ঢাকার যাত্রাবাড়ীতে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণে একই পরিবারের তিন জন দগ্ধ হয়েছেন। তাদের সবার অবস্থা আশঙ্কাজন। 

বুধবার (৯ জুলাই) রাত পৌনে ২টার দিকে শহীদ ফারুক সড়ক সংলগ্ন খাদিমুল কোরআন মহিলা মাদ্রাসার গলির একটি ছয়তলা ভবনের নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে।

দগ্ধরা হলেন—মো. রিপন (৪০), তার স্ত্রী ইতি আক্তার (৩৫) এবং তাদের সাড়ে তিন বছরের মেয়ে রাফিয়া। 

ঘটনার পর তিন জনকেই দগ্ধ অবস্থায় উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। তাদের সবার অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।

জাতীয় বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক ডা.

শাওন বিন রহমান জানান, রিপনের শরীরের ৭০ শতাংশ, তার স্ত্রী ইতির ৪৫ শতাংশ এবং রাফিয়ার ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। স্বামী-স্ত্রী দুজনেরই শ্বাসনালী পুড়ে গেছে। রিপন ও ইতি আক্তারকে হাই ডিফেন্ডসিভ ইউনিটে (এইচডিইউ) এবং শিশুটিকে আইসিইউতে রাখা হয়েছে।

স্থানীয়রা জানান, রাতে কয়েল ধরাতে গিয়ে গ্যাস লিকেজ থেকে বিস্ফোরণ ঘটে। বিস্ফোরণের শব্দে আশপাশ কেঁপে ওঠে। এরপর ধোঁয়া দেখে এলাকাবাসী দ্রুত দগ্ধদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

ঢাকা/বুলবুল/ইভা 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

আইন শক্তিশালীকরণের দাবিতে তামাকবিরোধী যুব সমাবেশ

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন শক্তিশালী করার দাবিতে রাজধানীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) অনুষ্ঠিত হয়েছে শক্তিশালী ও উদ্দীপনামূলক যুব সমাবেশ। ‘তরুণদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত শক্তিশালী করা প্রয়োজন’—এই স্লোগানকে সামনে রেখে আজ বৃহস্পতিবার ঢাবির মুজাফফর আহমেদ চৌধুরী মিলনায়তনে সমাবেশের আয়োজন করে ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন অব দ্য রুরাল পুওর (ডর্প)। এতে অংশ নেয় ঢাকা আহছানিয়া মিশন, নারী মৈত্রী, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনসহ দেশের বিভিন্ন তামাকবিরোধী সংগঠন।

সমাবেশে অংশগ্রহণ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, বিইউপি, ঢাকা কলেজ, সরকারি বাংলা কলেজ ও খিলগাঁও মডেল কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় দুই শতাধিক শিক্ষার্থী। তামাকমুক্ত ভবিষ্যতের জন্য তাদের সরব উচ্চারণ ছিল এ সমাবেশের প্রাণ।

সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের চেয়ারম্যান ডা. আবু মোহাম্মদ জাকির হোসেন। তিনি বলেন, ‘দেশে ৬৮% মানুষ অসংক্রামক রোগে মারা যায়, যার মধ্যে ৫১ শতাংশ মৃত্যুর জন্য দায়ী তামাক। ৩৫ বছরের নিচে তরুণদের মৃত্যুহারও ভয়াবহ। এখনই না জাগলে ভবিষ্যত হাতছাড়া হবে।’ তিনি প্রস্তাবিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন দ্রুত পাসের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ডা. খালেদা ইসলাম বলেন, ‘প্রতিদিন তামাকজনিত রোগে ৪৪২ জন মানুষ মারা যান। বছরে প্রায় ৪ লাখ মানুষ পঙ্গুত্ববরণ করেন। পরোক্ষ ধূমপানে শিকার ৪২.৭ শতাংশ। তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাশ না হলে তরুণ প্রজন্মকে বাঁচানো সম্ভব নয়।’

নারী মৈত্রীর নির্বাহী পরিচালক নাসরিন আক্তার ডলি বলেন, ‘এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৯৫% প্রাথমিক শিক্ষার্থীর শরীরে উচ্চ মাত্রার নিকোটিন রয়েছে! আমাদের শিশুদের ভবিষ্যত ধ্বংস হচ্ছে। তামাক কোম্পানির কৌশলের বিরুদ্ধে আইনে শক্ত পদক্ষেপ নিতে হবে।’

সমাবেশে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা বলেন, দেশের ৪৯ শতাংশ যুবসমাজ তামাকে আক্রান্ত হলে দেশও অন্ধকারে যাবে। খুচরা সিগারেট বিক্রি বন্ধ করতে হবে। একবার এই ফাঁদে পড়লে বের হওয়া কঠিন। তারা আইনের সংশোধনী পাসের জোর দাবি জানান।

ডর্প-এর প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর জেবা আফরোজা মূল প্রবন্ধে ছয়টি জরুরি সংশোধনী তুলে ধরেন। সেগুলো হলো— ধূমপানের জন্য নির্ধারিত স্থান বিলুপ্ত করা। বিক্রয়কেন্দ্রে তামাকপণ্যের প্রদর্শন নিষিদ্ধ। তামাক কোম্পানির সিএসআর নিষিদ্ধ। ই-সিগারেট নিষিদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। খুচরা ও খোলা তামাক বিক্রি বন্ধ এবং স্বাস্থ্য সতর্কবার্তা ৫০ শতাংশের পরিবর্তে ৯০ শতাংশ করা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ