দেশের বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণবিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের সুপারিশ করে বেসরকারি শিক্ষক নিববন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। বয়সসীমার জটিলতায় অনেক প্রার্থী নিয়োগবঞ্চিত হন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীর কোনো বয়সসীমা না রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।

রবিবার (২৫ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ‘বেসরকারি শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা’ সংশোধনে এ সভা ডাকা হয়েছিল।

সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী-এখন থেকে শিক্ষক নিবন্ধন বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীর বয়স গণনা করা হবে। গণবিজ্ঞপ্তির সময় কারো বয়সসীমা বিবেচনা করা হবে না। যারা নিবন্ধন পরীক্ষায় অংশ নিয়ে সনদ অর্জন করতে পারবেন, তারা সবাই গণবিজ্ঞপ্তিতেও আবেদন করতে পারবেন।

আরো পড়ুন:

জাবির গাঁজা সেবনকালে সাবেক ছাত্রলীগ কর্মীসহ আটক ৪

ফুলের রাজ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভায় অংশ নেওয়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সভায় অংশ নেওয়া একজন কর্মকর্তা বলেন, “বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এনটিআরসিএর মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগে নিবন্ধন পরীক্ষা ও গণবিজ্ঞপ্তি-উভয় ক্ষেত্রে বয়সসীমা দেখা হয়। এটি গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ নিবন্ধন সনদ অর্জনের সময় যার বয়স ছিল, তিনি কেন সনদ অর্জনের পর বয়সসীমা অতিক্রম হওয়ায় গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবেন না? তাহলে তার সনদ অর্জনের প্রয়োজনটা কী?’

তিনি আরো বলেন, “বিষয়টি নিয়ে আলোচনার পর দেখা যায়, দুই ক্ষেত্রে বয়সসীমা দেখা অযৌক্তিক। সেজন্য শুধুমাত্র নিবন্ধন পরীক্ষায় আবেদনের সময় প্রার্থীর বয়স দেখা হবে। আর গণবিজ্ঞপ্তিতে বয়সসীমার কোনো বাধা থাকবে না। যারা নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবেন, তারা সবাই গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদন করতে পারবেন।’

বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগের বিধিমালা সংশোধন প্রসঙ্গে মন্ত্রণালয়ের ওই কর্মকর্তা জানান, বিধিমালা সংশোধনের সুপারিশ করে তা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। এরপর আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত নেওয়া হবে। দুই মন্ত্রণালয় থেকে ছাড় পাওয়ার পর বিধিমালাটি প্রকাশ করা হবে।তবে তার আগেই যদি কোনো গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়, তাহলে তা নতুন সংশোধিত বিধিমালার আওতায় পড়বে না।

ঢাকা/হাসান/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব সরক র বয়সস ম প রব ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিপদ নিয়ে ইসলামের উক্তি

জীবন একটি পরীক্ষার মঞ্চ, যেখানে বিপদ আমাদের ধৈর্য, ইমান ও আল্লাহর ওপর ভরসার পরীক্ষা নেয়। রোগ, দারিদ্র্য, সামাজিক অশান্তি বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ—এসব বিপদ ইসলামে শুধু কষ্ট নয়, বরং আল্লাহর নৈকট্য লাভের সুযোগও বটে। কোরআন ও হাদিসে বিপদ মোকাবিলার জন্য ধৈর্য, দোয়া ও আল্লাহর প্রতি নির্ভরতার শিক্ষা দেওয়া হয়েছে।

কোরআনে বিপদ নিয়ে উক্তি

কোরআন বিপদকে আল্লাহর পরীক্ষা হিসেবে বর্ণনা করে। আল্লাহ বলেন, ‘আমরা অবশ্যই তোমাদের পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা, ধনসম্পদ, জীবন ও ফসলের ক্ষতির মাধ্যমে। তবে ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও।’ (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫)

বিপদ মুমিনের জন্য আল্লাহর পরীক্ষা এবং তার গুনাহ মাফের মাধ্যম।ইমাম ইবনে কাসির (রহ.) , তাফসির ইবনে কাসির, ১/৪৫৬আরও পড়ুনবিপদ থেকে রক্ষা পেতে দোয়া০৭ অক্টোবর ২০২৪

আরেকটি আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহর অনুমতি ছাড়া কোনো বিপদই আপতিত হয় না। যে আল্লাহর প্রতি ইমান আনে, আল্লাহ তার অন্তরকে সৎপথে পরিচালিত করেন। আল্লাহ প্রত্যেক বিষয়ে সর্বজ্ঞ।’ (সুরা তাগাবুন, আয়াত: ১১)

ইমাম ইবনে কাসির (রহ.) বলেন, ‘বিপদ মুমিনের জন্য আল্লাহর পরীক্ষা এবং তার গুনাহ মাফের মাধ্যম। (তাফসির ইবনে কাসির, ১/৪৫৬, দারুস সালাম, ২০০০)

হাদিসে বিপদ নিয়ে উক্তি

নবীজি (সা.) বিপদের সময় ধৈর্য ও দোয়ার গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, ‘কোনো মুসলিমের ওপর এমন কোনো বিপদ আসে না, এমনকি একটি কাঁটার আঘাতও না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করেন না।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৪১)

আরেকটি হাদিসে নবীজি বলেন, ‘যখন কোনো মুমিন বিপদে পড়ে এবং বলে, ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন, আল্লাহ তার জন্য বিপদের চেয়ে উত্তম কিছু দান করেন।’ (সুনান তিরমিজি, হাদিস: ৩,৪৩৬)।

ইমাম নববি (রহ.) বলেন, ‘বিপদ মুমিনের জন্য আল্লাহর রহমত ও কাফফারার মাধ্যম, যা তাকে আখিরাতের জন্য প্রস্তুত করে।’ (রিয়াদুস সালিহীন, ১/২৩৪, দারুল কুতুব, ১৯৯৯)

আরও পড়ুনকুনুতে নাজেলা: বিপদে আল্লাহর কাছে আশ্রয়ের দোয়া০৮ জুলাই ২০২৫কোনো মুসলিমের ওপর এমন কোনো বিপদ আসে না, এমনকি একটি কাঁটার আঘাতও না, যার মাধ্যমে আল্লাহ তার গুনাহ মাফ করেন না।সহিহ বুখারি, হাদিস: ৫,৬৪১বিপদের সময়ের দোয়া

বিপদে আল্লাহর কাছে দোয়া করা ইসলামের একটি মৌলিক শিক্ষা। একটি প্রচলিত দোয়া হলো:

উচ্চারণ: লা ইলাহা ইল্লাল্লাহুল আজিমুল হালিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুল আরশিল আজিম, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু রাব্বুস সামাওয়াতি ওয়া রাব্বুল আরদি ওয়া রাব্বুল আরশিল কারিম।

অর্থ: আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি মহান ও সহিষ্ণু। আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, তিনি সুউচ্চ আরশের প্রতিপালক, আকাশ ও পৃথিবীর রব এবং সম্মানিত আরশের রব। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬,৩৪৫)

আরেকটি দোয়া:

উচ্চারণ: হাসবিয়াল্লাহু লা ইলাহা ইল্লা হুয়া আলাইহি তাওয়াক্কালতু ওয়া হুয়া রাব্বুল আরশিল আজিম।

অর্থ: আল্লাহই আমার জন্য যথেষ্ট, তিনি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, আমি তাঁর ওপর ভরসা করি, তিনি মহান আরশের রব। (সুরা তাওবা, ৯: ১২৯)

ইসলাম বিপদকে শুধু কষ্ট হিসেবে দেখে না, বরং এটি আল্লাহর পরীক্ষা ও গুনাহ মাফের মাধ্যম। নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনের জন্য প্রতিটি বিষয়ই কল্যাণকর। সুখে সে কৃতজ্ঞ থাকে, আর বিপদে ধৈর্য ধরে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২,৮৯৫)

ইমাম ইবনে তাইমিয়া (রহ.) বলেন, ‘বিপদ মুমিনকে আল্লাহর কাছে ফিরিয়ে নিয়ে যায় এবং তার ইমানকে শক্তিশালী করে।’ (মাজমুয়ায়ে ফাতাওয়া, ১০/২৮৭, দারুল ওয়াফা, ২০০১)

আরও পড়ুনতওবা-ইস্তিগফার রিজিক বাড়ায়, বিপদ তাড়ায় ১০ এপ্রিল ২০২৩

সম্পর্কিত নিবন্ধ