বর্জ্য অব্যবস্থাপনায় নদীটি কি হারিয়ে যাবে
Published: 20th, May 2025 GMT
কুমিল্লার লালমাই উপজেলার পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতির সবচেয়ে বড় ঐতিহ্য ছিল ডাকাতিয়া নদী। বাগমারা বাজারের পাশে বয়ে চলা এই নদী হয়ে গেছে এখন ময়লা-আবর্জনার বিশাল ভাগাড়। সেখানে প্রতিনিয়ত ফেলা হচ্ছে বাজারের ময়লা, বাসাবাড়ির আবর্জনা, এমনকি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বর্জ্যও। এর ফলে নদীটি শুধু হুমকির মুখেই পড়েনি, বরং বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে আশপাশের পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যও।
প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যাচ্ছে, বাগমারা বাজারের উত্তরে কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের সেতুর কাছে ময়লা-আবর্জনা বিশাল স্তূপ হয়ে আছে। দুর্গন্ধে সেখানে দাঁড়ানোও কষ্টকর। বাজারের কয়েক শ দোকান, শতাধিক বসতবাড়ি ও একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ময়লা-আবর্জনা নিয়মিতভাবে নদীতে ফেলা হয়। ১০ বছর ধরে নিয়মিতভাবে নদীর আধা কিলোমিটার এলাকায় এসব ময়লা ও বর্জ্য ফেলা হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা প্রতিদিন দুর্গন্ধ ও স্বাস্থ্যঝুঁকির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। এটি শুধু পরিবেশগত সংকট নয়, সামাজিক অবহেলার একটি নির্মম চিত্রও।
উদ্বেগজনক বিষয় হলো, এ সমস্যার দায় কেউ স্বীকার করতে রাজি নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) বলছে, এটা উপজেলা প্রশাসনের দায়িত্ব; ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) বলছে জায়গার অভাব আর পরিবেশ অধিদপ্তর বলছে দায় পাউবো ও স্থানীয় প্রশাসনের। এই দোষারোপের রাজনীতির মধ্যে যেটি অনুপস্থিত, তা হলো একটি সমন্বিত ও কার্যকর উদ্যোগ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, ‘আমরা বাধ্য হয়ে নদী ও রেললাইনের পাশে ময়লা ফেলছি। কারণ, আমাদের ময়লা ফেলার জন্য কোনো জায়গার ব্যবস্থা করে দিতে পারেনি বাজার কমিটি, স্থানীয় ইউপি ও উপজেলা প্রশাসন।’
বাজার কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, চার বছরের জন্য ময়লা ফেলতে একটি জায়গা ভাড়ার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে—কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়, এই উদ্যোগ নিতেই–বা এত দেরি হলো কেন? এরপর আরও একটি প্রশ্ন চলে আসে, চার বছরের জন্য একটি অস্থায়ী ব্যবস্থা দিয়ে কীভাবে একটি দীর্ঘমেয়াদি পরিবেশগত সমস্যার সমাধান হবে?
এ ক্ষেত্রে সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরসমূহ, বিশেষ করে উপজেলা প্রশাসন, পাউবো, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ইউপিকে দ্রুত ও সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। এই এলাকায় বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নির্ধারিত জায়গা, ডাস্টবিন ও বর্জ্য অপসারণের কার্যকর ব্যবস্থা চালু করতে হবে। স্থানীয় জনগণকে সচেতন করতে হবে এবং নিয়ম ভাঙলে জরিমানা বা শাস্তির বিধান কার্যকর করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার আওতায় নদী পুনঃখনন, নদীপাড়ে সবুজ বেষ্টনী গঠন ও পরিবেশবান্ধব বাজার অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে।
আমরা আশা করব, ডাকাতিয়া নদীর পরিবেশ-ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষই মনোযোগী হবে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পর ব শ ব যবস থ র জন য বর জ য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ইসরায়েলের নতুন হামলায় ইরানের আইআরজিসির গোয়েন্দা প্রধান নিহত
ইরানের রাজধানী তেহরানে এবং আশপাশের এলাকায় অবস্থিত সামরিক স্থাপনাগুলোতে নতুন করে ব্যাপক বিমান হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
স্থানীয় সময় রবিবার (১৫ জুন) বিকেলে চালানো এ হামলায় ইরানের ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কর্পসের (আইআরজিসি) গোয়েন্দা প্রধান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ কাজেমি এবং তার ডেপুটি হাসান মোহাকিক নিহত হয়েছেন।
রবিবার রাতে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত টেলিভিশন ও সংবাদ সংস্থাগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলে ৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়ল ইরান, তেল আবিব ও হাইফাতে সরাসরি আঘাত
ইরানে আবারো হামলা চালাচ্ছে ইসরায়েল
ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম আরো জানিয়েছে, তেহরানে ইসরায়েলের নতুন হামলায় আইআরজিসির তৃতীয় ঊর্ধ্বতন গোয়েন্দা কর্মকর্তা মোহসেন বাঘেরিও নিহত হয়েছেন।
এর আগে, শুক্রবার (১৩ জুন) ভোরে ইরানের রাজধানী তেহরানে ইসরায়েলের প্রথম হামলায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরি, আইআরজিসির কমান্ডার হোসেইন সালামিসহ বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা এবং অন্তত ছয় জন পরমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছিল ইরান।
রবিবার ইরানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুক্রবার ও শনিবার ইরানজুড়ে ইসরায়েলি হামলায় ১২৮ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন প্রায় ৯০০ জন। হতাহতদের মধ্যে কমপক্ষে ৪০ জন নারী এবং বেশ কয়েকজন শিশু রয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ