আওয়ামী লীগ-বিএনপি একই গাছের দুই ডাল, দুই ফল : মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম
Published: 9th, July 2025 GMT
ইসলামী আন্দোলনের জ্যেষ্ঠ নায়েবে আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, বিএনপির কাছ থেকে আওয়ামী লীগ একক নির্বাচন শিখেছে। আবার বিএনপি শিখেছে আওয়ামী লীগের কাছ থেকে। এরা একই গাছের দুই ডাল, একই গাছের দুই ফল। মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নাটোর শহরের ভবানীগঞ্জ চত্বরে এক গণসমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্র সংস্কার, গণহত্যার বিচার ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবিতে এ সমাবেশের আয়োজন করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের নাটোর জেলা শাখা। সমাবেশে জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির নুরুল ইসলাম, হেফাজত ইসলামের নাটোর শাখার সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নাটোর শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আবু জাহেদ (রাহি) উপস্থিত ছিলেন।
সমাবেশে দেশের জনগণের উদ্দেশে সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ-বিএনপিকে তো আপনারা পরীক্ষা করেছেন। এবার ইসলামী দলগুলোকে একবার পরীক্ষা করেন। আমাদের ক্ষমতা দিয়ে দেখেন, আমরা আপনাদের জন্য কাজ করতে না পারলে আর কোনোদিন পরীক্ষা দিতে আসব না।’
সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম আরও বলেন, ‘জুলাই আন্দোলনে রাজপথে ছিলাম, বুলেটের সামনে ছিলাম। তাই দেশের প্রতি দরদ আমাদের বেশি। যাঁরা বিদেশে ছিলেন, তাঁদের দরদ থাকতে পারে না, ব্যথাও লাগবে না। আমরা রাজপথে ছিলাম, কথা বলার দায়িত্ব আমাদের। যাঁরা রাস্তায় ছিলেন, কেবল তাঁরা কথা বলবেন, যাঁরা ছিলেন না, তাঁরা থাকবেন জেলখানায়। কারণ, আমরা রাস্তায় আন্দোলন না করলে আপনারা জেলখানা থেকে বের হতে পারতেন না।’
চাঁদাবাজদের হুঁশিয়ার করে সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেন, ‘দেশটাকে মগের মুল্লুক ভাবার সুযোগ নাই। যাঁরা শেখ হাসিনার বুলেটের সামনে বুক উঁচা করে রাখতে পারেন, তাঁরা চাঁদাবাজ-ধর্ষকদের সামনেও বুক উঁচা করে দাঁড়াবেন।’
সমাবেশ শেষে আগামী নির্বাচনে নাটোরের সংসদীয় আসনে ইসলামী আন্দোলন মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জোটে গেলেও নিজ দলের প্রতীকে ভোট করার বিধান প্রশ্নে রুল
নির্বাচনে নিবন্ধিত একাধিক দল জোটভুক্ত হলেও নিজ নিজ দলের প্রতীকে ভোট করতে হবে—গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) সংশোধিত এমন বিধান প্রশ্নে রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি ফাতেমা আনোয়ারের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ রুল দেন।
গণপ্রতিনিধিত্ব (সংশোধন) অধ্যাদেশের ওই বিধান–সংবলিত ৯ অনুচ্ছেদ সংবিধানের কয়েকটি অনুচ্ছেদের (২৮, ৩৮ ও ৩৯ অনুচ্ছেদ) সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় কেন অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না—রুলে সে বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। আইনসচিব, নির্বাচন কমিশন (ইসি) ও প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) বিবাদীদের ১০ দিনের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
নতুন ওই বিধান যুক্ত করে ৩ নভেম্বর আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করেছিল অন্তর্বর্তী সরকার। আগে কোনো রাজনৈতিক দল জোটভুক্ত হয়ে নির্বাচনে অংশ নিলে জোটের শরিক যেকোনো দলের প্রতীকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ পেত।
ওই বিধান–সংবলিত অধ্যাদেশের ৯ অনুচ্ছেদের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) মহাসচিব মোমিনুল আমিন গত বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিট করেন। আজ রিটের ওপর শুনানি হয়।
আদালতে রিট আবেদনকারীর পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী আহসানুল করিম, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী সাহেদুল আজম। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আবদুল ওয়াহাব উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জোট করলেও দলীয় প্রতীকেই নির্বাচন করা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিল বিএনপি। দলটি নির্বাচন কমিশন ও আইন মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে তাদের আপত্তির কথা তুলে ধরে। বিএনপি মনে করে, জোটগত নির্বাচন করলেও নিজস্ব প্রতীকে ভোট করে ছোট দলগুলোর নেতাদের জয় সহজ হবে না। এর ফলে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ সুফল পেয়ে যেতে পারে।
তবে জামায়াতে ইসলামী ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) এই সংশোধনের পক্ষে। শেষ পর্যন্ত জোট করলেও নির্বাচনে অংশ নিতে হবে নিজ দলের প্রতীকে, শেষ পর্যন্ত এমন বিধান যুক্ত করেই ৩ নভেম্বর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশ জারি করে অন্তর্বর্তী সরকার।
আরও পড়ুনজোটেও নিজ দলের প্রতীকে নির্বাচনের বিধান রেখে আরপিও সংশোধন অধ্যাদেশ জারি ০৪ নভেম্বর ২০২৫