কাজে অবহেলার দায়ে প্রত্যাহার হয়ে পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত থাকা সিরাজগঞ্জের সেই দুই পুলিশ কর্মকর্তা আবারও ‘দায়িত্ব’ ফিরে পেয়েছেন। জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয় থেকে এক আদেশে জনস্বার্থে তাদের পদায়ন করা হয়েছে। তাদের মধ্যে পরিদর্শক মো. রওশন ইয়াজদানী সদর কোর্টে দায়িত্ব পেয়েছেন। আর যমুনা সেতু পশ্চিম থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান। গত ১৮ মে পুলিশ সুপার মো.

ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত পত্রে ‘জনস্বার্থে’ তাদের পদায়ন করা হলেও বিষয়টি আজ মঙ্গলবার জানাজানি হয়।

এর আগে রায়গঞ্জ থানার ওসির পদ থেকে মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান ও এনায়েতপুর থানার ওসির পদ থেকে মো. রওশন ইয়াজদানীকে প্রত্যাহার করে সিরাজগঞ্জ পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়। সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে ‘আরাফাত-শরীফের আলোচিত ব্যক্তিগত বন্দিশালায়’ দুই জন গত ছয় মাস ধরে জিম্মি থাকা ও উদ্ধারের ঘটনায় দায়িত্ব অবহেলার দায়ে মোহাম্মদ আসাদুজ্জামানকে রায়গঞ্জ থানার ওসির পদ থেকে গত ৫ মে প্রত্যাহার করা হয়। অপরদিকে, এনায়েতপুরে এক তাঁত মালিকের ফ্যাক্টরিতে ডাকাতির ঘটনায় মামলা না নেওয়ার অপরাধে একই আদেশে রওশন ইয়াজদানীকেও প্রত্যাহার করা হয়।

এদিকে, নতুন আদেশে আরও ছয় পুলিশ কর্মকর্তাকে পদায়ন ও বদলি করা হয়েছে। সদর কোর্টের পরিদর্শক আব্দুল হাইকে কোর্ট ইন্সপেক্টর পদে, কামারখন্দ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) আব্দুল লতিফকে একই থানার ওসির পদে, চৌহালী থানার ওসি শাখাওয়াত হোসেনকে কাজিপুরের যমুনার চরের দুর্গম নাটুয়ারপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক পদে, রায়গঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) শফিকুল ইসলামকে জেলার ডিএসবিতে, ডিএসবির ইন্সপেক্টর আহসানুজ্জামানকে সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) পদে, সদর থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) কে. এম. মাসুদ রানাকে রায়গঞ্জ থানার ওসি এবং বেলকুচি থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. আব্দুল বারিককে চৌহালীর ওসির পদে পদায়ন করা হয়েছে। 

এদিকে, জেলা পুলিশে এত রদবদল হলেও সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশের আলোচিত ওসি মো. একরামুল হোসাইন এখনো স্বপদে বহাল রয়েছেন। সিরাজগঞ্জ শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে শিক্ষক রায়হান শরীফ শ্রেণিকক্ষে তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত হোসেন তমালকে গত বছরের ৪ মার্চ গুলি করেন। ওই ঘটনায় শিক্ষক রায়হানকে দু’টি পিস্তল, ১২টি জাপানি ও বার্মিজ চাকু এবং ৭৮ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। গ্রেপ্তার হয়ে তিনি আদালতে ১৬১ ধারায় জবানবন্দী দেন। তাতে তিনি উল্লেখ করেন, ২০১১-১২ বর্ষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে পড়া  অবস্থায় ছাত্রলীগ নেতা সাদুজ্জামান উপলের মাধ্যমে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার নওদাপাড়ার অস্ত্র ব্যবসায়ী এসএস আল হোসাইন সোহাগের কাছ থেকে এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ কেনেন। সেই অস্ত্র ব্যবসায়ীকে বাদ দিয়ে শুধু শিক্ষক রায়হানকে অভিযুক্ত করে গত ৩১ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন ডিবির ওসি একরামুল।

এ প্রসঙ্গে সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. ফারুক হোসেনে নিজ অফিস কক্ষে সমকালকে বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় সোহাগকে অব্যাহতি দিয়েছে ডিবি। তারপরেও বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স র জগঞ জ প ল শ কর মকর ত র য়গঞ জ থ ন র স র জগঞ জ তদন ত

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড়ে অনলাইন জুয়ার কারবারে সেনা অভিযান, মূল হোতা আটক

পঞ্চগড়ে অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে একটি বাড়িতে অভিযান চালিয়ে আব্দুস সাত্তার (২৫) নামে এক তরুণকে আটক করেছে সেনাবাহিনী।

আটক আব্দুস সাত্তার পঞ্চগড় সদর উপজেলার শিংরোড ভুজারিপাড়া এলাকার আশরাফ আলীর ছেলে।

বুধবার (২ জুলাই) দিবাগত রাত ২টায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জেলা শহরের রওশনাবাগ এলাকায় সেনাবাহিনীর সদস্যরা অভিযান পরিচালনা করেন।

আরো পড়ুন:

সেনা অভিযানে কেএনএ’র ২ সদস্য নিহত, বিপুল অস্ত্র উদ্ধার

গুমে সেনাসদস্যদের সংশ্লিষ্টতা থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে: সেনাসদর

অভিযানে অনলাইন জুয়ায় ব্যবহৃত ১৪টি মোবাইল এবং ১টি ল্যাপটপ জব্দ করা হয়। এছাড়া আটক আব্দুস সাত্তারের বিভিন্ন আইডিতে ১২ লাখ টাকার সন্ধান পান সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাকে ১ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আরডিসি মিজানুর রহমান।

সেনাবাহিনী সূত্রে জানা যায়, আব্দুস সাত্তার স্ত্রী-সন্তান ও শ্যালক নিয়ে জেলা শহরের রওশনাবাগ এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাড়িতে ভাড়ায় থাকতেন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হতেন না সাত্তারের পরিবারের কেউ। গত ৫ বছর ধরে এই অনলাইন জুয়ার সঙ্গে তিনি জড়িত। জুয়া থেকে প্রতি মাসে তার আয় হত অন্তত ১ লাখ টাকা।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও পঞ্চগড় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের আরডিসি মিজানুর রহমান বলেন, “প্রকাশ্য জুয়া আইন ১৯৭৪ এর ৪ ধারায় আব্দুর সাত্তার নামের এই ব্যক্তিকে বিনাশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।”

পঞ্চগড় সেনা ক্যাম্পের কমান্ডার মেজর মেহেদী পিয়াস জয় বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারি, জেলা শহরের রওশনাবাগ এলাকায় একটি বাড়িতে অনলাইন জুয়ার আসর বসে। আমরা অভিযান চালিয়ে একজনকে হাতেনাতে আটক করেছি। পরে ভ্রাম্যমাণ আদালতে তার সাজা হয়েছে।”

ঢাকা/নাঈম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পঞ্চগড়ে অনলাইন জুয়ার কারবারে সেনা অভিযান, মূল হোতা আটক