বরুসিয়া ডর্টমুন্ড থেকে ১৩ কোটি ৫৫ লাখ পাউন্ডে ২০১৭ সালে বার্সেলোনায় যোগ দেন উসমান দেম্বেলে। নেইমারের পর তখন তিনি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দামি খেলোয়াড়। বার্সেলোনা সভাপতি হোয়ান লাপোর্তা চার বছর পর ২০২১ সালে দেম্বেলেকে নিয়ে বলেছিলেন, ‘সে কিলিয়ান এমবাপ্পের চেয়েও ভালো।’

সে বছরই বার্সার কোচ হওয়ার পর জাভি হার্নান্দেজ দেম্বেলের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছিলেন, ‘ঠিকমতো ব্যবহার করতে পারলে সে বিশ্বের সেরা খেলোয়াড় হতে পারে।’ কিন্তু দুই মাস পর ঘটল উল্টোটা। আর্থিক সমস্যায় জর্জরিত বার্সার পক্ষ থেকে দেম্বেলেকে বলা হলো, হয় কম বেতনে নতুন চুক্তি করো কিংবা চলে যাও। জাভিও তাঁকে স্কোয়াডের বাইরে রাখতে শুরু করলেন। বার্সায় দেম্বেলের ছয় বছরকে বুঝতে এটুকু তথ্যই যথেষ্ট। অমিত প্রতিভাবান হলেও চোট, অধারাবাহিকতা ও ক্লাবের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় খুব বেশি ম্যাচ খেলতে না পারা—এই ছিল দেম্বেলের বার্সা ক্যারিয়ার। বার্সার হয়ে ১৮৫ ম্যাচ খেলে করেছিলেন ৪০ গোল।

রিয়াল গোলকিপার থিবো কোর্তোয়াকে ফাঁকি দিয়ে গোল করছেন দেম্বেলে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সমর্থকদের তোপের জবাবে নাঈম, ‘ভালোবাসা চাই, ঘৃণা নয়’

সংযুক্ত আরব আমিরাত থেকে দুইটি আলাদা ফ্লাইটে গতকাল দেশে ফেরেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। সন্ধ‌্যার পরপরই বড় বহর আসে। যেখানে ছিলেন নাঈম, মোস্তাফিজ, সাইফ, হাসান, রিশাদ, তানজিম, তাসকিনরা। 

দেশে পা রেখেই অপ্রীতিকর ঘটনার মুখোমুখি হতে হয় তাদেরকে। বিমানবন্দর থেকে বের হওয়ার পথে সমর্থকদের তোপের মুখোমুখি হতে হয় তাদেরকে। ভুয়া-ভুয়া স্লোগান, পরিবার তুলে গালাগাল চলতে থাকে। কিন্তু তারা কেউই ক্রিকেট সমর্থক ছিলেন না।

ঠিক ওই সময়ে একজন রাজনৈতিক নেতা ভিভিআইপি টার্মিনাল দিয়ে বের হচ্ছিলেন। তার আগমণ উপলক্ষ‌্যে কর্মীরা গিয়েছিলেন বিমানবন্দরে।  কিন্তু তারা যখন জানতে পারেন ক্রিকেটাররা ওই সময়ে বের হবেন তখনই ক্ষোভ উগড়ে দেন। 

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ খুবই খারাপ ক্রিকেট খেলছে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ হেরেছে প্রচন্ড বাজেভাবে। সিরিজ হারের পর প্রথমবার হোয়াইটওয়াশ হয়েছে তাদের বিপক্ষে। শেষ ম‌্যাচে পরাজয়ের ব‌্যবধান ছিল ২০০। অলআউট হয় মাত্র ৯৩ রানে। এর আগে এশিয়া কাপেও ভালো করতে পারেনি। কিন্তু আফগানদের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতেছিল দল। পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে নুন‌্যতম লড়াই করতে না পারায় মূলত ক্ষোভ তৈরি হয়।

নাঈম বের হওয়ার সময় তার গাড়িতে আঘাত করেছেন তারা। তাসকিনের গাড়িতেও একই কাণ্ড হয়েছে। ব‌্যাটিংয়ে কেবল ভালো সময় কাটানো সাইফ হাসান স্ত্রী ও বাচ্চা নিয়ে ফিরেছিলেন। তাকেও এই রোষানলের শিকার হতে হয়। বিষয়গুলো একদমই ভালো ভাবে নেননি শেষ ওয়ানডেতে ২৪ বলে ৭ রান করা নাঈম শেখ। কঠিন এই সময়ে ভক্ত, সমর্থকদের সবাইকে পাশে চেয়েছেন তিনি।

নাঈম নিজের পোস্টে লিখেছেন, ‘‘আমরা যারা মাঠে নামি, আমরা শুধু খেলি না — আমরা দেশের নামটা বুকে নিয়ে নামি। লাল-সবুজ পতাকাটা শুধু শরীরে নয়, রক্তে মিশে থাকে। প্রতিটা বল, প্রতিটা রান, প্রতিটা শ্বাসে চেষ্টা করি সেই পতাকাটাকে গর্বিত করতে।’’

‘‘হ্যাঁ, কখনো পারি, কখনো পারি না। জয় আসে, পরাজয়ও আসে — এটাই খেলাধুলার বাস্তবতা। জানি, আমরা যখন হেরে যাই, তখন আপনাদের কষ্ট হয়, রাগ হয় — কারণ আপনারাও এই দেশটাকে আমাদের মতোই ভালোবাসেন।’’

‘‘কিন্তু আজ যেভাবে আমাদের প্রতি ঘৃণা, গাড়ীতে আক্রমণ করা হয়েছে, তা সত্যিই কষ্ট দেয়। আমরা মানুষ, ভুল করি, কিন্তু কখনো দেশের প্রতি ভালোবাসা-চেষ্টার ঘাটতি রাখিনা। প্রতিটা মুহূর্তে চেষ্টা করি দেশের জন্য,মানুষের জন্য,  আপনাদের মুখে হাসি ফোটাতে।’’

‘‘ভালোবাসা চাই, ঘৃণা নয়। সমালোচনা হোক যুক্তিতে, রাগে নয়। কারণ আমরা সবাই একই পতাকার সন্তান। জয় হোক, পরাজয় হোক — লাল-সবুজ যেন আমাদের সবার গর্ব থাকে, ক্ষোভের নয়।’’

‘‘আমরা লড়বো, আবার উঠবো — দেশের জন্য, আপনাদের জন্য, এই পতাকার জন্য।’’

ক্রিকেটাররা দম ফেলার ফুরসত পাচ্ছেন না। শনিবারই বাংলাদেশের ঘরের মাঠে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে। 

ঢাকা/ইয়াসিন

সম্পর্কিত নিবন্ধ