কালিয়াকৈরে একটি আঞ্চলিক সড়কের পাশে দীর্ঘদিন ধরে ময়লা ফেলছেন স্থানীয় লোকজন। জমে থাকা আবর্জনার স্তূপ থেকে ছড়ানো দুর্গন্ধে আশপাশের কয়েকটি কারখানার কর্মীরা অতিষ্ঠ। পথচারীদেরও চলাচল করতে হয় নাক চেপে। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, ভাগাড়টি সেখান থেকে সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে কয়েক দফা পৌরসভাকে তাগদা দেওয়া হলেও তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি।
শনিবার সরেজমিন দেখা গেছে, চন্দ্রা ত্রিমোড়ের পূর্ব পাশে সিপি গেট থেকে একটি সরু সড়ক জোড়া পাম্প ফুটবল খেলার মাঠ পর্যন্ত গেছে। ওই সড়কের দু’পাশেই ময়লার বিশাল বিশাল স্তূপ। স্থানীয় বাসিন্দা নাজমা সারোয়ার এদিন দুই সন্তানকে নিয়ে স্কুলে যাচ্ছিলেন। নাকে কাপড় চেপে ওই জায়গাটি পার হচ্ছিলেন তারা। নাজমা বলেন, ‘প্রতিদিন এই সড়কের পাশে ময়লা ফেলছে পৌর কর্তৃপক্ষ। আশপাশে যারা আমরা বসবাস করি, তারা দুর্গন্ধের কারণে টিকতে পারছি না। আমাদের সন্তানরাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এখন পাশের গজারি বাগানেও ময়লা ফেলছে। বাসাবাড়িতে ২৪ ঘণ্টাই দুর্গন্ধ থেকে। অনেকে এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।’
জোড়া পাম্প উত্তরপাড়ার মাহমুদুল আলম বলেন, ‘অনেকবার পৌর কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তারা কোনো উদ্যোগ নেয়নি।’
জায়গাটি পড়েছে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডে। এলাকাবাসী জানাস, কয়েক বছর আগে স্থানীয় কাউন্সিলর মো.
দুই ঝুট ব্যবসায়ী বলেন, তাদের গুদামে ৫০-৬০ নারী-পুরুষ শ্রমিক কাজ করেন। ময়লার দুর্গন্ধের কারণে শ্রমিকরা কাজে আসতে চান না।
একই এলাকায় মুরগি-মাছের খাবার তৈরির প্রতিষ্ঠান সিপির কারখানা। প্রতিষ্ঠানের জেনারেল ম্যানেজার মো. এনামুল করিম বলেন, দুর্গন্ধে কর্মীরা কাজ করতে পারছেন না। পৌরসভাকে ভাগাড়টি সরিয়ে নিতে লিখিত ও মৌখিকভাবে বলা হয়েছে। কিন্তু তারা সরানোর ব্যবস্থা করেনি। কিছুদিন আগে তাই জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত দিয়েছেন।
এলাকাবাসীর মানববন্ধন
ভাগাড়টি সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে গতকাল রোববার সকালে মানববন্ধন পালিত হয়। চন্দ্রার পলানপাড়া এলাকায় ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের উত্তর পাশের এই কর্মসূচিতে কয়েকশ লোক অংশ নেন।
বক্তারা বলেন, দুর্গন্ধের কারণে এলাকাবাসী বাসায় পর্যন্ত টিকতে পারছেন না। আর বারবার দাবি জানানো হলেও পৌর কর্তৃপক্ষ বা জেলা প্রশাসন কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।
এ বিষয়ে পৌরসভার ৭ নম্বর ওয়ার্ডের প্রশাসকের দায়িত্বে থাকা উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বলেন, পৌরসভার নিজস্ব ডাম্প স্টেশন না থাকায় এ সমস্যা হচ্ছে। ওই এলাকায় ময়লা ফেলতে নিষেধ করা হয়েছে। শিগগিরই সমস্যার সমাধানের আশা করছেন।
পৌরসভার নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদ হাসানের ভাষ্য, পৌরসভার নিজস্ব ডাম্প স্টেশন নেই। ৯টি ওয়ার্ডের ময়লা এক জায়গায় রাখার পর ট্রাক দিয়ে সরিয়ে নেওয়া হয়। জেলা প্রশাসকের কাছে জমি বরাদ্দ চেয়েছেন, পেয়ে গেলে এই সমস্যা থাকবে না।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ময়ল র স ত প এল ক ব স প রসভ র সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
রাবিতে শতভাগ আবাসনসহ রাকসুর পূর্ণাঙ্গ তফসিল দাবি
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন নিশ্চিত, রাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণাসহ বিভিন্ন দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে।
রবিবার (১৮ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্যারিস রোডে এ মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন রাবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।
এ সময় তারা বলেন, প্রতিষ্ঠার ৭২ বছর কেটে গেলেও নিশ্চিত হয়নি শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন ব্যাবস্থা। এছাড়া ২৭ ফেব্রুয়ারী রাকসু নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা হলেও সে অনুযায়ী কাজ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। যতদিন পর্যন্ত রাকসুর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো।
আরো পড়ুন:
সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে ইবিতে বিক্ষোভ
সাম্য হত্যা: শাহবাগ থানার সামনে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সমন্বয়ক ফাহিম রেজা বলেন, “জুলাই আন্দোলনের ৯ দফার অন্যতম একটি প্রতিশ্রুতি হলো ছাত্র সংসদ বাস্তবায়ন। তার সঙ্গে আরেকটি প্রতিশ্রুতি ছিল, লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতির মূল উৎপাটন করা। আমরা মনে করি, কার্যকর রাকসু গঠনের মাধ্যমে লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো সম্ভব। কিন্তু যারা এ লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র রাজনীতিকে ফিরিয়ে আনতে চান, তারাই এ ছাত্র সংসদ নির্বাচনকে বাধাগ্রস্ত করছে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন রাকসু নিয়ে একটা রোডম্যাপ দিয়েছিলেন। কিন্তু আমরা এখনো তা বাস্তবায়ন হতে দেখিনি। তিনি যে নির্বাচন কমিশন গঠন করে দিয়েছিলেন, আমরা মনে করছি সেটা একটা হাটুভাঙ্গা নির্বাচন কমিশন। কারণ তারা কোনো খসড়া ভোটার তালিকা নিশ্চিত করতে পারেনি। অনতিবিলম্বে খসড়া ভোটার তালিকা দিতে হবে। যতদিন না দেওয়া হবে, ততদিন এ আন্দোলন চলবে।”
ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী মো. তাজুল ইসলাম বলেন, “অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে জানাতে হয়, আমরা যে রাকসু নির্বাচনের দাবি জানিয়েছিলাম, তার কোনো কিছু করা হয়নি। আমাদের সুষ্ঠু ক্যাম্পাসের জন্য রাকসু নির্বাচন ও আবাসিকতা নিশ্চিত করা খুব প্রয়োজন। কিন্তু তার কোন কিছু করা হয়নি। আমরা দেখেছি ফ্যাসিবাদের সময় যেসব শিক্ষক-কর্মচারী ছিল, তারা সেখানেই বহাল থেকে আবার ছাত্রলীগের মাধ্যমে ক্যাম্পাসের বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চায়। শিক্ষার্থীদের জন্য শান্তিপুর্ণ ক্যাম্পাস পরিচালনা ও পুর্ন আবাসিকতা নিশ্চিত করতে হবে।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজিব বলেন, “রাকসু আমাদের জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের ৯ দফার অন্যতম একটি দাবি। রাকসু নির্বাচন নিয়ে প্রশাসনের যে তৎপরতা প্রথমদিকে লক্ষ্য করেছি, নির্বাচন কমিটি গঠন করার পর থেকে তা ততটাই কমে গেছে। গত মাসে রাকসু নির্বাচন কমিশন গঠন করা কথা থাকলেও তারা একটি সভাও করতে পারেনি। এর চেয়ে অথর্ব কমিটি আর কী হতে পারে বলে মনে হয়?”
তিনি আরো বলেন, “কতদিনের মধ্যে শিক্ষার্থীদের শতভাগ আবাসন দিতে পারবে, তা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের একটি রোডম্যাপ দিতে হবে। যতদিন শতভাগ আবাসন শিক্ষার্থীদের না দিতে পারবে, ততদিন প্রশাসনকে ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা প্রদান করতে হবে।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী