প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন কেন্দ্র হালদা নদীতে মা মাছের আনাগোনা বাড়লেও বজ্রসহ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় সেগুলো ডিম ছাড়েনি। গত ৯ থেকে ১৫ মে পূর্ণিমার জো গেছে। গতকাল শুক্রবার থেকে ২৯ মে পর্যন্ত অমাবস্যার জো থাকছে। এর পর জুন মাসেও দুটি জো থাকবে। এগুলো ডিম ছাড়ার সময় বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।
হালদা রিভার্স রিসার্চ ল্যাবরেটরির প্রধান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মনজুরুল কিবরিয়া বলেন, গত ১৫ এপ্রিল থেকে হালকা বজ্রপাতসহ বৃষ্টি হচ্ছে। পরপর কয়দিনের বৃষ্টিপাতে আবহাওয়া কিছুটা অনুকূলে। হালদা নদীতে মাছের ডিম ছাড়ার জন্য এই পরিবেশ খুবই উপযোগী। ইতোমধ্যে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, এতে নদীতে ঢল নামেনি। মাছের ডিম ছাড়ার জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির জন্য নদীর উজানে পর্যাপ্ত বৃষ্টির প্রয়োজন। এতে উজান থেকে ঢল নামে। এ সময় নদীর পানি ঘোলাটে ও শীতল হয়ে ওঠে। এটি মাছের ডিম ছাড়ার উপযোগী।
এদিকে এপ্রিলের মাঝামাঝি থেকে বারবার বৃষ্টির আলামত দেখে ডিম আহরণকারীদের মধ্যে কিছুটা ব্যস্ততা দেখা দেয়। তারা নৌকা ও ডিম সংগ্রহের সরঞ্জাম নিয়ে প্রস্তুতি গ্রহণ শুরু করেন। পর্যাপ্ত বজ্রসহ বৃষ্টির অভাবে গত মাসের দুই 
জোতে মাছ ডিম ছাড়েনি। চলতি মাসের একটি এবং জুন মাসের দুটি উপযোগী সময়ই ডিম সংগ্রহকারীদের ভরসা। 
এ মাসের চলমান জোতে ডিম ছাড়ার ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন ডিম সংগ্রহকারীরা। তারা ডিম আহরণের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করেছেন। ডিম সংগ্রহ করে রেণু ফোটানোর জন্য সরকারি হ্যাচারিগুলোও ইতোমধ্যে উপযোগী করে তোলা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। হালদা নদীর দুই পাড়ে ডিম থেকে রেণু পোনা ফোটানোর জন্য সরকারিভাবে স্থাপিত হ্যাচারিগুলোর উন্নয়ন ও সংস্কার দ্রুত করা হয়েছে।
বিভিন্ন নদী, খাল ও ছড়া থেকে হালদা  নদীতে মাছের আগমন অবাধ ও নিরাপদ করতে জেলা প্রশাসন, মৎস্য বিভাগ ও নৌ পুলিশ সার্বক্ষণিক নদী পাহারা ও নদীতে অভিযান জোরদার করছে। মাছ চুরি প্রতিরোধ করতে নদীর পাড়ে স্থাপন করা হয়েছে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন সিসি ক্যামেরা। এই ক্যামেরার মাধ্যমে উপজেলা, জেলা এমনকি মন্ত্রণালয় থেকে নদী তদারকি করা হচ্ছে। নদীতে মা মাছের ডিম ছাড়ার সময় যত ঘনিয়ে আসছে, নৌ পুলিশের টহল ও প্রশাসনের তদারকি তত জোরদার করা হচ্ছে।
গড়দুয়ারা এলাকার ডিম আহরণকারী কামাল সওদাগর ও মাদার্শা এলাকার আশু বড়ুয়া জানান, নদী থেকে ডিম আহরণের প্রস্তুতি তাদের রয়েছে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, এক শ্রেণির পোনা ব্যবসায়ী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। তারা গত বছরের রেণু বলে চাষের পোনা বিক্রি শুরু করেছে। তাদের কারণে হালদা নদী থেকে আহরিত ডিমের রেণু পোনার দীর্ঘদিনের সুনাম ক্ষুণ্ন হচ্ছে।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা আইডিএফ নদীর মাছ শিকার রোধ করতে দুই পাড়ে কিছু স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করেছে। নদী পাহারা নিশ্চিত করতে এই সংস্থার পক্ষ থেকে স্বেচ্ছাসেবকদের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হচ্ছে। তাছাড়া মাছ শিকারিদের আটক করতে নদীতে সংস্থার পক্ষ থেকে সোলারচালিত বোট দিয়ে প্রশাসনকে সহযোগিতা করা হচ্ছে। মাছের অবাধ বিচরণ ও মজুত বৃদ্ধি, জীববৈচিত্র্য ও ডলফিন রক্ষা করতে সার্বক্ষণিকভাবে নদীর দুই পাড়ের জনপ্রতিনিধি, গ্রাম পুলিশ, আনসার ভিডিপি কাজ করছে। আশা করা হচ্ছে, এবার পরিবেশ অনুকূলে থাকলে আশানুরূপ ডিম পাওয়া যাবে। 
ফটিকছড়ি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আজিজুল ইসলাম জানান ১ থেকে ২২ মে পর্যন্ত  হালদা নদীতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ২ হাজার ৩০০ মিটার চরঘেরা জাল, ৩৫৭টি বড়শি জব্দ করে ধ্বংস করা হয়েছে। মা মাছ রক্ষায় অভিযান অব্যাহত থাকবে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র জন য উপয গ

এছাড়াও পড়ুন:

রাজকীয় ভোজে ট্রাম্প–মেলানিয়াকে কী কী খাওয়ালেন রাজা চার্লস

জমকালো সাজে সেজেছে যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল। উপলক্ষটাও অনন্য, রাজকীয়। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সস্ত্রীক যুক্তরাজ্য সফর উপলক্ষে এখানে রাজকীয় নৈশ্যভোজ আয়োজন করেন রাজা তৃতীয় চার্লস ও রানি ক্যামিলা।

বুধবার রাতের রাজকীয় এ আয়োজনে কূটনীতি, খাবার, ঐতিহ্য, সংগীত আর আভিজাত্য একসুতোয় বাঁধা পড়েছিল। ট্রাম্প–মেলানিয়াসহ রাজার অতিথি হয়েছিলেন বিশ্বের ১৬০ জন গণমান্য ব্যক্তি।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের সম্মানে রাজা তৃতীয় চার্লসের আয়োজন করা রাজকীয় ভোজের টেবিল। যুক্তরাজ্যের উইন্ডসর ক্যাসলের সেন্ট জর্জেস হল, ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ