আমরা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাচ্ছি না, রোডম্যাপ দাবি করেছি: সালাহউদ্দিন আহমেদ
Published: 24th, May 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগ চাইনি, এমনকি এখন পর্যন্তও চাচ্ছি না। উনার কাছে আমরা নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ দাবি করেছি।’
শনিবার রাজধানীর কাকরাইলে অবস্থিত ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার ইন্সটিটিউশনের মিলনায়তনে 'শাপলা চত্বর: শাহাদাতের রক্তে রাঙ্গা অবিনাশী চেতনা' শীর্ষক কনফারেন্সে তিনি এসব কথা বলেন।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা গণতন্ত্র চাই এবং সাংবিধানিক অধিকার চাই। আর সেজন্যই আমরা বারবার নির্বাচনের তাগিদ দিচ্ছি। আর এটা আমাদের দায়িত্ব। আমরা মাননীয় প্রধানের উপদেষ্টার (ড.
তিনি বলেন, শেখ হাসিনা এমন জঘন্য হত্যাকারী যে সে রাতের অন্ধকারে সমস্ত আলো পানি নিভিয়ে এই নৃশংস হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে। জুলাই গণহত্যাসহ বাংলাদেশের সকল হত্যাকাণ্ড নিয়ে তারা (আওয়ামী লীগ) নূন্যতম অনুসুচনা বোধ করে না। দোষ শিকার করেন ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কিন্তু এসব না করে উলটো অভূত্থানকারীদের তারা অপরাধী তকমা দিচ্ছে। কত বড় সাহস তাদের।
গণহত্যার বিচার করতে হলে আরও ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে মন্তব্য করে সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা এখন যেই অবস্থায় আছি তাতে যদি সকল শহীদদের বিচার চাই তাহলে এই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের মত আরো ট্রাইব্যুনাল গঠন করতে হবে। তা না হলে দ্রুত এই বিচার কার্য সম্পন্ন করা যাবে না। তবে বর্তমানে ট্রাইব্যুনালে এখন পর্যন্ত কোনো বিচার কার্য দৃশ্যমান নয়। আমরা আশা করব, বিচার কার্য যেহেতু সময় সাপেক্ষ তবুও খুনি হাসিনার আমলে সংগঠিত একটি মামলা হলেও যেন বিচার কার্য শেষ হয়েছে, এটা আমরা দেখতে পারি।
২০১৩ সালের শাপলা চত্বরের ঘটনাকে 'গণহত্যা' আখ্যা দিয়ে এর শহীদদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি এবং দোষীদের বিচার করা সহ ৭ দাবি জানিয়েছেন হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক।
এসময় এসব দাবি আদায়ে তিনি কর্মসূচিও ঘোষণা করেন।
অনুষ্ঠানে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক সাত দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো- শাপলা চত্বরে শহীদ ও আহতদের রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে। শহীদ পরিবারকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, আহতদের চিকিৎসা এবং পূর্ণাঙ্গ পুনর্বাসনের দায়িত্ব সরকারকে নিতে হবে। বিশেষ করে শহীদ পরিবার ও পঙ্গুত্ববরণকারীদেরকে নিয়মিত ভাতা দিতে হবে; শাপলা চত্বরের ঘটনার ইতিহাস জাতীয় শিক্ষাক্রমে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; জুলাই ঘোষণাপত্রে শাপলা চত্বরের ঘটনাকে জাতীয় ট্রাজেডি হিসেবে স্বীকৃতি দিতে হবে; রাষ্ট্রীয় উদ্যোগে যাচাইকৃত শহীদ তালিকা প্রস্তুত করে তা জাতীয় নথিতে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে; মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘনকারী এই গণহত্যার দায়ীদের দ্রুত বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে; হেফাজতে ইসলাম ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা সকল মামলা অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে; আইনজ্ঞ ও নিরপেক্ষ নাগরিকদের সমন্বয়ে 'শাপলা গণহত্যা' তদন্ত কমিশন গঠন ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তের সুপারিশ প্রকাশ করতে হবে।
মামুনুল হকের ঘোষণা দেওয়া কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে আগামী ৩০ আগস্ট শাপলা চত্বরের ঘটনায় যারা সংবাদ, প্রতিবেদন ও গবেষণা, সাহিত্য-রচনা, চিকিৎসা সহায়তা, আইনগত লড়াই কিংবা স্মৃতি সংরক্ষণমূলক উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের সম্মাননা প্রদানের জন্য একটি সম্মিলনীর আযোজন করা হবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা বশিরউল্লাহ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দিন আহমাদ, এবি পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান মো. দিদারুল আহমেদ, মাওলানা রুহুল আমিন সালেহ, গণঅধিকার পরিষদ সভাপতি নুরুল হক নূর, হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব আজিজুল হক ইসলামাবাদীসহ শাপলা চত্বরের হত্যাকাণ্ডে নিহত পরিবারের সদস্য।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব এনপ স ল হউদ দ ন আহম দ স ল হউদ দ ন দ দ ন আহম দ গণহত য হত য ক ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ