‘আমি চাল কিনিনি’-মন্তব্যের জেরে পদত্যাগ করলেন জাপানের কৃষিমন্ত্রী
Published: 21st, May 2025 GMT
“আমি কখনো চাল কিনিনি, কারণ আমি তা বিনামূল্যে পাই”-এই মন্তব্য করে জনরোষের মুখে পড়েছেন জাপানের কৃষিমন্ত্রী তাকু এতো। শেষ পর্যন্ত পদত্যাগে বাধ্য হয়েছেন মন্ত্রী। বুধবার দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।
সম্প্রতি খাদ্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জাপানে জনরোষ দেখা দিয়েছে। নির্বাচনের আগে চালের দাম বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সংকট মোকাবেলায় ব্যর্থতা ভোটারদের ক্ষুব্ধ করেছে। এপ্রিলে প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, এক বছর আগের তুলনায় এক বস্তা চালের জন্য প্রায় দ্বিগুণ মূল্য দিতে হচ্ছে। দাম কমানোর লক্ষ্যে সরকার চলতি বছরের শুরুতে জরুরি মজুদ থেকে প্রায় তিন লাখ টন চাল বাজারে ছেড়েছে।
রবিবার একটি তহবিল সংগ্রহ অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দিতে গিয়ে কৃষিমন্ত্রী তাকু এতো বলেছিলেন, “আমি কখনো নিজে চাল কিনিনি। কারণ আমার সমর্থকরা আমাকে এত বেশি দান করে যে আমি তা বিক্রি করতে পারি।”
মন্ত্রীর এই মন্তব্যে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেন ভোটাররা। তার পদত্যাগের দাবিও করা হয়।
বুধবার এতো তার মন্তব্যের জন্য ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, “চালের দামের সংকটময় সময়ে (কৃষি মন্ত্রণালয়ের) নেতৃত্বে থাকা আমার জন্য উপযুক্ত কিনা তা আমি নিজেকে প্রশ্ন করেছি এবং আমি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছি যে, আমি উপযুক্ত নই। আবারো মন্ত্রী হিসেবে জনগণের কাছে আমি ক্ষমা চাইছি যখন তারা ক্রমবর্ধমান চালের দাম নিয়ে কষ্ট করছে।”
পদত্যাগ পত্র জমা দেওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বাইরে সাংবাদিকদের এতো বলেন, “এইমাত্র আমি প্রধানমন্ত্রী ইশিবার কাছে আমার পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদত য গ মন ত র
এছাড়াও পড়ুন:
চবিতে ৬ ছাত্রীর বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার, একজনের স্থায়ী বহিষ্কার বহাল
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আলোচিত ১০ ছাত্রীকে বহিষ্কারের ঘটনায় সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এনেছে কর্তৃপক্ষ। এদের মধ্যে ছয়জনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর তিন ছাত্রীর বহিষ্কারের মেয়াদ দুই বছর থেকে কমিয়ে ছয় মাস করা হয়েছে। বাকি এক ছাত্রীর স্থায়ী বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত বহাল থাকছে। তিন মাস পর সিদ্ধান্তে পরিবর্তন ও তিন শিক্ষার্থীর বহিষ্কারাদেশ বহাল রাখার কারণে সমালোচনা করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিকেল ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স, হেলথ অ্যান্ড ডিসিপ্লিন কমিটির এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে বিষয়টি সমকালকে নিশ্চিত করেন উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন। ছয় মাস বহিষ্কারাদেশ বহাল থাকা ছাত্রীদের দু’জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রিমিনোলজি অ্যান্ড পুলিশ সায়েন্স আর একজন মার্কেটিং বিভাগের ছাত্রী। আর স্থায়ী বহিষ্কারাদেশ বহাল থাকা ছাত্রী আইন বিভাগের।
এ বিষয়ে অধ্যাপক মো. কামাল উদ্দিন সমকালকে বলেন, বিজয় ২৪ হলের (পূর্ব নাম জননেত্রী শেখ হাসিনা হল) ঘটনায় যে ১০ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করা হয়েছিল, সে সিদ্ধান্তে পরিবর্তন এসেছে। শিক্ষককে শারীরিক লাঞ্ছনা করা এক ছাত্রীর স্থায়ী বহিষ্কারের আদেশ বহাল থাকছে। ছয়জনের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়েছে। বাকি তিনজনের বহিষ্কারাদেশ কমিয়ে ছয় মাস করা হয়েছে। এই বহিষ্কারের আদেশ ৫ ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হবে বলে জানান তিনি।
গত ৫ ফেব্রুয়ারি ছাত্রীদের আবাসিক বিজয় ২৪ হলের সামনে রাখা নৌকা আকৃতির বসার স্থান ভাঙচুর করতে যাওয়া কিছু শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিতণ্ডা হয় আবাসিক ছাত্রীদের। এ সময় সহকারী প্রক্টরকে শারীরিক লাঞ্ছনা এবং ও ধর্ম অবমাননার কারণে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ১২ শিক্ষার্থীকে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। এর মধ্যে ১১ জনই ছাত্রী। এর মধ্যে ১০ জন ছাত্রীকে ৫ ফেব্রুয়ারি রাতের ঘটনায় বহিষ্কার করা হয়েছিল। এই বহিষ্কারের ঘটনায় সারাদেশে বিভিন্ন পক্ষের সমালোচনার মুখে ওই ১০ শিক্ষার্থীকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়। স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া শিক্ষার্থীর সনদ বাতিলের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হয়। গত ২৩ ফেব্রুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সভায় এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পরে আজ সিদ্ধান্তে আবারও পরিবর্তন আনা হয়েছে।
এ ঘটনায় ছাত্রীদের অভিযোগ, তারা নৌকা ভাঙার বিপক্ষে ছিলেন না। বরং প্রশাসন যেন এটি ভাঙে, সে দাবি করেছিলেন। এ জন্য তারা আগেই প্রশাসনকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি জানিয়েছিলেন। তবে প্রশাসন সেটি ভাঙেনি। উল্টো মধ্যরাতে একদল শিক্ষার্থী সেটি ভাঙতে গিয়ে ছাত্রীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেন। বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ কথা বলেছে। এসব ঘটনায় হলের আবাসিক শিক্ষক ও প্রক্টরিয়াল বডিকে ফোন দিয়েও পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার প্রতিবাদে সেদিন রাতে উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে প্রতিবাদ জানাতে গেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ও ড. মোহাম্মদ কুরবান আলির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের বাকবিতণ্ডা হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে সহকারী প্রক্টর কোরবান আলীকে শারীরিক লাঞ্ছনা করতে দেখা যায় এক ছাত্রীকে। এ ছাড়া কয়েকটি ভিডিওতে প্রক্টরিয়াল বডির একাধিক সদস্যকে ছাত্রীদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতে দেখা গেছে।
এর মধ্যে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া কয়েকটি স্ক্রিনশটে দেখা যায়, ওই ছাত্রীদের বহিষ্কার করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই প্রক্টর উসকানিমূলক বার্তা দিয়েছেন কিছু শিক্ষার্থীকে। ছড়িয়ে পড়া এসব স্ক্রিনশটে ছিল সহকারী প্রক্টর কোরবান আলী ও নুরুল হামিদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীর কথোপকথন।
ফেসবুকের মেসেঞ্জার ও হোয়াটসঅ্যাপে পাঠানো বার্তায় দেখা যায়, এই দুই প্রক্টর ওই ১০ ছাত্রীকে বহিষ্কারের জন্য ‘প্রশাসনকে চাপ দিতে’ বলেন।