরনের প্ররোচনামূলক খবর ও অভিমত প্রচার করছে।
আজ সকাল থেকে পাকিস্তানের সাবেক ক্রিকেটার শোয়েব আখতার, শাহিদ আফ্রিদি, অভিনেত্রী মাহিরা খান, হানিয়া আমির, মাওরা হোসেন, ইয়মুনা জায়েদি, অভিনেতা ফাওয়াদ খানের ইউটিউব চ্যানেল, ইনস্টাগ্রাম কিংবা ‘এক্স’ অ্যাকাউন্ট আর দেখা যাচ্ছে না। এক মাস বন্ধ থাকার পর গত বুধবার যখন মনে করা হচ্ছিল নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হয়েছে, তখন নতুন করে তা অদৃশ্য হওয়ার মধ্য দিয়ে মনে করা হচ্ছে চ্যানেলগুলো আবার নিষেধাজ্ঞার আওতায় চলে গেছে। গত বুধবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে কিছু অ্যাকাউন্ট চালু হয়েছিল। চব্বিশ ঘণ্টার মধ্যে এই মতবদল নিয়ে সরকারিভাবে অবশ্য এখনো কিছু জানানো হয়নি।
ভারতের বিরুদ্ধে সাম্প্রদায়িক উসকানিমূলক প্রচারের অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া চ্যানেলগুলোর মধ্যে ছিল ডন নিউজ, সামা টিভি, বোল নিউজ, রফতার, জিয়ো নিউজ, সুনো নিউজ, এআরওয়াই নিউজ, দ্য পাকিস্তান এক্সপেরিয়েন্সের মতো জনপ্রিয় নিউজ পোর্টালের ইউটিউব চ্যানেল। এ ছাড়া আরজু কাজমি, ওয়াসে হাবিব, আলী জাফর, মুনিব ফারুক, উমর চিনাদের মতো জনপ্রিয় ইউটিউবারদের ইনস্টাগ্রাম চ্যানেলও ব্লক করে দেওয়া হয়েছিল অপারেশন সিঁদুরের পর।
বুধবার ‘ব্লক’ করে দেওয়া চ্যানেলগুলোর কিছু ‘আনব্লক’ করার পর অল ইন্ডিয়ান সিনে ওয়ার্কার্স অ্যাসোসিয়েশন (এআইসিডবলিউএ) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করে, পাকিস্তানের সব শিল্পীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের চ্যানেল ভারতে নিষিদ্ধ করা হোক। হিন্দুত্ববাদী শিল্পী ও বিনোদনজগতের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অনেকে পাকিস্তানি শিল্পীদের ভারতীয় সিনেমায় অংশগ্রহণেরও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। পেহেলগাম–কাণ্ড ও অপারেশন সিঁদুরের আগে তৈরি হয়ে যাওয়া দিলজিৎ দোসাঞ্জের সিনেমা ‘সর্দারজি ৩’–এর মুক্তিও স্থগিত রাখা হয়েছে। ওই সিনেমায় পাকিস্তানি অভিনেত্রী হানিয়া আমির অভিনয় করেছেন বলে এই স্থগিতাদেশ। জাভেদ আখতার, নাসিরুদ্দিন শাহের মতো বিশিষ্ট ব্যক্তি দিলজিৎ দোসাঞ্জের পাশে দাঁড়ানোয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দিত হচ্ছেন। তাঁদের পাকিস্তানের দালাল বলা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অ য ক উন ট হয় ছ ল
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার
রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।
গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।
সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।
ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।
অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’