বরগুনা জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও খাদ্য উপমন্ত্রী ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুকে বরগুনার অতিরিক্ত মুখ্য হাকিম আদালতে হাজির করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর সোয়া ২টার দিকে তাকে আদালতে তোলা হয়। এ সময় শম্ভুর আইনজীবীরা জামিন আবেদন করলে বিচারক মো. মনিরুজ্জামান শুনানি শেষে তা নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন। 

আদালত সূত্রে জানা গেছে, আজ দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে শম্ভুকে বরগুনা কারাগারে আনা হয়। সেখান থেকে আদালতে তোলার সময় বিএনপিপন্থী আইনজীবীরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন। এ সময় আদালত চত্বরের সামনে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা শম্ভুকে উদ্দেশ্য করে ‘ভোট চোর, ভোট চোর, ভুয়া, ভুয়া’ প্রভৃতি শ্লোগান দিতে থাকে। একপর্যায়ে আদালত থেকে নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়িতে ডিম নিক্ষেপ করে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। পরিস্থিতি বিবেচনায় আদালত চত্বরে নৌ-বাহিনীর সদস্যসহ ব্যাপক আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।

প্রসঙ্গত, বরগুনায় ২০২৩ সালের ১৭ মার্চ জেলা বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর, সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ এবং হাতবোমা ফাটিয়ে নৈরাজ্য সৃষ্টি করার অভিযোগে গত ৩০ এপ্রিল বরগুনা সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন বরগুনা জেলা বিএনপির প্রয়াত সাধারণ সম্পাদক এসএম নজরুল ইসলামের ছেলে এসএম নঈমুল ইসলাম। ওই মামলায় শম্ভুকে এক নম্বর আসামি করে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের ১৫৮ জনকে আসামি করা হয়।

এর আগে শেখ হাসিনার পতনের পর দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়ে ছিলেন পাঁচবারের সংসদ সদস্য শম্ভু। পরে ২০২৪ সালের ১২ নভেম্বর রাজধানীর উত্তরা থেকে মহানগর গোয়েন্দা শাখার একটি টিম তাকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাকে নিউমার্কেট থানায় আন্দোলন চলাকালে নিহত ব্যবসায়ী ওয়াদুদ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এ ছাড়াও আশুলিয়া থানার অন্য একটি মামলায়ও তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।

বরগুনার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো.

নুরুল আমিন বলেন, সাধারণ মানুষ ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে। আদালতে তাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কড়া নিরাপত্তায় হাজির করতে হয়েছে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে এবং তিনি একজন অপরাধী। তাই আদালতে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করার আবেদন করেছি এবং আদালত নামঞ্জুর করেছেন।

তিনি আরও বলেন, শম্ভুর বিরুদ্ধে আরও কোনো অপরাধে অভিযোগ আছে কিনা সেটাও আমরা রাষ্ট্রকে জানানোর চেষ্টা করবো।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ ন ত জ র কর সদস য ব এনপ বরগ ন

এছাড়াও পড়ুন:

লক্ষ্মীপুরে আইনজীবী-কর্মচারী হাতাহাতির ঘটনায় মামলা, পরোয়ানা জারি

লক্ষ্মীপুরের আদালতে আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনায় মামলা হয়েছে। আহত সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর আহত স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান দুই আইনজীবীকে আসামি করে মামলাটি করেছেন।  

রবিবার (১৫ জুন) সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের (সদর-আমলি আদালত) বিচারক আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমানের আদালতে  মামলাটি হয়। বিচারক মামলাটি আমলে নিয়ে অভিযুক্ত আইনজীবী আশিকুর রহমান ও মিরাজ পলোয়ানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন। 

সোমবার (১৬ জুন) সকালে আদালত পরিদর্শক মো. আবদুল জলিল মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। 

আরো পড়ুন:

রাজবাড়ী‌তে ২ শিক্ষার্থীকে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার ১

দৃষ্টিহীন বৃদ্ধকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২

জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. রফিক উল্যাহ আইনজীবীদের বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “একজন আইনজীবীর বাসার গেট চুরির মামলায় আসামিদের জামিন দেন বিচারক। আসামিদের রিমান্ডের আবেদন ও জামিনের বিরোধিতা করলেও তা আমলে নেননি তিনি। ফলে ন্যায়বিচার পাননি আইনজীবীরা। বিষয়টি জেলা জজসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি এবং ওই বিচারকের অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।” 

তিনি বলেন, “রবিবার আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে শুধু এজলাসে গিয়ে, ওই আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দেই। কোনো হট্টগোল বা হামলা হয়নি।”

রায়পুর প্রিন্সিপাল কাজী ফারুকী স্কুল এন্ড কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক আহম্মেদ কাউসার উদ্দিন জামানের (৩৫) বিরুদ্ধে গত ৬ জুন সদর থানায় চুরির মামলা দায়ের করেন তারই প্রতিবেশী জেলা জজ আদালতের আইনজীবী আবু তৈয়ব। মামলায় আরো দুইজনকে আসামি করা হয়। আসামি কাউসার ও রুবেল গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে ছিলেন। 

গত ১০ জুন সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এর বিচারক এম সাইফুল ইসলাম তাদের জামিন মঞ্জুর করেন। এ নিয়ে তাৎক্ষণিক ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান আইনজীবী সমিতির নেতারা ও আইনজীবীরা।

আদালত সূত্র জানায়, ৯ জুন আসামিদের জামিন প্রার্থনা করা হয়। এতে আসামিপক্ষ উল্লেখ করেন, মামলার বাদী আইনজীবী হওয়ায় আদালতে তাদের পক্ষে কোনো আইনজীবী জামিন শুনানিতে অংশ নিতে ইচ্ছুক নন। আসামিরা তাদের পক্ষে আইনজীবী না পেয়ে জামিন শুনানির জন্য লক্ষ্মীপুর লিগ্যাল এইড অফিসে আইনি সহায়তা চান। সেখান থেকে দুইজন আইনজীবীকে শুনানি করতে বলা হলেও তারা হেনস্তার ভয়ে জামিন শুনানিতে অংশ নেননি। 

অন্যদিকে, বাদীপক্ষের আইনজীবী আসামিদের বিরুদ্ধে জামিনের বিরোধিতা করেন। পরদিন ১০ জুন নথি প্রাপ্তি সাপেক্ষে জামিন শুনানির জন্য রাখা হয় এবং তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের পাঁচ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। বিষয়টি নিয়ে আদালতের পর্যালোচনায় উঠে আসে, ঈদুল আজহার ছুটির কারণে আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রম বন্ধ ছিল। ৬ জুন আসামিদের গ্রেপ্তারের পর থেকে চার দিন তারা জামিন শুনানির সুযোগ পাননি।

বাদী একজন আইনজীবী হওয়ায় আসামিরা পক্ষে কোনো আইনজীবীও পাননি। ১৪ জুন পর্যন্ত আদালত বন্ধ থাকায় এবং মামলায় জামিন অযোগ্য কোনো গুরুতর অভিযোগ না থাকায় উভয় পক্ষের শুনানি শেষে দরখাস্ত নিষ্পত্তি করে আদালত। 

বিচারক চার দিনের হাজতবাস ও ঈদ বিবেচনায় কাউসার ও রুবেলকে ১০০ টাকার মুচলেকায় একজন গণ্যমান্য ব্যক্তির জিম্মায় জামিন দেন।

এ নিয়ে আইনজীবীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়। রবিবার (১৫ জুন) ঈদের ছুটি শেষে আদালতের কার্যক্রম শুরু হলে আইনজীবী সমিতি বিচারক এম সাইফুল ইসলামের আদালত বর্জনের সিদ্ধান্ত নেয়। সকালেই সাত-আটজন আইনজীবী বিচারকের কক্ষে ঢুকে বর্জনের ঘোষণা দেন। এ সময় হট্টগোল ও উত্তেজনার সৃষ্টি হলে বিচারক আদালত কর্মচারীদের দরজা বন্ধ করে দিতে বলেন। এসময় আইনজীবী ও কর্মচারীদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। এজলাসের স্টেনোগ্রাফার আশরাফুজ্জামান আহত হন এবং বিচারক বিচারকার্য শেষ না করেই এজলাস ত্যাগ করেন।

ঢাকা/জাহাঙ্গীর/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মাদ্রাসা ছাত্র হত্যার ঘটনায় দুই থানায় পৃথক মামলা
  • মাদ্রাসা ছাত্র হত্যার ঘটনায় দুই থানায় পৃথক মামলা, বাদী চিনেনা আসামিদের
  • আ.লীগ নেতা সাইফুলের অবৈধ সম্পদের অনুসন্ধান শুরু
  • কক্সবাজারের সাবেক ডিসিসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন ১ জুলাই
  • মান্নারা চোপড়ার বাবা মারা গেছেন
  • নির্দোষ হ‌লে তিনি মন্ত্রিত্ব কেন ছাড়লেন, টিউলিপ প্রস‌ঙ্গে দুদক
  • ঝালকাঠি জেলা আইনজীবী সমিতির ১৬ সদস্যকে অব্যাহতি
  • এক যুগ আগের ভাঙচুরের মামলা থেকে খালাস পেলেন শহীদ উদ্দিন চৌধুরীসহ বিএনপির ৯ নেতা-কর্মী
  • লক্ষ্মীপুরে আইনজীবী-কর্মচারী হাতাহাতির ঘটনায় মামলা, পরোয়ানা জারি
  • বিস্ফোরক মামলায় চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ