পাঁচ ফুট দৈর্ঘ্য আর এক ফুট প্রস্থের একটি ব্যানার। সেখানে লেখা, ‘জোবরা ভাতের হোটেল ও কমিউনিটি সেন্টার’। মূল লেখার নিচে ছোট করে লেখা, ‘মুলার তরকারি দিয়ে ভাত খাওয়া যায়।’ গতকাল সোমবার দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) ভবনের নামফলকের ওপর এমন ব্যানার টানানো হয়। তবে অল্প কিছুক্ষণ পরই সেটি খুলে নিয়ে যায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ততক্ষণে অনেকেই এই ব্যানারের ছবি তুলে ছড়িয়ে দেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে। আর গতকাল দিনভর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ নিয়ে আলোচনা চলেছে। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচন না দেওয়ার প্রতিবাদে কিছু শিক্ষার্থী এমন ব্যানার টানান।

শিক্ষার্থীরা বলছেন, চট্টগ্রামের হাটহাজারীর জোবরা গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান। সে কারণে বিদ্রূপ করে সে গ্রামের নামটিই লেখা হয় ব্যানারে। পাশাপাশি ‘এখানে মুলার তরকারি দিয়ে ভাত খাওয়া যায়’—এ কথাও লেখা ছিল ব্যানারে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে এই ব্যানার সাঁটিয়েছিলেন শিক্ষার্থীরা। বেলা একটার দিকে খুলে ফেলা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবি, প্রশাসন এটি সরিয়েছে।

দীর্ঘদিন নির্বাচন না হওয়ায়, চাকসুর মতো শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিষ্ঠান যে ভাতের হোটেলে পরিণত হয়েছে, সেদিকেই ইঙ্গিত করা হয়েছে এই অভিনব প্রতিবাদে। শিক্ষার্থীরা জানান, ১৯৯০ সালের পর আর চাকসু নির্বাচন হয়নি। তিন তলার ছাত্র সংসদের কার্যালয় থাকলেও এটি এখন ক্যানটিন আর কমিউনিটি সেন্টার হিসেবেই ব্যবহার হচ্ছে। কর্মচারীদের সন্তানদের বিয়ের বিভিন্ন অনুষ্ঠানও হয়েছে চাকসুতে। গণ-অভ্যুত্থানের পরবর্তী সময়ে শিক্ষার্থীরা বারবার চাকসু নির্বাচনের দাবি জানালেও প্রশাসন গড়িমসি করেছে। এ কারণে তাঁরা এ ভবনের নাম পাল্টে ভাতের হোটেল রেখেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন পোস্টে দিনভর মন্তব্য করেছেন শিক্ষার্থীরা। জানতে চাইলে ব্যানার সাঁটানোর উদ্যোগ নেওয়া অন্যতম শিক্ষার্থী আবীর বিন জাবেদ প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাকসু ভবনকে শুধু একটি ভাতের হোটেল বানিয়ে রেখেছে। এটা যে ছাত্র সংসদের কার্যালয়, তা বোঝার কোনো উপায় নেই। বারবার চাকসু নির্বাচন চাওয়ার পরও প্রশাসন গড়িমসি করছে। এ কারণে তাঁদের এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া। প্রশাসন যদি লজ্জিত হয় তাহলে তারা দ্রুত চাকসু নির্বাচনের আয়োজন করবে বলে তিনি আশা করছেন।

ব্যানার সরানোর বিষয়ে জানতে চাইলে আবীর বিন জাবেদ বলেন, ‘প্রশাসন এটি করেছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন। তবে তাঁরা থামবেন না। আগামীকাল (আজ মঙ্গলবার) আরও দুই গুণ বড় ব্যানার তাঁরা সাঁটাবেন।

চাকসুর ভবনের ব্যানার সাঁটানোর বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক তানভীর মোহাম্মদ হায়দার আরিফের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক কোরবান আলী প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে কে সাঁটিয়েছে বা কে সরিয়েছে, এ ব্যাপারে তিনি জানেন না। এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানাবেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

বৃষ্টি বাড়তে পারে চার বিভাগে

বঙ্গোপসাগরে একটা লঘুচাপ আছে। মৌসুমি বায়ুর প্রভাব তো আছেই। এই দুটি মিলে দেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোয় দুই দিন ধরে বৃষ্টি হচ্ছে। আজ মঙ্গলবারও এলাকাগুলোয় বেশি বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, আজ খুলনা, বরিশাল, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায় এবং বাকি বিভাগগুলোর কিছু জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। এ বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ার জন্য দুই দিন আগে দেশের চার বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছিল। আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্র জানাচ্ছে, আজ সারা দিন সেই সতর্কসংকেত বহাল থাকবে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ আফরোজা ইসলাম আজ প্রথম আলোকে বলেন, আগামীকাল (বুধবার) সতর্কসংকেত উঠে যেতে পারে। আজও দেশের উপকূলীয় এলাকাগুলোয় বৃষ্টি হতে পারে। তবে বৃষ্টি গতকালের চেয়ে কম হবে।

সর্বশেষ ২৪ ঘণ্টায় দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় কুষ্টিয়ায়, ৪৬ মিলিমিটার। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে, ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

দুই দিন ধরে উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টি বেড়েছে মূলত লঘুচাপের কারণে। তবে দেশের অন্যত্র, বিশেষ করে উত্তরবঙ্গে খুব বেশি বৃষ্টি হচ্ছে না।

গত জুন মাসের শুরুতে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি হলেও পরবর্তী সময়ে তা কমে আসে। মাসের মাঝামাঝি সময়ে দুই দিন টানা বৃষ্টির পর তা অনেকটাই কমে যায়। মাসের শেষ দিকে কিছু স্থানে বৃষ্টি হয়েছে। তবে বর্ষাকালে যেমনটা একটানা বৃষ্টি হয়, তা কয়েক দিন ধরেই দেখা যাচ্ছে না।

সম্পর্কিত নিবন্ধ