নরওয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী স্টাইন রেনাতে হাইহেইমের সঙ্গে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন বৈঠক করেছেন।

মঙ্গলবার (২০ মে) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে এই বৈঠক হয়।

বৈঠকের বিষয়ে ঢাকার নরওয়ের দূতাবাস জানায়, বৈঠকে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক উত্তরণের জন্য নরওয়ের জোরালো সমর্থন, যেখানে যুব ও মহিলাদের ভূমিকা বৃদ্ধি পাবে।

আরো পড়ুন:

পাকিস্তান-বাংলাদেশের তিন ম্যাচের সিরিজ, সব ম্যাচ লাহোরে

শ্রীলঙ্কায় ওয়ালটন ব্র্যান্ডের যাত্রা শুরু

বৈঠকে ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার আগ্রাসন যুদ্ধ ও ফিলিস্তিনের মানবিক পরিস্থিতি নিয়েও তারা আলোচনা করেন।

মঙ্গলবার দুই দিনের সফরে ঢাকা এসেছেন নরওয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী স্টাইন রেনাতে হাইহেইম।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, নরওয়ের আন্তর্জাতিক উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী দুই দিনের বাংলাদেশ সফরকালে কক্সবাজারে রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনে যাবেন।

ঢাকা সফরকালে তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড.

মুহাম্মদ ইউনূস, প্রধান উপদেষ্টার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও রোহিঙ্গা সমস্যা ও অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়াবলি–সংক্রান্ত বিশেষ প্রতিনিধি ড. খলিলুর রহমান ও পরিবেশ বন ও জলবায়ু এবং পানিসম্পদ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট উপদ ষ ট নরওয় র মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মধ্যপ্রাচ্য সফরকালে ট্রাম্প গাজার কথা ভুলে গেছেন?

ডোনাল্ড ট্রাম্প এক উপসাগরীয় রাজধানী থেকে অন্য উপসাগরীয় রাজধানীতে ছুটে বেড়াচ্ছেন। এ সময় তিনি কিছু আকর্ষণীয় চুক্তিতে স্বাক্ষর করছেন, সিরিয়ার নতুন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দেখা করেছেন, এমনকি ইরানের পারমাণবিক ইস্যুতে অগ্রগতিও ঘটিয়েছেন বলে মনে হচ্ছে। যখন এসব ঘটনা ঘটছে, তখন মনে হচ্ছে গাজার যুদ্ধকে মার্কিন কূটনীতির বাইরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। একদিকে জিম্মিদের মুক্তি নিয়ে এ সপ্তাহে কাতারে মার্কিন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে, অন্যদিকে এ সময়কে ইসরায়েল হামাস নেতা মোহাম্মদ সিনওয়ারের ওপর একটি ধ্বংসাত্মক হত্যাচেষ্টা চালানোর উপযুক্ত বলে মনে করেছে। উপত্যকাজুড়ে তীব্র বিমান হামলা তো চলছেই। সিনওয়ারের ভাগ্যে এখনও মৃত্যু নিশ্চিত হয়নি। এসব এমন পরিস্থিতিতে ঘটছে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট এ অঞ্চলে অবস্থান করছেন। এ থেকে ইসরায়েল সরকার যুদ্ধ শেষ করার বিষয়ে কতটা উদাসীন এটি স্পষ্ট হয়।

যদি যুদ্ধ সত্যিই আবার শুরু হয়, তাহলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। এ মাসের শুরুতে ইসরায়েলি নিরাপত্তাবিষয়ক মন্ত্রিসভা সর্বসম্মতিক্রমে গাজা উপত্যকায় সামরিক আক্রমণ সম্প্রসারণের একটি পরিকল্পনা অনুমোদন করেছে। এর সঙ্গে ছিল মার্কিন প্রেসিডেন্টের মধ্যপ্রাচ্য সফর শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার সতর্কতা। জোটের সবচেয়ে চরম ডানপন্থি সদস্যদের প্রচণ্ড চাপের মুখে ইসরায়েল নতুন সামরিক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে, যা কেবল ‘হামাসকে পরাজিত করার’ মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই এবং অবশিষ্ট জিম্মিদের ভাগ্য নিয়ে তাদের আগ্রহ তেমন নেই। এর পরিবর্তে তাদের লক্ষ্য অনির্দিষ্টকালের জন্য পুরো অঞ্চল দখল করা।

নেতানিয়াহু নিরাপত্তা ও মিথ্যা মানবিক যুক্তি দিয়ে যুদ্ধের পরবর্তী পর্যায়ের আসল উদ্দেশ্য আড়াল করার চেষ্টা করছেন। তাঁর যুক্তি হলো, গাজাবাসীদের ‘সুরক্ষার লক্ষ্যে’ স্থানান্তর করা হবে। তখন ডানপন্থি মেসিয়ানবাদী দখলদার অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ অসাবধানতাবশত গুপ্ত উদ্দেশ্যটি প্রকাশ করে দিয়েছেন। স্মোট্রিচ পরামর্শ দিয়েছিলেন, আধা বছরের মধ্যে গাজাবাসীকে একটি সংকীর্ণ জমিতে সীমাবদ্ধ করা হবে, বাকি অঞ্চল ‘সম্পূর্ণ ধ্বংস’ করা হবে। ফলে তারা ‘নতুন জীবন শুরু করার জন্য অন্য জায়গার সন্ধানে নামবে’। অন্য কথায়, পরিকল্পনাটি হলো মূলত গাজাবাসীকে জোরপূর্বক ভিটেছাড়া করা। 
অতীতে যখন এই রাজনৈতিক শক্তিগুলো ইসরায়েলি সমাজ ও রাজনীতিতে প্রান্তিক পর্যায়ে ছিল, তখন যুদ্ধাপরাধতুল্য এ ধরনের আহ্বানকে নিছক অতিডানপন্থি বুলি বলে উড়িয়ে দেওয়া  হতো। এই ঘৃণ্য ধারণার প্রতিনিধিত্বকারীরা এখন মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত, তাই সেই অবস্থান আর জারি থাকে না। আরও খারাপ বিষয় হলো, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী পরবর্তী নির্বাচন পর্যন্ত ক্ষমতা নিশ্চিত রাখতে তাদের ওপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল। এ কারণে তিনি তাঁর দুর্নীতির বিচার পণ্ড করার জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা চালিয়ে যাওয়ারও সক্ষমতা রাখেন। বিশেষ করে যখন এটি অত্যন্ত অপ্রীতিকর পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে তাকে প্রসিকিউশন কর্তৃক জেরা করা হবে।

নেতানিয়াহু অতি ডানপন্থিদের তারা যা চায় তাই দিচ্ছেন। কারণ তিনি নতুন সাধারণ নির্বাচন মোকাবিলার সামর্থ্য রাখেন না, যদিও বেশির ভাগ ইসরায়েলিই নতুন নির্বাচন চায়। ৭ অক্টোবর হামাসের হত্যাযজ্ঞ ঠেকাতে বিশাল ব্যর্থতার তদন্তের জন্য একটি স্বাধীন কমিশন গঠনের কোনো সম্ভাবনা নেই। 

যে কোনো মূল্যে ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য নেতানিয়াহুর মরিয়া চেষ্টার মূল্য প্রথমেই দিতে হচ্ছে ফিলিস্তিনিদের। এর মূল্য তার নিজের জনগণও দিচ্ছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যে কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশে বাধা দিচ্ছে। এ ছাড়া সাহায্য সংস্থাগুলো ক্রমাগত অনাহার, চিকিৎসা সহায়তার অভাব, বিশেষ করে হাসপাতালগুলোতে বোমা হামলা এবং পরিষ্কার পানি ও স্যানিটেশনের সুযোগ কমে যাওয়ার বিষয়ে সতর্ক করে আসছে। ইসরায়েলি সাবেক প্রধানমন্ত্রী এহুদ ওলমার্ট এই সপ্তাহের পরিস্থিতি ‘সম্পূর্ণ অসহনীয়, অগ্রহণযোগ্য ও ক্ষমার অযোগ্য’ বলে চিহ্নিত করেছেন। এটি অবিলম্বে বন্ধ করা উচিত।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব হলো ইসরায়েল যেন এই নতুন যুদ্ধের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে না পারে তা নিশ্চিত করা। ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ইতোমধ্যে হাজার হাজার সৈন্য বিধ্বস্ত গাজায় প্রবেশের জন্য প্রস্তুত করে রেখেছে, এই পরিস্থিতিতে গাজার অধিবাসীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। যদি আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পূর্ণমাত্রার যুদ্ধের পুনরাবৃত্তি রোধে তাদের প্রভাব ব্যবহার না করে এবং ট্রাম্প তাঁর শক্তি প্রদর্শন না করার সিদ্ধান্ত নেন, যেমনটি তিনি শপথ গ্রহণের প্রাক্কালে করেছিলেন, তাহলে তারা গাজায় ফিলিস্তিনিদের আরও রক্তপাত, বাস্তুচ্যুতি ও দখলদারিত্ব চালিয়ে যাবে। সম্ভবত তা আগের চেয়েও খারাপ মাত্রায় ছড়িয়ে পড়বে।

ইয়োসি মেকেলবার্গ: চ্যাথাম হাউসে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের অধ্যাপক এবং মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা কর্মসূচির সহযোগী ফেলো; দ্য গার্ডিয়ান থেকে ভাষান্তর ইফতেখারুল ইসলাম

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মধ্যপ্রাচ্য সফরকালে ট্রাম্প গাজার কথা ভুলে গেছেন?