বিগত সরকার এমনভাবে প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছিল, খতিবকেও পালাতে হয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
Published: 20th, May 2025 GMT
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘গত ১৫ বছরে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো এমনভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল যে সরকারে বদলের পর বায়তুল মোকাররমের খতিবকেও পালাতে হয়েছিল। তিনি (খতিব) আমাদের জীবনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলেননি যে তাঁকে পালিয়ে যেতে হবে। এই পরিস্থিতি বলে দেয় যে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি মানুষের কতটা অবিশ্বাস ছিল।’
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন শেখ বশিরউদ্দীন। ‘বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা নীতি: সম্ভাবনা, প্রতিবন্ধকতা ও এগিয়ে যাওয়ার পথ’ শীর্ষক সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ।
প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য আখতারুজ্জামান তালুকদার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘গত ১৫ বছরে আমরা সবাই দেখেছি আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ধ্বংসের কারণে বেশ কিছু সুবিধাভোগী গোষ্ঠী তৈরি হয়েছিল। ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, কিছু ব্যক্তির কাছে পুরো বাজারব্যবস্থা কুক্ষিগত হয়ে পড়ে। বিগত সময়ে যে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে ও প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে ফেলা হয়েছে—আমাদের সেই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এ জন্য প্রতিযোগিতা কমিশন, ব্যবসায়ীসহ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু ভালো পদক্ষেপ নেওয়ায় বর্তমানে দেশের প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ে সুদিন এসেছে বলে দাবি করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্বে আসার পরে প্রচুর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলাম। এখন ধীরে ধীরে সব ক্ষেত্রে সফলতা আসছে। অন্য সব প্রতিষ্ঠানের মতো প্রতিযোগিতা কমিশনের সক্ষমতাও গত সরকারের সময়ে ধ্বংস করা হয়েছিল। যে কারণে সাধারণ মানুষ প্রতিষ্ঠানটি থেকে খুব বেশি সুফল পায়নি। দেশের মানুষ তাদের প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিযোগিতার সুফল দেখতে চায়। এ কারণে প্রতিযোগিতা কমিশনকে সে জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। প্রতিযোগিতা কমিশনের কাজ শুধু বেশি দামে বাজারে পণ্য বিক্রির বিষয়টি তদারকি করা না; বরং কেউ কম মূল্যে পণ্য বিক্রি করলে তাদেরও তদারকি করা; শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘অ্যাডাম স্মিথের বর্ণনায় অর্থনীতিতে যে “অদৃশ্য হাতের” কথা বলা হয়, তা আমি কখনো দেখিনি। এটি ভ্রান্ত ধারণা, নাকি বাস্তবতা, আমি তা জানি না।’
সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি কামরান টি রহমান, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক এ কে এনামুল হক, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য আফরোজা বিলকিস, যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন কার্যালয়ের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ইসাম মোসাদ্দেক ও ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন এ এইচ এম আহসান।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে পাঁচ থেকে ছয়টি প্রতিষ্ঠান একই উৎস থেকে পণ্য ক্রয় ও বাজারজাত করে। তাদের খরচ ও মোটামুটি একই রকম হওয়ায় বাজারে খুব বেশি প্রতিযোগিতা দেখা যায় না। তাই অন্তর্বর্তী সরকার বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান বলেন, ‘প্রতিযোগিতা কমিশন শুধু প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা করে না, সুরক্ষাও দেয়। ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান যারা বাজারে অসম প্রতিযোগিতায় পড়ছে, তাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি। বাজারে সিন্ডিকেট ভেঙে সব প্রতিষ্ঠানকে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার সুযোগ করে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’
এ ছাড়া সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিল ইউএনডিপি বাংলাদেশের উপ–আবাসিক প্রতিনিধি সোনালী দয়ারত্নে, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট ধ ব স কর হয় ছ ল আম দ র সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিগত সরকার এমনভাবে প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছিল, খতিবকেও পালাতে হয়েছে: বাণিজ্য উপদেষ্টা
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেছেন, ‘গত ১৫ বছরে দেশের প্রতিষ্ঠানগুলো এমনভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল যে সরকারে বদলের পর বায়তুল মোকাররমের খতিবকেও পালাতে হয়েছিল। তিনি (খতিব) আমাদের জীবনে তেমন কোনো প্রভাব ফেলেননি যে তাঁকে পালিয়ে যেতে হবে। এই পরিস্থিতি বলে দেয় যে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি মানুষের কতটা অবিশ্বাস ছিল।’
আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে আয়োজিত এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন শেখ বশিরউদ্দীন। ‘বাংলাদেশে প্রতিযোগিতা নীতি: সম্ভাবনা, প্রতিবন্ধকতা ও এগিয়ে যাওয়ার পথ’ শীর্ষক সেমিনারটি যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ।
প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সেমিনারে স্বাগত বক্তব্য দেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য আখতারুজ্জামান তালুকদার। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন রিসার্চ অ্যান্ড পলিসি ইন্টিগ্রেশন ফর ডেভেলপমেন্টের (র্যাপিড) চেয়ারম্যান এম এ রাজ্জাক। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘গত ১৫ বছরে আমরা সবাই দেখেছি আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে ধ্বংস করা হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ধ্বংসের কারণে বেশ কিছু সুবিধাভোগী গোষ্ঠী তৈরি হয়েছিল। ফলে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, কিছু ব্যক্তির কাছে পুরো বাজারব্যবস্থা কুক্ষিগত হয়ে পড়ে। বিগত সময়ে যে দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে ও প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে ফেলা হয়েছে—আমাদের সেই পরিস্থিতি থেকে ঘুরে দাঁড়াতে হবে। এ জন্য প্রতিযোগিতা কমিশন, ব্যবসায়ীসহ সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বেশ কিছু ভালো পদক্ষেপ নেওয়ায় বর্তমানে দেশের প্রবাসী আয় ও রপ্তানি আয়ে সুদিন এসেছে বলে দাবি করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘আমরা দায়িত্বে আসার পরে প্রচুর চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলাম। এখন ধীরে ধীরে সব ক্ষেত্রে সফলতা আসছে। অন্য সব প্রতিষ্ঠানের মতো প্রতিযোগিতা কমিশনের সক্ষমতাও গত সরকারের সময়ে ধ্বংস করা হয়েছিল। যে কারণে সাধারণ মানুষ প্রতিষ্ঠানটি থেকে খুব বেশি সুফল পায়নি। দেশের মানুষ তাদের প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিযোগিতার সুফল দেখতে চায়। এ কারণে প্রতিযোগিতা কমিশনকে সে জায়গায় নিয়ে যেতে হবে। প্রতিযোগিতা কমিশনের কাজ শুধু বেশি দামে বাজারে পণ্য বিক্রির বিষয়টি তদারকি করা না; বরং কেউ কম মূল্যে পণ্য বিক্রি করলে তাদেরও তদারকি করা; শাস্তির আওতায় আনা প্রয়োজন।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘অ্যাডাম স্মিথের বর্ণনায় অর্থনীতিতে যে “অদৃশ্য হাতের” কথা বলা হয়, তা আমি কখনো দেখিনি। এটি ভ্রান্ত ধারণা, নাকি বাস্তবতা, আমি তা জানি না।’
সেমিনারে প্যানেল আলোচনায় অংশ নেন মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি কামরান টি রহমান, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক এ কে এনামুল হক, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য আফরোজা বিলকিস, যুক্তরাজ্যের ফরেন, কমনওয়েলথ ও উন্নয়ন কার্যালয়ের অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ইসাম মোসাদ্দেক ও ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান মইনুল খান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারপারসন এ এইচ এম আহসান।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্যসচিব মাহবুবুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে পাঁচ থেকে ছয়টি প্রতিষ্ঠান একই উৎস থেকে পণ্য ক্রয় ও বাজারজাত করে। তাদের খরচ ও মোটামুটি একই রকম হওয়ায় বাজারে খুব বেশি প্রতিযোগিতা দেখা যায় না। তাই অন্তর্বর্তী সরকার বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক করতে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
প্রতিযোগিতা কমিশনের চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান বলেন, ‘প্রতিযোগিতা কমিশন শুধু প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরিমানা করে না, সুরক্ষাও দেয়। ছোট ছোট প্রতিষ্ঠান যারা বাজারে অসম প্রতিযোগিতায় পড়ছে, তাদের সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আমরা কাজ করছি। বাজারে সিন্ডিকেট ভেঙে সব প্রতিষ্ঠানকে সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার সুযোগ করে দেওয়াই আমাদের লক্ষ্য।’
এ ছাড়া সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিল ইউএনডিপি বাংলাদেশের উপ–আবাসিক প্রতিনিধি সোনালী দয়ারত্নে, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের কর্মকর্তা, বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধি ও ইউএনডিপি বাংলাদেশের কর্মকর্তারা।