বিলে মাছ ধরতে গিয়ে বজ্রপাতে প্রাণ গেল দুই তরুণের
Published: 17th, May 2025 GMT
নেত্রকোনার মোহনগঞ্জে বিলে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতে দুই তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে মাঘান-শিয়াধার ইউনিয়নের পেরির বিলে এ ঘটনা ঘটে। শনিবার সকালে তাদের ঝলসানো মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এদিকে বজ্রপাতে চাঁপাইনবাবগঞ্জে এক কৃষক, জামালপুরে শিশু ও কুমিল্লায় এক মাঝি বজ্রপাতে মারা গেছেন।
মোহনগঞ্জে মৃত দু’জন হলেন মাঘান-শিয়াধার ইউনিয়নের পেরিরচর গ্রামের মৃত লেদু মিয়ার ছেলে পাপ্পু মিয়া (২৮) এবং একই গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে তানজিদ (১৮)। সম্পর্কে তারা মামাতো-ফুফাতো ভাই।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, পাপ্পু ও তানজিদ শুক্রবার দুপুরে পেরির বিলে মাছ ধরতে যান। বিকেলে বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। তারা বাড়ি না ফেরায় রাতে পরিবারের লোকজন খুঁজতে বের হন। পরে শনিবার সকালে পেরির বিলের ধারে একটি গাছের পাশে তাদের মরদেহ দেখা যায়। তাদের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পোড়ার চিহ্ন রয়েছে। দুপুরে মরদেহ উদ্ধার করে বাড়িতে নেওয়া হয়।
মোহনগঞ্জ থানার ওসি আমিনুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তাদের শরীরের কয়েক জায়গায় পোড়া চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, তারা বজ্রপাতে মারা গেছেন।
মোহনগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুয়েল আহমেদ বলেন, বজ্রপাতে মৃত দু’জনের পরিবারকে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার করে টাকা দেওয়া হয়েছে।
কুমিল্লার মেঘনা উপজেলায় বজ্রপাতে ওহাব আলী (৪৫) নামের ইঞ্জিনচালিত নৌকার মাঝির মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার রাতে উপজেলার রামপ্রসাদের চর গ্রামের একটি খালে এ ঘটনা ঘটে। ওহাব আলী ওই গ্রামের বাসিন্দা। এ ঘটনায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তাঁর ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। ওহাব আলীর তিন ছেলে ও এক কন্যাসন্তান রয়েছে।
চাঁপাইনবাবগঞ্জের গোমস্তাপুরে বজ্রপাতে শাহাবুদ্দিন (৪০) নামের এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। গত শুক্রবার রাতে উপজেলার বাঙ্গাবাড়ী ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী চুড়ইল বিলসংলগ্ন বুড়িতলায় এ ঘটনা ঘটে। মৃত শাহাবুদ্দিন ওই ইউনিয়নের সন্তোষপুর কামাত গ্রামের তাজামুল হকের ছেলে। স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার রাতে ঝড়বৃষ্টির মধ্যে ওই কৃষক পাওয়ার টিলারে ধান বোঝাই করছিলেন। এ সময় সেখানে বজ্রপাতের আঘাতে তিনি ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান।
জামালপুরের মাদারগঞ্জে বজ্রপাতে হাশেম আলী (১৫) নামের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার গুনারীতলা ইউনিয়নের ধুলোউড়ি এলাকার মণ্ডল ইটভাটাসংলগ্নে এ ঘটনা ঘটে। হাশেম আলী ঘোড়ার গাড়ির চালক ছিল। সে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বোয়াইল ইউনিয়নের ধারাবর্ষা এলাকার ওয়াহেদ আলীর ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, দুপুর ১২টার দিকে ঝড়বৃষ্টি শুরু হলে একটি আমগাছের নিচে দাঁড়ায় হাশেম। এর কিছুক্ষণ পর বজ্রপাতের আঘাতে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি)
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন হত ম হনগঞ জ শ ক রব র উপজ ল র এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনায় চলন্ত ট্রেন থেকে বগি বিচ্ছিন্ন, যাত্রীদের ভোগান্তি
নেত্রকোনায় চলন্ত ট্রেন থেকে বগি বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ শনিবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে সদর উপজেলার চল্লিশা সেতু এলাকায় আন্তনগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে এ ঘটনা ঘটে। নেত্রকোনা বড় স্টেশনের সহকারী স্টেশনমাস্টার গুলনাহার ডেইজি এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঘটনার পর চালক বিষয়টি বুঝতে না পারায় বগিগুলো রেখে ইঞ্জিনের সঙ্গে একটি বগি নিয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে চলে যান। পরে বুঝতে পেরে চালক ইঞ্জিন থামান। এরপর নেত্রকোনা বড় স্টেশনে গিয়ে একটি বগি রেখে ইঞ্জিন ঘুরিয়ে বগিগুলো টেনে আনার প্রক্রিয়া চলছে। রাত সাড়ে নয়টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ট্রেনের বগি এখনো আনা হয়নি। ট্রেনটি দীর্ঘ সময় ধরে আটকে থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন যাত্রীরা।
রেলওয়ে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কমলাপুর স্টেশন থেকে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনটি আজ বেলা ১টা ১৫ মিনিটে মোহনগঞ্জের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সন্ধ্যা সাতটার দিকে মোহনগঞ্জ স্টেশনে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু নেত্রকোনা সদর উপজেলার চল্লিশা সেতু এলাকায় পৌঁছানোর পর চলন্ত ট্রেনটির ইঞ্জিন বগি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। লোকোমাস্টার বিষয়টি বুঝতে না পারায় বগি থেকে বিচ্ছিন্ন অবস্থায় ইঞ্জিনটি নিয়ে প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে চলে যান। পরে বুঝতে পেরে ইঞ্জিন থামানো হয়। এরপর নেত্রকোনা বড় স্টেশনে পৌঁছে ইঞ্জিন ঘুরিয়ে ওই স্থানে গিয়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকা বগিগুলো নেত্রকোনা স্টেশনে টেনে নিয়ে আসার প্রক্রিয়া শুরু হয়।
সহকারী স্টেশনমাস্টার গুলনাহার ডেইজি প্রথম আলোকে বলেন, ইঞ্জিন ও বগির মাঝখানে সংযোগকারী হুক ভেঙে যাওয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে। ট্রেনটিতে ১৩টি বগি আছে। বগিগুলোতে প্রায় দেড় হাজার যাত্রী। তবে কেউ হতাহত হননি। তিনি জানান, বিচ্ছিন্ন বগিগুলো ইঞ্জিনের সঙ্গে জোড়া লাগানোর চেষ্টা চলছে। ট্রেনটি আটকে থাকায় ময়মনসিংহ-মোহনগঞ্জ রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ আছে।