ইউক্রেনের সঙ্গে বন্দিবিনিময়ের মধ্যেই রাজধানী কিয়েভে ব্যাপক হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। গতকাল শুক্রবার রাতভর ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে এ হামলায় চালানো হয়। তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধে এটি ছিল কিয়েভে অন্যতম বড় হামলা। এতে বেশ কয়েকটি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছে ইউক্রেন। এরই মধ্যে রাশিয়া ইউক্রেনের আরও তিনটি এলাকা দখলের দাবি করেছে।

কিয়েভের প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, শুক্রবার রাতে একের পর এক ড্রোন শহরটির ওপর দিয়ে উড়ে যেতে দেখা যায়। শোনা যায় বিস্ফোরণের শব্দ। এ সময় সক্রিয় হয়ে ওঠে ইউক্রেনের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। হামলার পর বহুতল একটি ভবনের ওপরের তলায় আগুন জ্বলতে দেখা যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে আসেন ইউক্রেনের ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা।

আজ শনিবার ইউক্রেনের সরকারি কর্মকর্তার জানান, কিয়েভের ছয়টি এলাকায় হামলা হয়েছে। এতে এখন পর্যন্ত ১৫ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন শিশু। শুক্রবারের রাত ‘কঠিন’ ছিল বলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উল্লেখ করেছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রাশিয়ার ওপর আরও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শুক্রবার রাতে কিয়েভ লক্ষ্য করে রাশিয়া ১৪টি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ও ২৫০টি দূরপাল্লার ড্রোন ছুড়েছে বলে দাবি করেছে ইউক্রেনের বিমানবাহিনী। এর আগের কয়েক দিনে মস্কোসহ রাশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চলে প্রায় ৪০০টি ড্রোন হামলা চালিয়েছিল ইউক্রেন। এরপর শুক্রবার রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ বলেছিলেন, ওই সব হামলার জবাব দেওয়া হবে।

২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ চলছে। বর্তমানে ইউক্রেনের পাঁচ ভাগের প্রায় এক ভাগ অঞ্চল রাশিয়ার দখলে রয়েছে। পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যে আজ ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে স্তুপোচকি, ওতরাদনে ও লোকনিয়া নামের আরও তিনটি এলাকা দখলের দাবি করেছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। তবে মস্কোর এ দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি রয়টার্স।

আজ দ্বিতীয় দিনের মতো বন্দিবিনিময় করেছে মস্কো ও কিয়েভ। এদিন দুই দেশ ৩০৭ জন করে বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে বলে জানিয়েছে রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। এর আগের দিন শুক্রবার ৫০ জন করে বন্দিবিনিময় করেছিল দুই দেশ। সম্প্রতি তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে বৈঠক করেন দুই দেশের প্রতিনিধিরা। সেখানে এক হাজার করে বন্দিবিনিময়ের বিষয়ে একমত হন তাঁরা।

এই বন্দিবিনিময় শেষ হলে ইউক্রেনের কাছে একটি খসড়া শান্তিচুক্তি হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভ। শুক্রবার এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ওই খসড়া চুক্তিতে দীর্ঘ মেয়াদে যুদ্ধ বন্ধের জন্য রাশিয়ার শর্তগুলো তুলে ধরা হবে। শান্তি আলোচনার জন্য মস্কো সব সময় প্রস্তুত আছে বলেও জানান তিনি।

গত জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতায় বসার পর থেকেই ইউক্রেন যুদ্ধ থামাতে তৎপর ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ নিয়ে জেলেনস্কির সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে তাঁর। সম্প্রতি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গেও ফোনালাপ করেন তিনি। ফোনালাপ শেষে পুতিন জানিয়েছিলেন, যুদ্ধ বন্ধের জন্য আলোচনায় বসতে প্রস্তুত মস্কো।

আরও পড়ুনরাশিয়া কেন ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধবিরতিতে রাজি নয়১৯ মে ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ ক রব র র ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর সতর্কতা বহাল

বাংলাদেশ উপকূলীয় এলাকায় অবস্থানরত লঘুচাপটি গাঙ্গেয় পশ্চিম বঙ্গ ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগরে বায়ুচাপ তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর এবং দেশের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে যে কোনো সময় ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

এমন পরিস্থিতিতে- পটুয়াখালীর পায়রা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও মোংলা সমুদ্র বন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

বুধবার (৯ জুলাই) পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী এ তথ্য জানান।

আরো পড়ুন:

ফেনীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ১৪ স্থানে ভাঙন, পানির নিচে ৩০ গ্রাম

মৌসুমের সর্বোচ্চ বৃষ্টি ফেনীতে, মুহুরী নদীর ৭ স্থানে বাঁধে ভাঙন

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সব মাছধরা ট্রলার সমূহকে উপকূলের কাছাকাছি নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে। 

এছাড়া, পটুয়াখালী, বরিশাল, খুলনা, কুমিল্লা, নোয়াখালী, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার অঞ্চলে ৪৫ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যাওয়ার শঙ্কায় এসব অঞ্চলের নদী বন্দর সমূহকে দুপুর ১টা পর্যন্ত ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এদিকে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয়তার কারণে পটুয়াখালীতে অতিভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। বুধবার (৯ জুলাই) সকাল ৬টা থেকে পূর্ববর্তী ২৪ ঘণ্টায় ২০০.২ মিলমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। 

পটুয়াখালী জেলা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন, আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কিছুটা কমতে পারে। তবে উপকূলীয় এলাকায় দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।”

ঢাক/ইমরান/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ