নিজের বাড়ির সাবেক দারোয়ান জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘটনায় মিথ্যা মামলা সাজিয়ে হয়রানি করছে বলে সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ী এম এম এ কাদের। শনিবার দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) সংবাদ সম্মেলন করেন রাজধানীর সেগুনবাগিচার বাসিন্দা ও এ কে ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী এম এম এ কাদের।

তিনি নথিপত্র দেখিয়ে বলেন, আমার বাড়ির সাবেক দারোয়ান হোসেন মিজান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময়কার ঘটনায় আমাদের মিথ্যা দোষী সাজিয়ে ১৪টি মামলা করেছেন। এসব মামলায় আমার সঙ্গে সঙ্গে ছেলেকেও আসামি করা হয়েছে, অথচ আমার ছেলে মোস্তফা নবী ফাইয়াজ যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করেছে এবং দেশে থাকতেও ইংরেজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেছে তার ছাত্রলীগ করার প্রশ্নই আসে না।

সংবাদ সম্মেলনে ব্যবসায়ী এম এম এ কাদের বলেন, একের পর এক ষড়যন্ত্র করে উপায়ান্তর না পেয়ে আমাকে আওয়ামী লীগ নেতা এবং আমার ছোট ছেলে মোস্তফা নবি ফাইয়াজকে ছাত্রলীগের নেতা সাজিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনার সঙ্গে হত্যা মামলার আসামিদের তালিকায় নাম দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ৯টি মামলা থানা পুলিশ কোর্টে ফাইনাল রিপোর্ট দিয়েছে ওই মামলা সাজানো এবং মিথ্যা। আর বাকি ৫টি মামলার বাদীর সঠিক তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। আমি এবং আমার ছেলেরা কেউই জীবনে কোনও দিন কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই। হোসেন মিজান আমাকে নানাভাবে সন্ত্রাসীদের দিয়ে হত্যার হুমকিও দিচ্ছে। তার হুমকিতে বর্তমানে আমি ও আমার পরিবারের সদস্যদের জীবন অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

এম এম এ কাদের বলেন, ১৯৯৮ সালে হোসেন মিজানকে আমি আমার বড় ভাইয়ের অনুরোধে সেগুনবাগিচায় আমার বাড়িতে দারোয়ানের চাকরি দেই। পরে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও কাজ করেছে। পরবর্তীতে সে নিজেই ঠিকাদারি সনদ জোগাড় করে এবং নিজে ব্যবসা শুরু করে। ঠিকাদারি কাজের জন্য হোসেন মিজানের মূলধন না থাকায় স্ট্যাম্প চুক্তিপত্র করে ব্যবসায়িক লভ্যাংশ দেয়ার শর্তে আমার কাছ থেকে কয়েক ধাপে ২০০৫ থেকে ২০১৭ পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে টাকা নেয় এবং হিসাব করে করে আমাকে বিভিন্ন তারিখের তার স্বাক্ষর করা চেক দেয়। চেকগুলো ডিজঅনার হলে আমি প্রথমে উকিল নোটিশ এবং পরে মামলা দায়ের করি। এরপর হোসেন মিজান একের পর এক আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা ও বিভিন্ন সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমাকে ও আমার পরিবারের অন্য সদস্যদের হত্যার হুমকি দেওয়া শুরু করে।

তিনি বলেন, ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার হাকিমুদ্দিন ইউনিয়নে হোসেন মিজানের এক পালিত সন্ত্রাসী পাভেল হাওলাদারকে কনট্রাক্ট দেয় আমাকে ও আমার পরিবারের সবাইকে শেষ করে দিতে। বিনিময়ে পাভেল পাবে হাকিমুদ্দিনে একটি দোতলা বাড়ি, ঢাকার ক্যান্টনমেন্ট এলাকায় একটি ফ্ল্যাট। বিএনপি নেতা পরিচয় দেয়া সন্ত্রাসী পাভেলের গ্রামের বাড়ি হাকিমুদ্দিন ইউনিয়নে হলেও সে ঢাকায় বসবাস করে। বিভিন্ন সময় আমি কোর্টে সাক্ষি দিতে গেলে এই পাভেল দলবল নিয়ে কোর্টে গিয়ে আমাকে এবং মামলার অন্যান্য সাক্ষীদেরকে সাক্ষী দিতে বাধা দেয় এবং আমাদের হত্যার হুমকি দেয়। পাভেল আগে নিজেকে ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে আমাকে ভয়ভীতি দেখাত, গত বছরের ৫ আগস্টের পর বর্তমানে সে নিজেকে বিএনপি নেতা বলে পরিচয় দেয়। আমার শ্রদ্ধেয় সাংবাদিক ভাই ও বোনেরা, আমি আপনাদের মাধ্যমে এ বিষয়ে মাননীয় আইন উপদেষ্ঠা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি ।যেনো আমি যথাযথ আইনি সহায়তা পাই।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: হয়র ন এম এম এ ক দ র ব যবস য় র পর ব আম র ব

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই শহীদ হাসানের জানাজায় মানুষের ঢল

জুলাই অভ্যুত্থানে আহত হয়ে চিকিৎসাধীন থাকা শহীদ হাফেজ মোহাম্মদ হাসানের জানাজা রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে এনসিপি, ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন। শনিবার রাত সোয়া দশটার দিকে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।

জানাজায় ইমামতি করেন ছাত্রশিবিরের ঢাবি শাখার সাবেক সভাপতি আবু সাদিক কায়েম। তিনি সংক্ষিপ্ত আকারে বক্তব্য রাখেন। জানাজায় অংশ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন- জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেন, যুগ্ম সদস্যসচিব রিফাত রশিদ, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জামান শিপন, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাবি শাখার মুখ্য সংগঠক হাসিবুল ইসলাম এবং জুলাই ঐক্যের সংগঠক মুসাদ্দিক আলী ইবনে মোহাম্মদ।

গত বছরের ৫ আগস্ট চট্টগ্রামের টাইগার পাস এলাকায় আন্দোলনে অংশ নিয়ে গুরুতর আহত হন মোহাম্মদ হাসান। প্রথমে তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চিকিৎসাধীন ছিলেন হাসান। বৃহস্পতিবার রাত ১১টা ১০ মিনিটে সেখানেই তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিল ২৫ বছর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ