দ্রুত সময়ের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার ও বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব। বিচার না হলে রাজপথে থেকে বৃহত্তর কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২২ মে) বেলা পৌনে ১১টায় সাম্য হত্যার বিচার দাবিতে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। এসময় ‘বিচার বিচার বিচার চাই, সাম্য হত্যার বিচার চাই’, ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিজ জাস্টিস’, ‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে’ ,‘রক্তের বন্যায়, ভেসে যাবে অন্যায়’, ‘আমার ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেবো না’, ‘আমার বাড়ি কবরে, প্রশাসন কী করে’ এমন নানা স্লোগান দেন।

রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “সাম্য হত্যার সঠিক বিচার এবং মূল ঘাতকরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত ছাত্রদল রাজপথ ছেড়ে যাবে না। সাম্য হত্যার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তদন্ত করছে। তবে তাদের সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছে, তারা নিজেরাও দ্বিধান্বিত। সত্যিকার অর্থে সাম্য হত্যার ঘটনায় কত জন জড়িত ছিল, আজকের দিন পর্যন্ত তারা শনাক্ত করতে পেরেছে বলে মনে হয়নি৷”

তিনি বলেন, “মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর করা হয়েছে৷ ডিবি চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, এখানে অবশ্যই সরকারের দায় রয়েছে৷ তারা আজকের দিন পর্যন্ত এ বিষয়ে স্পষ্ট কোনো বক্তব্য দেয়নি। তারা সাম্য হত্যার ঘটনায় সহমর্মিতা দেখায়নি। এমনকি জানাজায় অংশগ্রহণ করার প্রয়োজন মনে করেনি। আমরা তাদের এ ধরনের সদিচ্ছা বা সহমর্হিতা জ্ঞাপন না করার কারণে ঘৃণা প্রকাশ করছি, ধিক্কার জানাচ্ছি।”

ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, “আমরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, সাম্য হত্যার সঠিক বিচার না পেলে এবং মূল ঘাতকদের গ্রেপ্তার করা না হলে রাজপথ ছেড়ে যাবো না। আমরা আরো বৃহত্তর কর্মসূচিতে যাবো। আমরা আজকে তাদের আবার আহ্বান জানাচ্ছি, দ্রুত সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এই বিষয়ের সুরাহা করতে হবে।”

তিনি আরো বলেন, “ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যার বিচার সুনিশ্চিত হচ্ছে না, তাহলে রাষ্ট্রের নাগরিক যারা রয়েছে তাদের পরিণতি কী হতে পারে? সামনে আরো অনেক সংকট রয়েছে৷ অন্তর্বর্তী সরকার নয় মাস সময় পেয়েছে। এই নয় মাসে তারা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দৃশ্যমান উন্নতি এবং অন্যান্য সেক্টরে দৃশ্যমান সংস্কার আমাদের উপহার দিতে পারেনি। আমরা সেদিকে এখনি যাচ্ছি না। আমরা আমাদের ভাই হত্যার বিচার চাচ্ছি।”

গত ১৩ মে রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় শাহরিয়ার আলম সাম্যকে ছুরিকাঘাত করে একদল দুর্বৃত্ত। রক্তাক্ত অবস্থায় রাত ১২টার দিকে সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক সাম্যকে মৃত ঘোষণা করেন।

সাম্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ও এফ রহমান হল ছাত্রদলের সাহিত্য ও প্রকাশনা সম্পাদক ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হলের ২২২ নম্বর কক্ষে থাকতেন তিনি।

গত ১৪ মে সকালে সাম্যের বড় ভাই শরীফুল ইসলাম শাহবাগ থানায় ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর তিন জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১৫ মে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। আদালত ছয় দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য র ব চ র ছ ত রদল র র জপথ

এছাড়াও পড়ুন:

ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন গঠনের আহ্বান ডাকসু ভিপির

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ‘ফ্রম অ্যাপার্টহেইড টু ডেমোক্রেসি: সাউথ আফ্রিকান ইনসাইটস ফর বাংলাদেশ’ শীর্ষক বিশেষ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

এতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে স্থানীয় নেতৃবৃন্দের মধ্যে অভিজ্ঞতা বিনিময় ও ভবিষ্যৎ কর্মনীতি নিয়ে আলোচনা হয়। এ সময় ডাকসু ভিপি সাদিক কায়েম বাংলাদেশে একটি ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন গঠনের আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

‎জাতীয় পলিসি হ্যাকাথনে চ্যাম্পিয়ন বেরোবি শিক্ষার্থীরা

জাপানের ইয়ামানাশি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছেন পাবিপ্রবির ৮ শিক্ষক-শিক্ষার্থী

বুধবার (১৫ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী অডিটোরিয়ামে এ আলোচনার আয়োজন করা হয়।

সেমিনারে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক সংসদ সদস্য ও আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের আলোচক মোহাম্মদ ভাবা বলেন, “স্বপ্ন পূরণ করার জন্য গঠনমূলক রাজনীতি গড়ে তুলতে হবে — ভাঙনমূলক নয়।” তিনি অতীত সংগ্রামের শিক্ষা থেকে শেখা এবং সামাজিক ঐক্য বজায় রাখার ওপর জোর দিয়েছেন।

ডাকসুর ভিপি আবু সাদিক কায়েম বলেন, “বাংলাদেশে প্রয়োজন ‘ট্রুথ অ্যান্ড রিকনসিলিয়েশন’ নয়, বরং ‘ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন’, যেখানে ভুক্তভোগীদের কণ্ঠস্বর শোনা হবে এবং সত্যের মাধ্যমে ভিক্টিমরা পুনর্বাসনের পথে এগোবে।” 

তিনি বলেন, “ডাকসু ভুক্তভোগী ও তাদের পরিবারের পাশে দাঁড়িয়ে এমন একটি নিরাপদ প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলার অঙ্গীকার করেছে, যেখানে অভিজ্ঞতা মুক্তভাবে শেয়ার করে সত্য, দায়বদ্ধতা ও ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা হবে।” 

দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল পার্টি সরকারের প্রধান আলোচক রোলফ মেয়ার বলেন, “সংবিধানের মাধ্যমেই আইনের শাসন নিশ্চিত করতে হবে।” তিনি সংবিধান ও প্রতিষ্ঠানগুলোর শক্তিশালীকরণকে একটি স্থিতিশীল গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মূল ভিত্তি হিসেবে উপস্থাপন করেছেন।

জাগরণ ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান শরীফ বান্না বলেন, “ন্যায়বিচার ও সহমর্মিতার ভিত্তিতেই দেশকে নতুনভাবে সাজাতে হবে। সহমর্মিতার মাধ্যমে আশার সৃষ্টি হয়, সেই আশাই ছিল স্বৈরাচারকে প্রত্যাখ্যান করানোর মূল শক্তি। সেই একই আশা নিয়ে দেশ পুনর্গঠন করা প্রয়োজন।”

ঢাবির উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. সাইমা হক বিদিশা বলেন, “পারস্পরিক আলোচনা ও জ্ঞান-বিনিময়ের মাধ্যমে দুই দেশই উপকৃত হতে পারবে।”

অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা সমসাময়িক রাজনৈতিক সংকট থেকে শিক্ষা নিয়ে সংবিধানিক কর্তৃত্ব, সমাজিক সংহতি ও আরোগ্যপূর্ণ পুনর্গঠনের ওপর জোর দেন এবং সুস্পষ্টভাবে নির্দিষ্ট নীতি রচনার মাধ্যমে এগিয়ে চলার আহ্বান জানান।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ট্রুথ অ্যান্ড হিলিং কমিশন গঠনের আহ্বান ডাকসু ভিপির