১৪ দেশে ফের শুল্ক আরোপ, বাণিজ্যে অস্থিরতার শঙ্কা
Published: 9th, July 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প মিত্র দেশ জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ আরও ১৪ দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এসব দেশকে আগামী ১ আগস্ট থেকে নতুন শুল্কের মুখোমুখি হতে হবে। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, ট্রাম্পের নতুন ঘোষণা বিশ্ব অর্থনীতিতে অস্থিরতা তৈরি করবে। খোদ যুক্তরাষ্ট্রেই এর খারাপ প্রভাব পড়বে।
শুল্ক আরোপ করা হয়েছে এমন অন্য দেশগুলো হলো– বাংলাদেশ, মিয়ানমার, লাওস, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, ইন্দোনেশিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, কাজাখস্তান, তিউনিসিয়া ও মালয়েশিয়া।
মিয়ানমার ও লাওসের ওপর সবচেয়ে বেশি ৪০ শতাংশ কর আরোপ করা হয়েছে। মিয়ানমার যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও সামুদ্রিক খাবার এবং লাওস ট্রেক্সটাইল পণ্যসহ জুতা, কাঠের আসবাব, ইলেকট্রনিক উপাদান ও অপটিক্যাল ফাইবার রপ্তানি করে। থাইল্যান্ড ও কম্বোডিয়া ৩৬ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়েছে। কম্বোডিয়া যুক্তরাষ্ট্রে টেক্সটাইল, পোশাক, জুতা ও সাইকেল এবং থাইল্যান্ড কম্পিউটার যন্ত্রাংশ, রাবার পণ্য ও রত্নপাথর রপ্তানি করে। সার্বিয়ার ওপর ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। দেশটি যুক্তরাষ্ট্রে সফটওয়্যার ও আইটি পরিষেবা এবং গাড়ির টায়ার রপ্তানি করে থাকে।
ইন্দোনেশিয়া ৩২ শতাংশ শুল্কের মুখোমুখি হয়েছে। দেশটি পাম অয়েল, কোকো মাখন ও সেমিকন্ডাক্টর যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করে থাকে। দক্ষিণ আফ্রিকা এবং বসনিয়া ও হার্জেগোভিনার ওপর ৩০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের বসনিয়ার প্রধান রপ্তানি অস্ত্র ও গোলাবারুদ এবং দক্ষিণ আফ্রিকা প্লাটিনাম, হীরা, যানবাহন এবং গাড়ির যন্ত্রাংশ রপ্তানি করে।
জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কাজাখস্তান, তিউনিসিয়া ও মালয়েশিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। জাপান যুক্তরাষ্ট্রে গাড়ি, গাড়ির যন্ত্রাংশ ও ইলেকট্রনিকস পণ্য; দক্ষিণ কোরিয়া যানবাহন, যন্ত্রপাতি ও ইলেকট্রনিকস পণ্য; কাজাখস্তান তেল, ইউরেনিয়াম, ফেরোঅ্যালয় ও রুপা এবং মালয়েশিয়া ইলেকট্রনিকস ও বৈদ্যুতিক পণ্য রপ্তানি করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে তিউনিসিয়ার প্রধান রপ্তানি পণ্য হলো, প্রাণী ও উদ্ভিজ্জ চর্বি, পোশাক, ফল ও বাদাম। বাংলাদেশের ওপর শুল্ক আরোপ হয়েছে ৩৫ শতাংশ। দেশটি বিপুল পরিমাণ তৈরি পোশাক রপ্তানি করে যুক্তরাষ্ট্রে।
শুল্ক আরোপের চিঠিতে ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র এই দেশগুলোর সঙ্গে তাদের বাণিজ্য সম্পর্ক এগিয়ে নিতে চায়। তবে তা হতে হবে ন্যায্য ও সুষম বাণিজ্যের মাধ্যমে। তিনি হুমকি দিয়েছেন, কোনো দেশ প্রতিশোধমূলক পাল্টা শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিলে, তাদের ওপর আরও উচ্চ শুল্ক আরোপ করা হবে। আর বাণিজ্য বাধা দূর করতে আলোচনা চাইলে সেই পথ খোলা আছে। সোমবার শুল্ক আরোপের সময়সীমা নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, সময়সীমার ঘোষণাটি শতভাগ মানা হবে তা নয়। কেউ আলোচনা চাইলে পথ খোলা।
জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চুক্তির ব্যাপারে আলোচনা করবেন। দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় বলেছে, সময়সীমা শেষ হওয়ার আগেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তারা আলোচনায় বসবে। খবর রয়টার্স ও বিবিসির।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র য ক তর ষ ট র র শ ল ক আর প র র ওপর
এছাড়াও পড়ুন:
অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমার বিধান প্রশ্নে রুল
বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের একটি ধারা প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। ধারাটিতে অপরাধ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা উল্লেখ রয়েছে। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকার সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার এ রুল দেন।
২০১৭ সালে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন প্রণয়ন করা হয়। আইনের ১৮ ধারায় অপরাধ আমলে নেওয়ার সময়সীমা সম্পর্কে বলা হয়েছে। ধারাটি বলছে, অপরাধ সংঘটিত হওয়ার দুই বছরের মধ্যে অভিযোগ করা না হলে আদালত ওই অপরাধ আমলে গ্রহণ করবে না।
ওই ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ইশরাত হাসান গত মাসের শেষ দিকে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল নূর মুহাম্মদ আজমী।
রুলে অপরাধের অভিযোগ আমলে নেওয়ায় দুই বছরের সময়সীমা আরোপ–সংক্রান্ত বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের ১৮ ধারা কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিব, নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং স্বরাষ্ট্রসচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
রুলের বিষয়টি জানিয়ে আবেদনকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান প্রথম আলোকে বলেন, বাল্যবিবাহের ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ তৃতীয় এবং দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষে বলে ইউনিসেফের প্রতিবেদনে এসেছে। আইনের ১৮ ধারায় সময়সীমা উল্লেখ করে দুই বছরের মধ্যে মামলা না করতে পারলে কোনো আদালত অপরাধ আমলে গ্রহণ করতে পারবে না বলা হয়েছে। অর্থাৎ বিচার করতে পারবে না। যে মেয়েটির ১১–১২ বছরে বিয়ে হয় তারপক্ষে দুই বছরের মধ্যে মামলা করা সব সময় সম্ভব না–ও হতে পারে। তখন সে নিজেই শিশু। দুই বছর পর আদালত বিচার করতে পারবে না এবং সময়সীমা আইনে বেঁধে দেওয়া সংবিধানের ২৭, ৩১ ও ৩২ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী—এমন সব যুক্তিতে রিটটি করা হয়।