পাচার হওয়া সম্পদ জব্দের পদক্ষেপকে সাধুবাদ টিআইবির
Published: 24th, May 2025 GMT
বাংলাদেশের পতিত কর্তৃত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ ও সুবিধাভোগীদের অর্থ পাচার ও অবৈধ সম্পদের বিরুদ্ধে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সির (এনসিএ) নেওয়া পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
একই সঙ্গে এ পদক্ষেপ অনুসরণ করে অন্যান্য অর্থ-সম্পদ পাচারের গন্তব্য দেশগুলোকে নিজেদের আইনি কাঠামোর আওতায় বাংলাদেশি নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন অবৈধ সম্পদ চিহ্নিত, জব্দ ও পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।
আজ শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ আহ্বান জানায় টিআইবি। সংস্থাটি বলছে, প্রায় ৯ কোটি পাউন্ড (প্রায় ১ হাজার ৪৭৯ কোটি টাকা) মূল্যের সম্পদ জব্দ করার এ পদক্ষেপের ধারাবাহিকতায় যুক্তরাজ্য ও বাংলাদেশের মধ্যে যৌথ আইনি সহায়তার পথ আরও সুগম হবে বলে তারা আশা করছে। তদন্ত কার্যক্রম দ্রুত অগ্রসর হলে পাচার হওয়া অর্থ-সম্পদের দ্রুত পুনরুদ্ধার সম্ভব হবে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যে অবৈধভাবে পাচার হওয়া অর্থ-সম্পদ প্রথমবারের মতো জব্দের ঘটনায় আমরা আশাবাদী হতে চাই। তবে এটিকে কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই; বরং এই জব্দ হওয়া অর্থ-সম্পদ হিমশৈলের চূড়ামাত্র। পতিত কর্তৃত্ববাদী সরকারের আশীর্বাদপুষ্ট আরও বহু ব্যক্তি বিপুল পরিমাণে অর্থ-সম্পদ পাচার করেছেন। তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজন।’
সাম্প্রতিক কয়েক দশকে যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া, সিঙ্গাপুর, হংকং, মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত (বিশেষ করে দুবাই) বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থ-সম্পদের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত গন্তব্যে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক।
এসব দেশের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইফতেখারুজ্জামান বলেন, তারাও যেন যুক্তরাজ্যের পদক্ষেপ অনুসরণ করে তাদের আইনি কাঠামো ও যৌথ আইনি সহায়তার আওতায় বাংলাদেশি নাগরিক বা প্রতিষ্ঠানের মালিকানাধীন অবৈধ সম্পদ চিহ্নিত, জব্দ এবং পুনরুদ্ধারের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়।
এসব দেশকে বাংলাদেশের সঙ্গে পারস্পরিক আইনি এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও বিশেষায়িত সহায়তা কার্যকর করে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত পাঠাতে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি। পাশাপাশি এটি ত্বরান্বিত করা এবং পারস্পরিক আইনি ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ ও বিশেষায়িত সহায়তার মতো আন্তর্জাতিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করে অর্থ পাচারকারীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় সংস্থাটি।
উল্লেখ্য, গতকাল শুক্রবার যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম গার্ডিয়ানের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাজ্যের গুরুতর ও সংগঠিত অপরাধ দমন-সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান এনসিএ লন্ডনে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট দুই ব্যক্তির মালিকানাধীন প্রায় ৯ কোটি পাউন্ডের বিলাসবহুল সম্পত্তি জব্দ করেছে।
জব্দের আদেশ অনুযায়ী, আহমেদ শায়ান এফ রহমান ও তাঁর চাচাতো ভাই আহমেদ শাহরিয়ার রহমান লন্ডনে তাঁদের সম্পদ বিক্রি করতে পারবেন না। এর মধ্যে লন্ডনের গ্রোসভেনর স্কয়ারের অ্যাপার্টমেন্টও রয়েছে।
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান এফ রহমান। আর আহমেদ শাহরিয়ার রহমান হলেন সালমান এফ রহমানের ভাতিজা।
আরও পড়ুনলন্ডনে সালমানের ছেলে ও ভাতিজার ১,৪৭৯ কোটি টাকার সম্পদ জব্দ৯ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন এফ রহম ন প চ র হওয় পদক ষ প আহম দ শ ট আইব
এছাড়াও পড়ুন:
সূর্য ধ্বংসের সময় পৃথিবীর কী হবে
সূর্যের শেষটা কেমন হবে, তা নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেক তত্ত্ব চালু আছে। সৌরজগতে উষ্ণতা থেকে শুরু করে ভর আর সব গ্রহের কক্ষপথের স্থিতিশীলতা দিচ্ছে সূর্য। আমাদের পৃথিবীতে জীবনের অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজনীয় অবস্থা তৈরির জন্য সূর্যের অবস্থান গুরুত্বপূর্ণ। বিজ্ঞানীদের ধারণা, সূর্য প্রায় ৫০০ কোটি বছর পর ধ্বংস হতে শুরু করবে। হাইড্রোজেন কমতে থাকায় শেষ পর্যন্ত সূর্য একটি লোহিত দৈত্যাকার অবস্থানে প্রসারিত হবে। তখন সম্ভাব্যভাবে পৃথিবীসহ অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু গ্রহকে সূর্য গ্রাস করে ফেলবে। সূর্যের লোহিত দৈত্যাকার অবস্থানের সময় চরম তাপের পরিস্থিতি দেখা যাবে। এই পর্যায় কোটি কোটি বছর পর্যন্ত স্থায়ী হবে।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, সূর্যের হাইড্রোজেন কমার সময় পৃথিবীর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে। মহাসাগর ও অন্যান্য জলাশয় বাষ্পীভূত হয়ে শূন্য হয়ে যাবে। ধীরে ধীরে আমাদের গ্রহ প্রাণের বসবাসের অযোগ্য হয়ে উঠবে। বর্ধিত তাপের ফলে বায়ুমণ্ডলীয় গ্যাস মহাকাশে হারিয়ে যাবে। সূর্যের লোহিত দৈত্যাকার পর্যায়টি প্রায় ১০০ কোটি বছর স্থায়ী হবে। এরপর একক নীহারিকা তৈরি করবে সূর্য। একটি সাদা বামন বস্তু হিসেবে সূর্য অবস্থান করবে। এ ধরনের পরিবর্তনের সময় পৃথিবীতে বেঁচে থাকা কঠিন হবে। বর্ধিত তাপ ও বিকিরণের কারণে বেশির ভাগ জীব বিলুপ্ত হয়ে যাবে।
যুক্তরাজ্যের ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের জ্যোতির্বিজ্ঞানী ক্রিস্টোফার মানসার বলেন, সূর্যের মতো নক্ষত্র যখন মারা যায়, তখন তাদের কেন্দ্রস্থলে হাইড্রোজেন জ্বলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত তারা লাল দৈত্যে পরিণত হয়। যদি তাদের গ্রহ থাকে, তবে সেগুলো গ্রাস করতে পারে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা জেটিএফ এসএলআরএন-২০২০ নামের একটি নক্ষত্রকে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এটি কেমন হতে পারে, তার একটি আভাস পেয়েছেন। নক্ষত্রটি তার একটি গ্রহকে গ্রাস করেছে।
প্রায় ৫০০ কোটি বছর পরে সূর্য লোহিত দৈত্যাকার অবস্থানে পৌঁছাবে। এর আগেই বুধ ও শুক্র গ্রহকে গ্রাস করে ফেলবে সূর্য। পৃথিবীরও একইভাবে ধ্বংস হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যখন সূর্য একটি শ্বেত বামন নক্ষত্রে পরিণত হয়ে যাবে, তখন কেবল মঙ্গল আর গ্রহাণু বেল্টের পরে যা কিছু আছে, তা টিকে থাকবে।
সূত্র: এনডিটিভি, স্কাইঅ্যাটনাইটম্যাগাজিন