সাবেক অধ্যক্ষসহ ৩ জনের বিরুদ্ধে ১১ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
Published: 9th, July 2025 GMT
নওগাঁর বদলগাছী মহিলা ডিগ্রি কলেজের সাবেক অ্যাডহক কমিটির সভাপতি, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সিনিয়র প্রভাষকের বিরুদ্ধে ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীদের দাবি, দুর্নীতি ঢাকতেই কলেজে ‘অধ্যক্ষের চেয়ার’ নিয়ে শুরু হয়েছে নাটকীয়তা।
অভিযোগে বলা হয়, সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান, সদ্যপ্রয়াত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মমতাজ জাহান ও প্রভাষক এস এইচ এম মাহমুদুল হাসান গাজী কলেজ ফান্ড ও শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ বাবদ নেওয়া টাকার হিসাব দিতে পারেননি। ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার ২০ টাকা ফি নেওয়া হলেও এর মধ্যে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৬৬ টাকার কোনো ব্যয়ের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ব্যাংক থেকে উত্তোলিত ৮ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকাসহ মোট ১১ লাখ ৫৫ হাজার ১২১ টাকার হিসাব নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ব্যাংক থেকে উত্তোলনের স্টেটমেন্ট এরই মধ্যে গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে এসেছে।
কলেজে গেলে দেখা যায়, অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে মাহবুব আলম বসে রয়েছেন। অন্যদিকে, দোতলায় একটি ঘরের সামনে বসেছিলেন অন্য এক পক্ষের নিয়োগপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইমামুল হোসেন।
এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, হজে ছিলাম। তখন শুনলাম, আমি সভাপতি নেই। টাকা আত্মসাতের প্রশ্নই ওঠে না। আমি কেবল চেকে সই দিয়েছি। খরচের দায়িত্ব ছিল অধ্যক্ষের। তিনি আরও বলেন, মামলা পরিচালনার খরচও কিছু হয়েছিল। তবে শিক্ষার্থীদের অর্থ কোথায় খরচ হয়েছে, আমার জানা নেই।
অভিযুক্ত প্রভাষক মাহমুদুল হাসান গাজীর দাবি, টাকা ব্যাংকে আছে। সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সই ছাড়া টাকা তোলা সম্ভব নয়।
আরেক অভিযুক্ত ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘টাকা কখন তোলা হয়েছে, সেটা বলা সম্ভব নয় রেজিস্ট্রার ছাড়া।’
অন্যদিকে, বর্তমান অধ্যক্ষ মাহবুব আলম বলেন, তারা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে দুর্নীতি ঢাকতে চাইছেন। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে কলেজের বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল বলেন, কলেজে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষ দিয়ে অডিট করা হবে। সত্যতা মিললে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে কলেজের শিক্ষার্থীরা এই বিশৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক দ্বন্দ্বে হতাশ। তারা দ্রুত একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: নওগ
এছাড়াও পড়ুন:
সূর্য ধ্বংসের সময় পৃথিবীর কী হবে
সূর্যের শেষটা কেমন হবে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেক তত্ত্ব চালু আছে। সৌরজগতে উষ্ণতা থেকে শুরু করে ভর আর সব গ্রহের কক্ষপথের স্থিতিশীলতা দিচ্ছে সূর্য। আমাদের পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজনীয় অবস্থা তৈরির জন্য সূর্যের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, সূর্য প্রায় ৫০০ কোটি বছর পর ধ্বংস হতে শুরু করবে। হাইড্রোজেন কমতে থাকায় শেষ পর্যন্ত সূর্য একটি লোহিত দৈত্যাকার অবস্থানে প্রসারিত হবে। তখন সম্ভাব্যভাবে পৃথিবীসহ অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু গ্রহকে সূর্য গ্রাস করে ফেলবে। সূর্যের লোহিত দৈত্যাকার অবস্থানের সময় চরম তাপের পরিস্থিতি দেখা যাবে। এই পর্যায় কোটি কোটি বছর পর্যন্ত স্থায়ী হবে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, সূর্যের হাইড্রোজেন কমার সময় পৃথিবীর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। মহাসাগর ও অন্যান্য জলাশয় বাষ্পীভূত হয়ে শূন্য হয়ে যাবে। ধীরে ধীরে আমাদের গ্রহ প্রাণের বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে। বর্ধিত তাপের ফলে বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাস মহাকাশে হারিয়ে যাবে। সূর্যের লোহিত দৈত্যাকার পর্যায়টি প্রায় ১০০ কোটি বছর স্থায়ী হবে। এরপর একক নীহারিকা তৈরি করবে সূর্য। একটি সাদা বামন বস্তু হিসেবে সূর্য অবস্থান করবে। এ ধরনের পরিবর্তনের সময় পৃথিবীতে বেঁচে থাকা কঠিন হবে। বর্ধিত তাপ ও বিকিরণের কারণে বেশির ভাগ জীব বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
যুক্তরাজ্যের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্রিস্টোফার মানসার বলেন, সূর্যের মতো নক্ষত্র যখন মারা যায়, তখন তাদের কেন্দ্রস্থলে হাইড্রোজেন জ্বলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তারা লাল দৈত্যে পরিণত হয়। যদি তাদের গ্রহ থাকে, তবে সেগুলো গ্রাস করতে পারে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জেটিএফ এসএলআরএন-২০২০ নামের একটি নক্ষত্রকে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এটি কেমন হতে পারে, তার একটি আভাস পেয়েছেন। নক্ষত্রটি তার একটি গ্রহকে গ্রাস করেছে।
প্রায় ৫০০ কোটি বছর পরে সূর্য লোহিত দৈত্যাকার অবস্থানে পৌঁছাবে। এর আগেই বুধ ও শুক্র গ্রহকে গ্রাস করে ফেলবে সূর্য। পৃথিবীরও একইভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যখন সূর্য একটি শ্বেত বামন নক্ষত্রে পরিণত হয়ে যাবে, তখন কেবল মঙ্গল আর গ্রহাণু বেল্টের পরে যা কিছু আছে, তা টিকে থাকবে।
সূত্র: এনডিটিভি, স্কাইঅ্যাটনাইটম্যাগাজিন