নওগাঁর বদলগাছী মহিলা ডিগ্রি কলেজের সাবেক অ্যাডহক কমিটির সভাপতি, সাবেক ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ও সিনিয়র প্রভাষকের বিরুদ্ধে ১১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীদের দাবি, দুর্নীতি ঢাকতেই কলেজে ‘অধ্যক্ষের চেয়ার’ নিয়ে শুরু হয়েছে নাটকীয়তা।

অভিযোগে বলা হয়, সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান, সদ্যপ্রয়াত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মমতাজ জাহান ও প্রভাষক এস এইচ এম মাহমুদুল হাসান গাজী কলেজ ফান্ড ও শিক্ষার্থীদের ফরম পূরণ বাবদ নেওয়া টাকার হিসাব দিতে পারেননি। ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩ লাখ ৪০ হাজার ২০ টাকা ফি নেওয়া হলেও এর মধ্যে ১ লাখ ৬ হাজার ৩৬৬ টাকার কোনো ব্যয়ের প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ২ লাখ ৪০ হাজার টাকা এবং ব্যাংক থেকে উত্তোলিত ৮ লাখ ৮ হাজার ৫০০ টাকাসহ মোট ১১ লাখ ৫৫ হাজার ১২১ টাকার হিসাব নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। ব্যাংক থেকে উত্তোলনের স্টেটমেন্ট এরই মধ্যে গণমাধ্যম কর্মীদের হাতে এসেছে।

কলেজে গেলে দেখা যায়, অধ্যক্ষের অফিস কক্ষে মাহবুব আলম বসে রয়েছেন। অন্যদিকে, দোতলায় একটি ঘরের সামনে বসেছিলেন অন্য এক পক্ষের নিয়োগপ্রাপ্ত ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ইমামুল হোসেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে গেলে সাবেক সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, হজে ছিলাম। তখন শুনলাম, আমি সভাপতি নেই। টাকা আত্মসাতের প্রশ্নই ওঠে না। আমি কেবল চেকে সই দিয়েছি। খরচের দায়িত্ব ছিল অধ্যক্ষের। তিনি আরও বলেন, মামলা পরিচালনার খরচও কিছু হয়েছিল। তবে শিক্ষার্থীদের অর্থ কোথায় খরচ হয়েছে, আমার জানা নেই।

অভিযুক্ত প্রভাষক মাহমুদুল হাসান গাজীর দাবি, টাকা ব্যাংকে আছে। সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের সই ছাড়া টাকা তোলা সম্ভব নয়।
আরেক অভিযুক্ত ফরহাদ হোসেন বলেন, ‘টাকা কখন তোলা হয়েছে, সেটা বলা সম্ভব নয় রেজিস্ট্রার ছাড়া।’

অন্যদিকে, বর্তমান অধ্যক্ষ মাহবুব আলম বলেন, তারা দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করে দুর্নীতি ঢাকতে চাইছেন। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিষয়টি নিয়ে কলেজের বর্তমান অ্যাডহক কমিটির সভাপতি ফজলে হুদা বাবুল বলেন, কলেজে কোনো অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষ দিয়ে অডিট করা হবে। সত্যতা মিললে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে কলেজের শিক্ষার্থীরা এই বিশৃঙ্খলা ও প্রশাসনিক দ্বন্দ্বে হতাশ। তারা দ্রুত একটি শিক্ষাবান্ধব পরিবেশ ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নওগ

এছাড়াও পড়ুন:

আফগানিস্তানে মধ্যরাতে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাত

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলীয় হিন্দুকুশ অঞ্চলে ৬ দশমিক ৩ মাত্রার একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। যুক্তরাষ্ট্র ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) এ তথ্য জানিয়েছে। দুই মাস আগেই দেশটিতে এক ভূমিকম্পে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল।

ইউএসজিএস জানায়, রোববার দিবাগত রাতে আফগানিস্তানের হিন্দুকুশ অঞ্চলে মাজার-ই-শরিফ শহরের কাছে খোলম এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৫৯ মিনিটে আঘাত হানা এই ভূমিকম্পের গভীরতা প্রথমে ১০ কিলোমিটার বলা হয়। পরে তা সংশোধন করে গভীরতা ২৮ কিলোমিটার বলে জানায় সংস্থাটি।

আফগানিস্তানের জাতীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে জানানো হবে।

উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট আফগানিস্তানের সাম্প্রতিক ইতিহাসে সবচেয়ে প্রাণঘাতী ভূমিকম্পটি আঘাত হেনেছিল। দেশটির পূর্বাঞ্চলে আঘাত হানা রিখটার স্কেলে ৬ মাত্রার ওই ভূমিকম্পে ২ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারান।

আরও পড়ুনআফগানিস্তানে ভূমিকম্পে নিহত বেড়ে ২২০৫, খোলা আকাশের নিচে মানুষ০৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫

আফগানিস্তানে প্রায়শই ভূমিকম্প আঘাত হানে। বিশেষ করে হিন্দুকুশ পর্বতমালা বরাবর, যেখানে ইউরেশীয় এবং ভারতীয় টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে।

ব্রিটিশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থার ভূমিকম্পবিদ ব্রায়ান ব্যাপটির দেওয়া তথ্য মতে, ১৯০০ সাল থেকে উত্তর-পূর্ব আফগানিস্তানে রিখটার স্কেলে ৭ মাত্রার বেশি ১২টি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে।

আরও পড়ুন৩৫ বছরে আফগানিস্তানে ভয়াবহ যত ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ