সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলছে: প্রেস কাউন্সিল চেয়ারম্যান
Published: 18th, May 2025 GMT
বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান বিচারপতি এ কে এম আব্দুল হাকিম বলেছেন, সাংবাদিকদের মর্যাদা নিশ্চিত করা না গেলে গণমাধ্যমকে কার্যত রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভে পরিণত করা যাবে না। এ জন্য স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিবেশ নিশ্চিত করতে সাংবাদিকদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা দরকার। এসব বিবেচনা করেই সাংবাদিকদের সুরক্ষায় আইন প্রণয়নের প্রক্রিয়া চলছে।
আজ রোববার দুপুরে বরিশাল সার্কিট হাউস মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যমে অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধ এবং বস্তুনিষ্ঠ পরিবেশন’ শীর্ষক প্রশিক্ষণ কর্মশালায় এ কে এম আব্দুল হাকিম এ কথাগুলো বলেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো.
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি এ কে এম আব্দুল হাকিম বলেন, সাংবাদিকতার পেশাকে অবশ্যই দলীয় রাজনীতির ঊর্ধ্বে স্থান দিতে হবে। গণমাধ্যমকে অবশ্যই নিজস্ব মতামত প্রচার-প্রকাশকে বর্জন করতে হবে। এটা থাকলে গণমাধ্যম গ্রহণযোগ্যতা পায় না। নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গি গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতাকে প্রতিষ্ঠিত করে, মানুষের মনে আস্থা তৈরি করে। এর মধ্য দিয়ে একটি দেশের গণমাধ্যম মানুষের কণ্ঠস্বরে পরিণত হয়।
গণমাধ্যমে তথ্য প্রচার-প্রকাশে ভুলভ্রান্তির বিষয়ে প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যান এ কে এম আব্দুল হাকিম বলেন, ‘ভুল সংশোধন, দুঃখ প্রকাশ করার সংস্কৃতি আমাদের গণমাধ্যমগুলোকে গড়ে তুলতে হবে। এতে গণমাধ্যম আরও শক্তিশালী হয়, গ্রহণযোগ্য হয় এবং সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি সন্তুষ্ট হয়। এটাই গণমাধ্যমের দায়িত্বশীলতা।’ তিনি আরও বলেন, কেবল অভিযুক্ত হলেই কেউ অপরাধী হয়ে যান না, বিচারে প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কাউকে অপরাধী হিসেবে গণ্য করা যায় না। সাংবাদিকদের অবশ্যই অভিযুক্ত ও অপরাধীর মধ্যে পার্থক্য বোঝা উচিত। মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধ করতে হবে এবং আইন-আদালতের প্রতি সম্মান বজায় রাখতে হবে। মানহানিকর বিষয় প্রচারে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে, তা না হলে সমাজে অনাকাঙ্ক্ষিত সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। কোনো সাংবাদিককে সংবাদের সূত্র প্রকাশে বাধ্য করা যাবে না—এটাই একজন সাংবাদিকের অন্যতম সুরক্ষা। তবে তথ্য যেন নির্ভরযোগ্য, সময়োপযোগী ও বস্তুনিষ্ঠ হয়, এটা নিশ্চিত করা জরুরি।
দেশের সাংবাদিক সমাজে বিভাজনের বিষয়ে এ কে এম আব্দুল হাকিম বলেন, ‘দেশের যেখানেই যাচ্ছি, সেখানেই একাধিক প্রেসক্লাব দেখছি। সম্প্রতি সিলেটে গিয়ে জানতে পারি, সেখানে আটটি প্রেসক্লাব রয়েছে। মৌলভীবাজারে সাতটি প্রেসক্লাবের তথ্য পেয়েছি। অথচ প্রেসক্লাব হলো একটি সামাজিক সংগঠন, যেখানে সাংবাদিকেরা মিলিত হবেন, মতবিনিময় করবেন, সহমর্মিতা ও সৌহার্দ্য গড়ে তুলবেন। কিন্তু অতিরিক্ত বিভাজন পেশাদারিকে আঘাত করে। সাংবাদিকদের উচিত পেশার প্রতি মনোযোগী হওয়া এবং নিজ দক্ষতা ও জ্ঞান বৃদ্ধিতে মনোনিবেশ করা।’
এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে এ কে এম আব্দুল হাকিম বলেন, অপসাংবাদিকতা বন্ধে সাংবাদিকতা করতে পরীক্ষার মাধ্যমে সনদ প্রদানের জন্য আইন করার ব্যাপারে প্রেস কাউন্সিলে একটি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। এ ছাড়া প্রেস কাউন্সিল গণমাধ্যমের কোনো সংবাদে সাংবাদিকতার মান ও নীতির বিষয়ে ব্যত্যয় ঘটলে সে ব্যাপারে যাতে স্বপ্রণোদিত হয়ে ওই গণমাধ্যম বা সাংবাদিককে জবাবদিহি করতে পারে, সে ক্ষমতাও ওই আইনে থাকবে বলে উল্লেখ করেন।
কর্মশালায় প্রেস কাউন্সিলের সচিব (উপসচিব) আবদুস সবুর রিসোর্সপারসন হিসেবে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারে প্রেস কাউন্সিল প্রণীত আচরণবিধি প্রতিপালনের গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করেন। এতে বরিশালের ৪০ জন সাংবাদিক অংশ নেন।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প র স ক উন স ল র প রক স রক ষ ব দ কত প রক শ
এছাড়াও পড়ুন:
বাকৃবিতে ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরে ৭.৭১ শতাংশ বাজেট বৃদ্ধি
বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় (বাকৃবি) ২০২৫-২০২৬ অর্থবছরের জন্য ৩৮৮ কোটি ২৯ লাখ টাকার বাজেট অনুমোদন হয়েছে। এ বছরের বাজেট গত বছরের তুলনায় ৭.৭১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
বুধবার (২ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ ও প্রকাশনা দফতরের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য ৪৫৮ কোটি ২৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকার একটি প্রস্তাবিত বাজেট প্রণয়ন করেছিল। তবে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পক্ষ থেকে ৩৮৮ কোটি ২৯ লাখ টাকার সিলিং নির্ধারণ করে দেওয়ার পর সে অনুযায়ী বাজেট পুনর্গঠন করে সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
খুবিতে নবীনদের বরণে ব্যতিক্রমধর্মী আয়োজন
নকল সরবরাহের সময় ছাত্রদলের সভাপতি গ্রেপ্তার
মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম বলেন, “গত ৩০ জুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. একে ফজলুল হক ভূঁইয়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় কোষাধ্যক্ষ (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. হুমায়ুন কবির ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট এবং ২০২৫-২৬ অর্থবছরের মূল বাজেট উপস্থাপন করেন।”
তিনি বলেন, “২০২৫-২৬ অর্থবছরের এই বাজেটে ইউজিসির বরাদ্দ থেকে ৩৭৪ কোটি ৯৯ লাখ টাকা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আয়ের উৎস থেকে ১৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা আয় হিসেবে ধরা হয়েছে।”
এ বাজেটে বেতন-ভাতা ও বিশেষ সুবিধা বাবদ ১৮৩ কোটি ৬৬ লাখ টাকা, সাধারণ পণ্য ও সেবা খাতে ৫৩ কোটি ৫৮ লাখ টাকা, মেরামত ও সংরক্ষণ বাবদ ৯ কোটি ১৯ লাখ টাকা, পেনশন ও অবসর সুবিধা বাবদ ১১৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা, গবেষণার জন্য ১৫ কোটি ৩৩ লাখ টাকা, প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা খাতে ৭৫ লাখ টাকা এবং অন্যান্য ও মূলধন অনুদানসহ বিভিন্ন খাতে সর্বমোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৮৮ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
এছাড়াও ২০২৪-২৫ অর্থবছরের সংশোধিত বাজেট অনুযায়ী ৩৭৯ কোটি ১৮ লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ের অনুমোদন দেওয়া হয়।
বাজেট আলোচনায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বাস্তব চাহিদার ভিত্তিতে বরাদ্দ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে। এ লক্ষ্যে পরবর্তীতে সংশোধিত বাজেট প্রণয়নের সময় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি বরাদ্দ পুনর্বিন্যাসের অনুরোধ জানানো হয়।
ঢাকা/লিখন/মেহেদী