কিয়েভে রাতভর নতুন করে রুশ ড্রোন হামলা, নিহত ২
Published: 10th, July 2025 GMT
ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে আবারও রাতভর ব্যাপক ড্রোন হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ইউক্রেনের স্থানীয় কর্মকর্তারা এ তথ্য জানিয়েছেন। এতে কমপক্ষে ২ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ হামলায় শহরের বিভিন্ন স্থানে আগুন জ্বলছে।
কিয়েভের স্থানীয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শহরের কেন্দ্রীয় শেভচেনকিভস্কি জেলায় একটি আবাসিক ভবনের ছাদে ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ পড়েছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিওতে রাতের আকাশে বিস্ফোরণের চিত্র দেখা গেছে। তবে বিবিসি ছবিগুলোর সত্যতা যাচাই করেনি এখনো। তবে সেসব ছবিতে দেখা গেছে, বিমান প্রতিরক্ষা ইউনিটগুলো হামলা প্রতিহত করার চেষ্টা করছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনী ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছে।
গত মঙ্গলবার রাতে ইউক্রেন জানিয়েছে, এটি ছিল রাশিয়ার সবচেয়ে বড় আকাশপথে হামলা-৭২৮টি ড্রোন ও ১৩টি ক্রুজ বা ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র একাধিক ধাপে দেশের বিভিন্ন শহরে আঘাত হানে।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে কিয়েভের সামরিক প্রশাসন জানায়, শহরের ছয়টি জেলায় রাশিয়ার ড্রোন হামলা হয়েছে।
টেলিগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে প্রশাসনের প্রধান তিমুর তকাচেঙ্কো বলেন, আবাসিক ভবন, যানবাহন, গুদামঘর, অফিস ও অনাবাসিক ভবনে আগুন লেগেছে।
তিমুর তকাচেঙ্কো পরে বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনকভাবে আমাদের দুজন মারা গেছে, এই মানুষগুলোকে রুশরা হত্যা করেছে। এটি একটি ভয়াবহ ক্ষতি।’
কিয়েভের পডিলস্কি জেলায় একটি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র ‘প্রায় সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গেছে’ বলে জানিয়েছেন মেয়র ভিতালি ক্লিৎসকো।
শহরের বাসিন্দাদের এয়ার রেইড সাইরেন বন্ধ না হওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া তাঁদের বাড়িতে ফিরে জানালা বন্ধ রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে, কারণ কিয়েভে ‘অনেক ধোঁয়া’ রয়েছে।
ইউক্রেনের বিমান বাহিনী জানিয়েছে, একাধিক অঞ্চলে রাশিয়ার ড্রোন হামলার হুমকি রয়েছে। তবে কিয়েভের বাইরের কোনো জায়গায় হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কি না, তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইসিকে নিশানা করে ‘অ্যাটম বোমা’ ফাটালেন রাহুল গান্ধী, এখনো বাকি ‘হাইড্রোজেন বোমা’
ভারতের নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে ভোটচুরির অভিযোগ এনে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেছিলেন, এটা ‘অ্যাটম বোমা’। তবে আরও ভয়ংকর তথ্য তিনি পরে আনবেন, যা ‘হাইড্রোজেন বোমার সমতুল্য’।
আজ বৃহস্পতিবার নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে আবার বিস্ফোরক অভিযোগ এনে রাহুল বলেন, নির্বাচন কমিশনের মদদে কিছু লোক, সংস্থা ও কল সেন্টার সংগঠিতভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে বেছে বেছে কংগ্রেস, দলিত, আদিবাসী ভোটারদের নাম বাদ দিচ্ছে।
আজ সংবাদ সম্মেলন করে রাহুল বলেন, নির্দিষ্ট সফটওয়্যারের মাধ্যমে নকল আবেদন করে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে।
‘অ্যাটম বোমা’ ফাটানোর দিন রাহুল কর্ণাটকের মহাদেবপুরা বিধানসভা কেন্দ্রের ‘ভোট চুরির’ নমুনা পেশ করেছিলেন। আজ তিনি উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেন কর্ণাটকেরই আলন্দ কেন্দ্রকে।
রাহুলের অভিযোগ, নকল আবেদনের মাধ্যমে ওই কেন্দ্রের ৬ হাজার ১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে। যেসব কেন্দ্রে কংগ্রেস শক্তিশালী, বেছে বেছে সেসব কেন্দ্রকেই নিশানা করা হয়েছে। ভুয়া ভোটারের নাম তোলার পাশাপাশি বৈধ ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা সংগঠিতভাবে করা হচ্ছে। কর্ণাটক পুলিশ সেই বিষয়ে তথ্য জানতে চাইলেও নির্বাচন কমিশন কোনো তথ্য দিচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগ, যাঁদের নামে আবেদন জানানো হচ্ছে এবং যাঁদের নাম মোছার আরজি জানানো হচ্ছে, তাঁদের কেউ–ই তা জানতে পারছেন না। সংবাদ সম্মেলনে এই ধরনের কিছু মানুষকে রাহুল হাজিরও করান।
কিছু নম্বরও দাখিল করে রাহুল বলেন, এসব নম্বর থেকে ভোটারদের নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হয়। তাঁর প্রশ্ন, ওই নম্বরগুলোয় ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড বা ‘ওটিপি’ কীভাবে গেল?
কংগ্রেস নেতা বলেন, নির্দিষ্ট কিছু ঠিকানা থেকে নির্দিষ্ট ‘আইপি’ অ্যাড্রেস ব্যবহার করে নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানানো হচ্ছে। অভিযোগ তদন্ত করে দেখতে কর্ণাটক পুলিশের গোয়েন্দারা ইসির কাছে কিছু তথ্য চেয়েছিলেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) জ্ঞানেশ কুমার কোনো তথ্যই দেননি। এতেই বোঝা যাচ্ছে, ইসি ভোটচোরদের আড়াল করছে।
রাহুল বলেন, কর্ণাটক সিআইডি ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া বিষয়ে তথ্য জানতে চেয়ে ইসিকে ১৮ বার চিঠি লিখেছে। অথচ একটি চিঠিরও জবাব ইসি দেয়নি। ইসিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাহুল বলেন, কমিশন স্বচ্ছ হলে এক সপ্তাহের মধ্যে কর্ণাটক সিআইডিকে যাবতীয় তথ্য দিয়ে সাহায্য করুক।
রাহুল মহারাষ্ট্রের রাজুরা বিধানসভা আসনের ভোটার তালিকা তুলে ধরে বলেন, সেখানে অনলাইনে ৬ হাজার ৮৫০ জনের নাম অবৈধভাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, বিভিন্ন রাজ্যে ভোটার তালিকায় এভাবে সংযোজন–বিয়োজন চলছে।
এর আগেও রাহুল নিশানা করেছিলেন সিইসি জ্ঞানেশ কুমারকে। আজও তিনি তাঁকে কাঠগড়ায় তোলেন। রাহুল বলেন, নির্বাচন স্বচ্ছ ও অবাধ করার বদলে তিনি পক্ষপাতমূলক আচরণ করেই চলেছেন। ভোট চুরি করাচ্ছেন। ভোটচোরদের রক্ষাও করছেন।
রাহুলের অভিযোগ এবারও খারিজ করে দিয়েছে ইসি। রাহুলের ডাকা সংবাদ সম্মেলনের পর আজ ইসি এক বিবৃতি দেয়। তাতে রাহুলের অভিযোগ ‘অসত্য ও ভিত্তিহীন’ জানিয়ে বলা হয়, অনলাইনে কেউ কোনো ভোটারের নাম বাদ দিতে পারেন না। নাম বাদ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির বক্তব্য শোনা হয়।