শারজাহর ছোট মাঠে বাংলাদেশের দেওয়া ২০৫ রানের বিশাল লক্ষ্যকে তাড়া করা সহজ কাজ ছিল না। কিন্তু আরব আমিরাত দেখিয়ে দিল, বিশ্বাস থাকলে অসম্ভবও সম্ভব। শুরুটা যিনি করে দিয়েছিলেন, তিনি অধিনায়ক মুহাম্মদ ওয়াসিম। ৪২ বলে ৮২ রানের ঝড়ো ইনিংসে ম্যাচের মোড় ঘুরে যায় তার হাত ধরেই।

তবে ওয়াসিম যখন আউট হন, তখনও জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ৩১ বলে ৫৮ রান। সেই অসম কাজটিই সেরে ফেলেন দলটির নিচের সারির ব্যাটাররা, যাদের দাপুটে ব্যাটিংয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশকে হারানোর স্বাদ পেল আমিরাত।

ম্যাচ শেষে ওয়াসিম, বলেন, ‘আমি ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। বাংলাদেশকে হারিয়ে দারুণ লাগছে। আমি সবাইকে বিশ্বাস দিচ্ছিলাম, এই রান তাড়া সম্ভব কারণ আমরা এই কন্ডিশন চিনি।’

পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের মিঁয়া চান্নু শহরে জন্ম নেওয়া ওয়াসিমের ক্রিকেট যাত্রা শুরু হয়েছিল টেপ টেনিস দিয়ে। পরবর্তীতে বুরেওয়ালার রশিদ লতিফ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ নেন। তবে পাকিস্তানে জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া কঠিন জেনেই পাড়ি জমান আরব আমিরাতে। সেখানে এক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তির মাধ্যমে শুরু হয় তার প্রবাসজীবন ও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার।

২০২১ সালে টি-টোয়েন্টি অভিষেকের পর থেকে তিনি হয়ে ওঠেন দলের মেরুদণ্ড। গত চার বছরে ওয়াসিমের মতো ধারাবাহিক পারফরমার খুব কমই আছে। ৭১ ইনিংসে করেছেন ২ হাজার ৬৫১ রান, স্ট্রাইক রেট ১৫৬.

১২, সঙ্গে ৩টি সেঞ্চুরি। এই সময়ে ভারতের সূর্যকুমার যাদবও তার থেকে পিছিয়ে, রান ২ হাজার ৪৪৩, ইনিংস ৭৬টি।

আত্মবিশ্বাসে ভরপুর ওয়াসিম এবার বাংলাদেশকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘আমরা শেষ ম্যাচে নিজেদের সেরাটা খেলব এবং লক্ষ্য থাকবে সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জেতার।’

বাংলাদেশের আমিরাত সফরে এবার দুটি টি-টোয়েন্টিই ছিল। পাকিস্তান সফরের আগ মুহূর্তে খরচ বাঁচাতে বিসিবি প্রস্তাব দেয় একটি বাড়তি ম্যাচ আয়োজনের, যাতে সাড়া দেয় আমিরাত ক্রিকেট বোর্ড। সেই ম্যাচই এখন সিরিজ নির্ধারণী হয়ে দাঁড়িয়েছে। ২১ মে, বুধবার শারজাহতেই অনুষ্ঠিত হবে সেই বহুল প্রতীক্ষিত ফাইনাল ম্যাচ।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আম র ত

এছাড়াও পড়ুন:

ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ক্ষমা চাওয়ার পরই খেলতে রাজি হয়েছিল পাকিস্তান

সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার ম্যাচে টসের আগ পর্যন্ত দারুণ নাটকীয়তায় ঘেরা ছিল পাকিস্তানের ড্রেসিং রুম। ম্যাচ রেফারি অ্যান্ডি পাইক্রফ্টকে দায়িত্ব থেকে সরানোর দাবি তোলে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি)। তবে আইসিসি সে দাবি আমলে নেয়নি। শেষ পর্যন্ত নিজের ভুল স্বীকার করে পাকিস্তান অধিনায়ক সালমান আলী আগা ও দলের ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান পাইক্রফ্ট। এরপরই মাঠে নামতে রাজি হয় পাকিস্তান দল।

ঘটনার সূত্রপাত ১৪ সেপ্টেম্বরের ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ থেকে। টসের সময় দুই অধিনায়কের করমর্দন হয়নি। আরও বড় বিতর্ক তৈরি হয় ম্যাচ শেষে। জয়ী ভারতের ক্রিকেটাররা করমর্দন এড়িয়ে দ্রুত ড্রেসিং রুমে ফিরে যান। সালমান আলী আগার নেতৃত্বে পাকিস্তানের খেলোয়াড়রা দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করলেও সূর্যকুমার যাদব, শিভাম দুবেসহ পুরো ভারতীয় দল সেই শিষ্টাচার মানেনি।

আরো পড়ুন:

আজ মুখোমুখি শ্রীলঙ্কা-আফগানিস্তান, যে ম্যাচে ঝুলছে বাংলাদেশের ভাগ্য

আমিরাতকে হারিয়ে সুপার ফোরে পাকিস্তান

এমন ঘটনার প্রতিবাদে পাকিস্তান অধিনায়ক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান বর্জন করেন। পরে আইসিসির কাছে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ জানায় পিসিবি। তাদের দাবি ছিল, ম্যাচ রেফারি পাইক্রফ্ট ইচ্ছাকৃতভাবেই দুই অধিনায়কের হাত মেলানো আটকান, যা আইসিসির আচরণবিধি ও ক্রিকেটের স্পিরিটের পরিপন্থী।

যদিও আইসিসির ব্যাখ্যা ছিল ভিন্ন। তারা জানায়, এসিসির কর্মকর্তাদের নির্দেশেই কাজ করেছেন পাইক্রফ্ট। কিন্তু পাকিস্তান নড়েচড়ে বসে। এমনকি জানিয়ে দেয়, পাইক্রফ্ট দায়িত্বে থাকলে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে মাঠে নামবে না তারা। এই হুমকির কারণে ম্যাচের শুরুর সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় আয়োজকরা।

লাহোরে রমিজ রাজা, নাজাম শেঠিসহ শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন পিসিবি চেয়ারম্যান মহসিন নাকভি। পরে সমঝোতার পথ খোঁজা হয়। অবশেষে পাইক্রফ্ট স্বীকার করেন, ভুল বোঝাবুঝির কারণেই পরিস্থিতি এতদূর গড়ায়, এবং তিনি পাকিস্তান অধিনায়ক ও ম্যানেজারের কাছে ক্ষমা চান। তাতেই সন্তুষ্ট হয়ে মাঠে নামার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান দল।

বুধবার রাতে ‘এ’ গ্রুপে নিজেদের সেই শেষ ম্যাচে আরব আমিরাতকে ৪১ রানের ব্যবধানে হারিয়ে সুপার ফোরে ভারতের সঙ্গী হয় সালমান-শাহীনরা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তান সংগ্রহ করে ৯ উইকেটে ১৪৯ রান। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ১৭.৪ ওভারে ১০৫ রানেই গুটিয়ে যায় আরব আমিরাত।

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ