‘বর্তমান পরিস্থিতিতে ড. ইউনূসের পদত্যাগের সুযোগ নেই’
Published: 25th, May 2025 GMT
দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগের সুযোগ নেই বলে মনে করছে খেলাফতে মজলিশ। দলটি বলছে, প্রধান উপদেষ্টা পদত্যাগ করলে দেশের পরিস্থিতি আরও জটিল আকার ধারণ করবে। পতিত ফ্যাসিবাদী ও আধিপত্যবাদী শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে।
শনিবার দুপুরে রাজধানীর পুরানা পল্টনে খেলাফত মজলিসের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দলের মহাসচিব ড.
তাদের অন্যান্য প্রস্তাবনাগুলো হলো: ফ্যাসিবাদবিরোধী সব দল ও স্টেকহোল্ডারদের মধ্যে সৃষ্ট মতানৈক্য দূর করতে অবিলম্বে সর্বদলীয় জাতীয় কনভেনশন আহ্বান করা; সংস্কারের সুস্পষ্ট রোডম্যাপ ঘোষণা অর্থাৎ প্রয়োজনীয় মৌলিক সংস্কারের রূপরেখা ও তা চূড়ান্তের মেয়াদ নির্ধারণ করা; অবিলম্বে জাতীয় নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করা; পতিত ফ্যাসিবাদীদের বিচার দ্রুত সম্পন্নের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগকে গতিশীল করা; অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন হয় এমন পদক্ষেপ ও কার্যক্রমের বিষয়ে সরকারের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের সতর্ক থাকা; রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে নিয়মিত আলোচনা অব্যাহত রাখা; এবং নির্ধারিত সংস্কার, পতিত ফ্যাসিবাদীদের বিচার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতায় নতুন-পুরনো সব রাজনৈতিক দল, প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে অঙ্গীকারবদ্ধ হওয়া।
সংবাদ সম্মেলনে আবদুল কাদের বলেন, সকল রাজনৈতিক দল, সামরিক বাহিনীসহ ফ্যাসিবাদবিরোধী সকল শক্তি অন্তর্বর্তী সরকারকে সহযোগিতা করে আসছে। সরকার সংস্কার, ফ্যাসিবাদীদের বিচার ও নির্বাচনকে সামনে রেখে কাজ করে যাচ্ছিল। রাজনৈতিক দলসমূহও সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন দিয়ে যাচ্ছিল। কিন্তু সম্প্রতি রাজনৈতিক দলসমূহের মধ্যে মতবিরোধ, মতভেদ প্রকাশ্য রূপ নেয়। ইতোমধ্যে সরকার ও সেনাবাহিনীর মধ্যে মতপার্থক্যের খবর প্রকাশ পায়, যা কোনোভাবেই কাম্য নয়। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করতে চাচ্ছেন বলে খবর ছড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে দেশবাসী শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। অবিলম্বে সব ধরনের শঙ্কা দূর করা জরুরি।
আলাপ–আলোচনার মাধ্যমে দেশের চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমন করা সম্ভব উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তরণে বিভিন্ন দল ও পক্ষের মধ্যে পারস্পরিক মতপার্থক্য-বিভেদ দূর করতে সংলাপ শুরু করা প্রয়োজন। এ জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে দ্রুত সময়ের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যক্রম শেষ করে একটি জাতীয় নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হতে হবে। এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্পন্ন করে একটি সুষ্ঠু জাতীয় নির্বাচন সম্ভব। সংস্কার, নির্বাচন, ফ্যাসিবাদের বিচার- যুগপৎভাবে করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে দলের আমীর মাওলানা আবদুল বাছিত আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা আহমদ আলী কাসেমী, অধ্যাপক আবদুল জলিল, জাহাঙ্গীর হোসাইন, প্রকৌশলী আবদুল হাফিজ খসরুসহ প্রমুখ কেন্দ্রীয় নেতা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড ইউন স পদত য গ পর স থ ত পদত য গ ন র জন সরক র আবদ ল
এছাড়াও পড়ুন:
১০ মাস পর ওবায়দুল কাদের ও শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে সুহেল আহমদ (২১) নিহতের ঘটনায় আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের ও নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের সাবেক সাসংদ শামীম ওসমানের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের হয়েছে। মামলায় ১৫০-২০০ জনকে অজ্ঞাত হিসেবে আসামি করা হয়েছে।
হত্যার ঘটনার দশ মাস পর বৃহস্পতিবার রাতে নিহতের সহকর্মী ও বন্ধু আব্দুল হামিদ চৌধুরী ওরফে ফরহাদ বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তবে শনিবার বিকেলে মামলার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, নিহত যুবক সুহেল আহমদ পেশায় একজন টাইলস মিস্ত্রি। আন্দোলন চলাকালীন তিনি এবং বাদী উভয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের শিমরাইল মোড়ে প্রিয়ম নিবাসের দ্বিতীয় তলার ডাচ বাংলা ব্যাংকের অফিসে টাইলসের কাজ করছিলেন।
ছাত্র-জনতা ২০ জুলাই যখন ভবনটির সামনে জড়ো হয়ে আন্দোলন করছিলেন, তখন প্রধান আসামি ওবায়দুল কাদেরের নির্দেশনায় এবং দ্বিতীয় আসামি শামীম ওসমানের উপস্থিতিতে অন্যান্য আসামিরা অস্ত্র নিয়ে জনতার ওপর হামলা চালায়। একপর্যায়ে আসামিরা ভিকটিম এবং বাদীর কর্মরত ভবনে আগুন জ্বালিয়ে দেয়।
এতে বাদী প্রাণ রক্ষায় ভবন থেকে লাফ দিয়ে পালাতে পারলেও ভিকটিম ভেতরে আটকা পড়ে পুড়ে মারা যায়। এই ঘটনার দুই দিন পর ভবনের ভেতর থেকে ভুক্তভোগী সুহেল আহমেদের পোড়া লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে নিহত সুহেল আহমেদের লাশ তার বাবা তাখলিসুর রহমানের কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শাহিনূর আলম বলেন, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।