ইরান বলেছে, তারা যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি তাদের পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনার কোনো অনুরোধ করেনি—যেমনটি দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ঈসমাইল বাঘায়ি গতকাল মঙ্গলবার দেশটির রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসনিমকে বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে কোনো বৈঠকের অনুরোধ করা হয়নি।’ 

এর একদিন আগে হোয়াইট হাউসে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে নৈশভোজের সময় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, গত মাসে ইসরায়েলের সঙ্গে ১২ দিনের যুদ্ধে (যেখানে যুক্তরাষ্ট্রও অংশ নেয়) ইরান পরাজিত হওয়ার পর তারা একটি নতুন পরমাণু চুক্তির জন্য সক্রিয়ভাবে আলোচনায় বসতে চাইছে।

এমনকি ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ বলেছেন, এই বৈঠক আগামী সপ্তাহেই অনুষ্ঠিত হতে পারে। তিনিও ওই নৈশভোজে উপস্থিত ছিলেন।  

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি গতকাল ফাইন্যান্সিয়াল টাইমস পত্রিকায় প্রকাশিত এক মতামত নিবন্ধে লিখেছেন, তেহরান কূটনীতিতে আগ্রহী। ‘তবে আরও আলোচনার বিষয়ে সন্দেহ করার যথেষ্ট কারণ আমাদের আছে।’

অবশ্য ইরান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ট্রাম্পের ওপর দাবি প্রত্যাখ্যান করার দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান মার্কিন সাংবাদিক টাকার কার্লসনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে আস্থা ফিরিয়ে আনা গেলে আলোচনা পুনরায় শুরুর বিষয়ে ইরানের কোনো সমস্যা নেই।

গত সোমবার সম্প্রচারিত ওই সাক্ষাৎকার ইরানে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। সমালোচকেরা পেজেশকিয়ানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন যে, ইরানে ওপর গত মাসে যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পরও তিনি ‘অতিমাত্রায় নমনীয়’ অবস্থান নিয়েছেন।

ইরানের রক্ষণশীল কায়হান পত্রিকা এক সম্পাদকীয়তে পেজেশকিয়ানকে উদ্দেশ্য করে লিখেছে, ‘আপনি কি ভুলে গেছেন, এই মার্কিনিরা জায়নবাদীদের সঙ্গে মিলে এর আগেও আলোচনার কথা বলে হামলার সময় ও প্রস্তুতি নিয়েছিল?’

সংরক্ষণশীল আরেকটি পত্রিকা জাভান প্রেসিডেন্ট পেজেশকিয়ানের সমালোচনা করে লিখেছে, তাঁর বক্তব্য ছিল ‘একটু বেশি নমনীয়।’

তবে সংস্কারপন্থী দৈনিক হাম মিহান প্রেসিডেন্টের ইতিবাচক মনোভাবের প্রশংসা করেছে।

ইতিমধ্যে ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলায় ইরানের পরমাণু ও সামরিক স্থাপনায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ইরান বলছে, এতে এক হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে আলোচনার সম্ভাবনা নিয়ে বিভ্রান্তি ও রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হয়েছে তেহরানে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র

এছাড়াও পড়ুন:

এবার জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন নিয়ে প্রশ্ন তুললেন উমামা

ষড়যন্ত্র ও নোংরামির অভিযোগ এনে ‘বৈষম্যবিরোধী প্ল্যাটফর্ম’ থেকে সরে যাওয়ার পর এবার জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা।

মঙ্গলবার (৮ জুলাই) ফেসবুকে প্রকাশিত একটি স্ট্যাটাসে তিনি ফাউন্ডেশনের কার্যক্রম নিয়ে তীব্র সমালোচনা করেন। উমামার অভিযোগ, শহীদ ও আহত পরিবারের সেবা প্রদানে প্রতিষ্ঠিত এই ফাউন্ডেশন তাদের দায়িত্বপালনে সম্পূর্ণ ব্যর্থ।

তিনি বলেন, “চিকিৎসা, আর্থিক সহায়তা ও পুনর্বাসন ছিল ফাউন্ডেশনের প্রধান কর্তব্য, কিন্তু কীভাবে টাকা এসেছে, কীভাবে বিতরণ হয়েছে, কারা পেয়েছে এবং কতজন এখনো পাওনা আছে—এসব বিষয় স্পষ্ট নয়।”

উমামা আরো জানান, অর্ধেকের বেশি আহতই ফাউন্ডেশনের প্রথম ধাপের আর্থিক সহায়তা পায়নি। এছাড়া, এক বছর পেরিয়ে গেলেও ফাউন্ডেশন আহতদের তালিকা তৈরি করতে পারেনি এবং পুরো প্রক্রিয়াটির গোঁজামিল অবস্থা বিরাজ করছে।

এই অবস্থায় মঙ্গলবার ফাউন্ডেশনের অফিসে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “ফাউন্ডেশনকে দ্রুত দায়িত্বশীল ও দক্ষ ব্যক্তিদের হাতে হস্তান্তর করে আহত ও শহীদ পরিবারের পাশে দাঁড়াতে হবে।” 

গতকাল শাহবাগে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের অফিস কক্ষ ভাঙচুর করেন জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজন। গতকাল সন্ধ্যার পর বারডেম হাসপাতালের পাশের ওই অফিস কক্ষে প্রথমে তালা লাগানো হয়। পরে জুলাই শহীদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের কর্মচারীদের সঙ্গে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে সেখানে ভাঙচুর করা হয়। এ সময় ২০ থেকে ২৫ জন জুলাই যোদ্ধা সেখানে উপস্থিত ছিলেন।

হামলাকারীদের অভিযোগ, জুলাই গণ–অভ্যুত্থানে আহতদের কয়েকজনকে দ্বিতীয় ধাপের টাকা দেওয়ার কথা বলে তিন থেকে চারবার ঘোরানো হয়েছে। এরপর গতকাল টাকা দেওয়ার তারিখ দিয়েছিল। কিন্তু গতকালও টাকা দেওয়া হয়নি।

এর আগে নানা অনিয়ম আর দুর্নীতির অভিযোগ এনে গত ২৭ জুন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন থেকে সড়ে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানান উমামা। এছাড়া, গত  ২৮ এপ্রিল উমামা জানিয়েছিলেন, নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সঙ্গে তার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। 

ঢাকা/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ