ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, তাঁর দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলো (অভিন্ন নদ-নদী) থেকে পাকিস্তান আর কোনো পানি পাবে না।

ভারত–নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল বন্দুকধারীদের হামলার জেরে অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন নিয়ে এ দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলার মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবার মোদি এ কথা বলেন।

পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী ভারতের উত্তর-পশ্চিমের রাজ্য রাজস্থানের একটি জনসভায় মোদি বলেন, ‘প্রতিটি সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানকে চড়া মূল্য দিতে হবে.

..পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকেও মূল্য দিতে হবে, পাকিস্তানের অর্থনীতিকেও মূল্য দিতে হবে।’

পাকিস্তানের প্রধান আইন কর্মকর্তা রয়টার্সকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জানান, ইসলামাবাদ প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে পানিবণ্টন নিয়ে আলোচনায় আগ্রহী। তবে ভারতকে অবশ্যই কয়েক দশকের পুরোনো পানিবণ্টন চুক্তি মেনে চলতে হবে।

ভারত পাকিস্তানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিচুক্তি গত মাসে স্থগিত করার ঘোষণা দেয়। পেহেলগামে হামলার জেরে দেশটি এ পদক্ষেপ নিয়েছে। এ হামলার জন্য নয়াদিল্লি ইসলামাবাদকে দায়ী করেছে। যদিও পাকিস্তান এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

পাকিস্তানে অভিন্ন নদ-নদীর পানিপ্রবাহ বন্ধ করে দেওয়ার যেকোনো পদক্ষেপ ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। ১৯৬০ সালে বিশ্বব্যাংকের মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত সিন্ধু পানিচুক্তি পাকিস্তানের কৃষি খাতে প্রয়োজনীয় ৮০ শতাংশ পানির নিশ্চয়তা দেয়। আর এসব পানি আসে ভারত থেকে প্রবাহিত তিনটি নদী থেকে।

পেহেলগাম হামলার জেরে পারমাণবিক অস্ত্রধারী প্রতিবেশী দুটি গত তিন দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ সামরিক সংঘাতে জড়িয়েছিল। ১০ মে তারা একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়।

পাকিস্তানের অ্যাটর্নি জেনারেল মনসুর উসমান আওয়ান রয়টার্সকে বলেন, ‘পাকিস্তান আলোচনায় বসতে প্রস্তুত। ভারত যেকোনো উদ্বেগের বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইলে আমরা আলোচনা করতে পারি।’

মনসুর উসমান জানান, সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ভারত পাকিস্তানকে চিঠি দিয়েছে। সেখানে জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও পরিচ্ছন্ন জ্বালানির প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে সিন্ধু পানিচুক্তি সংশোধনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। তবে তিনি বলেন, আলোচনা চুক্তির শর্তের আওতার মধ্যেই হতে হবে।

আরও পড়ুনভারত কি পাকিস্তানে পানির প্রবাহ আটকে দিতে পারবে২৫ এপ্রিল ২০২৫

মনসুর উসমান আরও বলেন, ইসলামাবাদ মনে করে, চুক্তিটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক। কোনো পক্ষ একতরফাভাবে এটি স্থগিত করতে পারে না। তিনি বলেন, ‘পাকিস্তানের দৃষ্টিতে এ চুক্তি এখনো কার্যকর ও সক্রিয় আছে। জলবিদ্যুৎ প্রকল্প নির্মাণের ক্ষেত্রে ভারত যা-ই করুক, সেটা তাদের নিজেদের ঝুঁকিতে ও খরচে করতে হবে।’

দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি মোটামুটি কার্যকর রয়েছে। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেছেন, বর্তমানে গোলাগুলির কোনো ঘটনা ঘটছে না। সে অনুযায়ী কিছু সেনা পুনর্বিন্যাসও করা হয়েছে।

আরও পড়ুনভারত–পাকিস্তান যুদ্ধবিরতি হলেও সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত থাকছে১০ মে ২০২৫আরও পড়ুনপাকিস্তানে পানিপ্রবাহ বন্ধ করতে এবার কী প্রকল্পের পরিকল্পনা করছে ভারত১৭ মে ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রব হ

এছাড়াও পড়ুন:

বন্দরে ব্যবসায়ীর বাড়ি-ঘর ভাংচুর, লুটপাটের ঘটনায় বিক্ষোভ

বন্দরে আওয়ামীলীগ আখ্যা দিয়ে ব্যবসায়ীর বাড়ি ঘর ভাংচুর ও লুটপাট করেছে শাহিদা ও তার সন্ত্রাসী বাহিনী। ভুক্তভোগী রশিদ থানায় গিয়ে করতে পারেননি মামলা।

এ ঘটনায় ২৩মে শুক্রবার সকালে বন্দরের পূর্ব কল্যান্দী খালপাড় এলাকায় এলাকার শত শত নারী-পুরুষ জড়ো হয়ে হামলাকারী শাহিদা-শাহাদাৎ বাহিনীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের প্রতি জোরদাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছে।

এ সময় তারা শাহিদা-শাহাদাৎ বাহিনীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভে ফেটে পরে। গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দা মকবুল হোসেন বলেন, আব্দুর রশীদ একজন পাগল ফকির মানুষ। আমাদের জানা মতে সে একজন গ্লোব ব্যবসায়ী। এলাকায় কোনদিন তাকে কেউ কোন রাজনৈতিক মিটিং মিছিলে দেখেছে কি না আমার জানা নেই।

অপর বাসিন্দা মোঃ সেলিম মিয়া জানান, তার বাড়ি যারা ভাংচুর এবং লুটপাট করেছে তারাই আওয়ামীলীগের দোসর। আওয়ামীলীগ সরকারের শাসনামলে তারা স্বামী-স্ত্রী এলাকায় অনেক রাজত্ব করেছে এখন আবার ভোল পাল্টিয়ে তারা নিজেদেরকে বিএনপি সাজানোর চেষ্টা করে রশীদ মিয়ার পরিবারের উপর এইসব লুটতরাজ চালিয়েছে।  জিয়াবর মিয়া বলেন,আব্দুর রশীদের কোন দল নেই।

ছোট থেকে তাকে কোন দলের পক্ষে কাজ করা দূরের কথা কোন মিটিং মিছিলেও যেতে দেখিনি কিংবা কোন পার্টির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সখ্যতাও দেখিনি। এগুলো শাহিদা-শাহাদাৎ চক্রান্ত করে নিরীহ রশীদ মিয়াকে আওয়ামীলীগের সমর্থকের ট্যাগ দিয়ে তার বাড়ি-ঘরের মালামাল লুটপাট করেছে।

একই এলাকার বৃদ্ধা দেলোয়ারা বেগম বলেন,আব্দুর রশীদ মিয়াকে আমরা ৩০/৪০ বছর ধরে চিনি এবং জানি। তার বিরুদ্ধে কোনদিন কোন দলের অভিযোগ পাইনি। সে ব্যক্তিগতভাবে কোন দল করেন না। আমরা কোন দিন দেখিনি।

যারাই তার বিরুদ্ধে এসব কথা বলছে তারা রশীদ মিয়ার ক্ষতিসাধণের জন্য মিথ্যা ট্যাগ দিচ্ছে। বরং শাহিদা আর শাহাদাৎ তারা স্বামী স্ত্রীই বিতর্কিত। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত। জানা গেছে, শাহিদার সাথে রশিদের জমি জমা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত মামলা মোকাদ্দমা চলছিল।

৫ আগস্টের পরে রশিদ আওয়ামীলীগ করে বলে শাহিদা থানায় গিয়ে অপপ্রচার করেন এবং ফায়দা লুটতে থাকেন।

রশিদের দাবি তদন্ত না করে আমার মামলা নিচ্ছে না ওসি। এলাকাবাসী আরো জানান আমরা রশিদকে একজন ব্যবসায়ী হিসেবে চিনি কোথাও তার কোন ব্যানার ফেস্টুন সমাবেশ কোন কিছুই দেখিনি আট বছর মামলা চলমান থাকলেও আওয়ামীলীগের কোন ছিটেফোঁটাও ছিল না ব্যবসায়ী রশিদের গায়ে এলাকাবাসীর আবেদন অতি দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ