মিলা কি হারিয়ে গেলেন? এই প্রশ্ন ছিল তাদের, যাদের হৃদয়ে স্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছিলেন তারকা কণ্ঠশিল্পী মিলা ইসলাম। প্রত্যাশার প্রহর গুনে গুনে বছরের পর বছর পেরিয়ে গেছে, তবু কোনো আয়োজনে দেখা পাননি এই পপ তারকার। প্রত্যাশা তৈরি হয়েছিল মিলার কারণেই। কারণ এক যুগেরও বেশি সময় ধরে গানের ভুবনে যিনি রাজত্ব করেছেন, তাঁর আড়ালে চলে যাওয়া অনুরাগীরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেননি।

আবার যখন একের পর এক ভিন্ন ধাঁচের গান প্রকাশ করে এই ভার্সেটাইল শিল্পী জানান দিয়েছিলেন– সময়টা তাঁর হাতের মুঠোয় বন্দি, তখন মিলার হারিয়ে যাওয়া কিংবা গানের ভুবনে দেখা না দেওয়া অনেকের জন্যই ছিল বিস্ময় আর হতাশার। এই সত্যটা মিলাও হয়তো বুঝতে পেরেছিলেন। তাই তো ব্যক্তিজীবনের ঝড়ঝঞ্ঝা পেরিয়ে নতুন করে ফেরার আভাস দিয়েছিলেন। ঠিক এক বছর আগে ‘টোনা টুনি’ শিরোনামে একক গানের ভিডিও প্রকাশ করে আবারও শ্রোতাদের উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠার সুযোগ দিয়েছিলেন। তারও তিন বছর আগে ২০২১ সালে ‘আইস্যালা’ ছিল তাঁর সর্বশেষ প্রকাশিত গান।

দীর্ঘ বিরতির পর মিলার নতুন গান ছিল অনেকের জন্য নতুন উপহার পাওয়ার মতো আনন্দের। সেই আনন্দের রেশটা ফিকে হয়ে আসা শুরু হয়েছিল ‘টোনা টুনি’ প্রকাশের পর ফের মিলার আড়ালে চলে যাওয়ায়। তাই এই শিল্পীর ফেরা নিয়ে নতুন করে শুরু হয়েছিল জল্পনা-কল্পনা। একে একে কেটে যাচ্ছে, দিন-মাস-বছর। তবু দেখা নেই অংসখ্য সংগীতপ্রেমীর প্রিয় এই শিল্পীর। দিনের পর দিন প্রতীক্ষায় থেকেও যখন দেখা মিলছিল না, তখন মনে আবার মনে প্রশ্ন জেগেছিল, এই শিল্পীর কণ্ঠে আর কি নতুন গান শোনার সুযোগ পাওয়া যাবে না? এর উত্তর খুঁজতে গিয়ে যখন অনেকে দিশেহারা, তখন মিলা ঠিকই ব্যস্ত সংগীতাঙ্গনে আরেকটি বিস্ফোরণ ঘটনানোর জন্য।

তাঁর গাওয়া ‘বাপুরাম সাপুড়ে’, ‘রূপবান’, ‘ডিসকো বান্দর’ গানগুলো যেভাবে দেশজুড়ে আলোড়ন তুলেছিল, তেমন কিছু শ্রোতার কানে পৌঁছে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষায় কাজ করে যাচ্ছিলেন। যার সুবাদে আরও একবার ডাক পেলেন প্লেব্যাকে। শওকত আলী ইমনের সুরে ‘ইনসাফ’ সিনেমায় গাইলেন ‘আকাশেতে লক্ষ তারা ২.

০’ গানটি। যদিও ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কুলি’ সিনেমার ‘আকাশেতে লক্ষ তারা’ গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ‘আকাশেতে লক্ষ তারা ২.০’ তৈরি করা হয়েছে। এর পরও এর ফিউশন করতে গিয়ে শওকত আলী ইমন গানের পুরোনো গানের খোল-নলচে অনেকটা বদলে দিয়েছেন।

যদিও পুরোনো গানটি একটি বিদেশি গানের অনুকরণে করা, তবে ‘আকাশেতে লক্ষ তারা ২.০’-এর নব্বই ভাগ সুর মৌলিক। শুধু পুরোনো গান থেকে মাত্র একটি লাইন এতে ব্যবহার করা হয়েছে। যেজন্য মিলার গায়কি আলাদাভাবে জয় করে শ্রোতাহৃদয়। তাই ‘কুলি’র সঙ্গে ‘ইনসাফ’ সিনেমার গানের তুলনায় কেউ যাননি। বরং মিলার ফেরা ও গানে গানে অনুরাগীদের মনে কড়া নাড়ার এই চেষ্টাকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অনেকে। এতকিছুর পরও একটা প্রশ্ন থেকেই যায়। তা হলো– মিলা গানের ভুবনে নিয়মিত হবেন, নাকি আবার চলে যাবেন আড়ালে? 

উত্তরে মুচকি হেসে মিলা বলেন, ‘এবার আর শ্রোতাদের নিরাশ করব না। দীর্ঘ সফরের জন্যই এই ফেরা। তাই প্রতিনিয়ত শ্রোতাদের জন্য নতুন কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করে যাব। এজন্য শুধু নতুন গান তৈরি নয়; স্টেজ শো, টিভি আয়োজন থেকে শুরু করে গানের সব মাধ্যমে নিজেকে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছি। এ সবই করছি শ্রোতার ভালোবাসার প্রতিদান দিতে।’   

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: লক ষ ত র নত ন গ ন র জন য প রক শ

এছাড়াও পড়ুন:

ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পের বিমা দাবি নিষ্পত্তির অনুরোধ বিটিএমএর

গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানার বিমা দাবি নিষ্পত্তি করে ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ। তাদের অভিযোগ, বিমা কোম্পানিগুলো নানা ধরনের পদ্ধতিগত জটিলতা ও পলিসির শর্তের অপব্যাখ্যা করে বিমা দাবি পরিশোধে বিলম্ব করছে। অনেক ক্ষেত্রে দাঙ্গা, হাঙ্গামা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা–সংক্রান্ত ক্ষতির অজুহাতে বিমা দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যানের ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে, যা বিমাশিল্পের মূলনীতির পরিপন্থী।

আজ বুধবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে দেওয়া এক চিঠিতে বিমা দাবি পরিশোধের অনুরোধ জানান বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ। তিনি বলেন, ‘গত বছরের জুলাই-আগস্টে দেশব্যাপী সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে আমাদের অনেক সদস্যের কারখানা, গুদাম ও অন্যান্য স্থাপনা ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে। আকস্মিক এই সহিংসতায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।’

বিটিএমএ সভাপতি বলেন, সব ধরনের অপ্রত্যাশিত ক্ষতি মোকাবিলায় প্রায় প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানই যথাযথ প্রিমিয়াম পরিশোধের মাধ্যমে বিমা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে অগ্নিসহ বিভিন্ন ঝুঁকির বিপরীতে বিমা পলিসি নিয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, ঘটনার পর বছর পেরিয়ে গেলেও অধিকাংশ বিমা দাবি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।

চিঠিতে বিটিএমএ সভাপতি জানান, গত ৩ মার্চ সাধারণ বীমা করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানার উত্থাপিত বিমা দাবি নিয়ে সভা হয়। এতে বিমা দাবি নিয়ে বিভিন্ন বিমাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বিভিন্নভাবে ক্ষতির বিবরণ ও ব্যাখ্যা দেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঘটনাগুলো গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে হওয়ায় তা স্ট্যান্ডার্ড ফায়ার পলিসি (এসএফপি) বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অল রিস্ক (আইএআর) পলিসির আওতায় কোনো বিমা দাবি পরিশোধযোগ্য হবে না। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানার মালিকেরা চরম হতাশায় ভুগছেন।

বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) থেকে সব নন-লাইফ বিমা কোম্পানিকে সুস্পষ্ট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে গত বছরের জুলাই-আগস্টের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিমা দাবি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ করেছেন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ। তিনি বলেন, বিমা আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে দাবি নিষ্পত্তির বিধানটির কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা দরকার।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পের বিমা দাবি নিষ্পত্তির অনুরোধ বিটিএমএর