“আমি কখনো চাল কিনিনি, কারণ আমি তা বিনামূল্যে পাই”-এই মন্তব্য করে জনরোষের মুখে পড়েছেন জাপানের কৃষিমন্ত্রী তাকু এতো। শেষ পর্যন্ত পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন মন্ত্রী। বুধবার দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।

সম্প্রতি খাদ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জাপানে জনরোষ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনের আগে চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সংকট মোকাবেলায় ব্যর্থতা ভোটারদের ক্ষুব্ধ করেছে। এপ্রিলে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, এক বছর আগের তুলনায় এক বস্তা চালের জন্য প্রায় দ্বিগুণ মূল্য দিতে হচ্ছে। দাম কমানোর লক্ষ্যে সরকার চলতি বছরের শুরুতে জরুরি মজুদ থেকে প্রায় তিন লাখ টন চাল বাজারে ছেড়েছে। 

রবিবার একটি তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী তাকু এতো বলেছিলেন, “আমি কখনো নিজে চাল কিনিনি। কারণ আমার সমর্থকরা আমাকে এত বেশি দান করে যে আমি তা বিক্রি করতে পারি।”

মন্ত্রীর এই মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভোটাররা। তার পদত্যাগের দাবিও করা হয়।

বুধবার এতো তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, “চালের দামের সংকটময় সময়ে (কৃষি মন্ত্রণালয়ের) নেতৃত্বে থাকা আমার জন্য উপযুক্ত কিনা তা আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছি এবং আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, আমি উপযুক্ত নই। আবারো মন্ত্রী হিসেবে জনগণের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি যখন তারা ক্রমবর্ধমান চালের দাম নিয়ে কষ্ট করছে।”

পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে সাংবাদিকদের এতো বলেন, “এইমাত্র আমি প্রধানমন্ত্রী ইশিবার কাছে আমার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।”
 

ঢাকা/শাহেদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদত য গ মন ত র

এছাড়াও পড়ুন:

মামদানির উত্থান থেকে শিক্ষা নিচ্ছেন ইউরোপের বামপন্থীরা

নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জোহরান মামদানির উত্থান ইউরোপের বামপন্থী রাজনীতিকদের মধ্যে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। ফ্রান্স, জার্মানিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে আগামী বছর স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এর আগেই মঙ্গলবার ৪ নভেম্বর নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ইউরোপের নেতারা চোখ রাখছেন মামদানির ওপর।

মামদানির নির্বাচনী প্রচার দেখতে ইউরোপের বিভিন্ন দেশের দলীয় কৌশলবিদেরা আগেই আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে নিউইয়র্কে এসেছেন। তাঁদের লক্ষ্য, মামদানিকে কাছ থেকে দেখে তাঁর রাজনীতির কৌশল শেখা। কারণ, মামদানি একেবারে সাধারণ অবস্থান থেকে উঠে এসে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহরের নেতৃত্বের দৌড়ে শীর্ষে পৌঁছেছেন। ইউরোপের রাজনীতিকেরা শিখতে চান, মামদানির তৃণমূলভিত্তিক প্রচারণা নিউইয়র্কে যেমন সফল হয়েছে, সেটি তাঁদের অঞ্চলেও কার্যকর হবে কি না।

ইউরোপীয় পার্লামেন্টে বামপন্থীদের জোট দ্য লেফট গ্রুপের ফরাসি সহসভাপতি মানোঁ ওব্রি গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে মামদানির প্রচারে অংশ নেন। ওব্রি ও তাঁর দল ফ্রান্স আনবাউড মামদানিকে পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে দেখছেন। তাঁরা মামদানির মডেল অনুসরণ করে ফ্রান্সজুড়ে ২০২৬ সালের পৌরসভা নির্বাচনে বড় প্রভাব ফেলতে চান।

জার্মানির পুঁজিবাদবিরোধী দল দ্য লেফট নিউইয়র্কে চার কর্মকর্তাকে পাঠিয়েছে। তাঁরা মামদানির প্রচারকৌশলের প্রধান মরিস ক্যাটজসহ বিভিন্ন কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন। দলটির সংসদীয় কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক লিজা ফ্লাউম বলেন, মামদানির মতো কৌশল অনুসরণ করে অতীতে তাঁদের দল ভালো করেছে। জীবনযাত্রার ব্যয় কমানোর বিষয়টি তাঁদের কাছে বেশি গুরুত্ব পেয়েছিল। এর পাশাপাশি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে দরজায় দরজায় গিয়ে প্রচারের কৌশল নিয়েছিল তাঁদের দল। ফ্লাউম আশা করেন, বার্লিনে আগামী সেপ্টেম্বরের আইনসভা নির্বাচনে দ্য লেফট মামদানির বর্তমান প্রচারণাকে মডেল হিসেবে ব্যবহার করবে।

এদিকে মেয়র নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকা মামদানি বিদেশে তাঁর প্রচারকৌশল নিয়ে মাতামাতির বিষয়টিকে এখন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। এ প্রসঙ্গে মামদানি বলেন, আপাতত তাঁর মনোযোগ পুরোপুরি স্থানীয় রাজনীতিতে।

ফ্রান্স ও জার্মানির মতোই যুক্তরাজ্যের রাজনীতিকেরা মামদানির প্রচারকৌশল দেখে মুগ্ধ। মামদানির ছোট ছোট ভিডিওতে ব্যক্তিত্ব ও আকর্ষণকে কাজে লাগিয়ে জীবনযাত্রার খরচের বিষয়টি সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আবার তাঁকে একই সঙ্গে আপনজন হিসেবেও উপস্থাপন করা হয়েছে।

আরও পড়ুননিউইয়র্কে মেয়র নির্বাচন: সর্বশেষ চার জরিপেও এগিয়ে জোহরান মামদানি৭ ঘণ্টা আগে

ফ্রান্স আনবাউডের সংসদ সদস্য দানিয়েল ওবোনো বলেন, ‘মামদানির দলীয় নির্বাচনে জয়টাই একটা বড় রাজনৈতিক ঘটনা। শুধু তিনি কী নিয়ে লড়েছেন, তা–ই নয়, বরং কীভাবে লড়েছেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ। তাঁর যোগাযোগের কৌশল, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ব্যবহারসহ অনেক কিছুই আমাদের অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে।’

যুক্তরাজ্যের গ্রিন পার্টির নেতা মোথিন আলি বলেন, বামপন্থীদের এখন শেখা দরকার, কীভাবে মামদানির মতো করে সংক্ষিপ্ত অথচ প্রভাবশালী বার্তা পৌঁছে দিতে হয়। যুক্তরাজ্যের সাবেক লেবার নেতা এবং বর্তমানে ইয়োর পার্টির নেতৃত্বে থাকা জেরেমি করবিনও এক এক্স পোস্টে মামদানির প্রচারে সহযোগিতার কথা উল্লেখ করেছেন।

আরও পড়ুননিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে রেকর্ডসংখ্যক আগাম ভোট, তরুণেরা কেন আগাম ভোট দিচ্ছেন৯ ঘণ্টা আগে

সম্পর্কিত নিবন্ধ