সাবেক স্ত্রীকে খুনের পর মেয়েকে দলিল বুঝিয়ে দিয়ে আত্মহনন
Published: 1st, July 2025 GMT
ময়মনসিংহ নগরীতে প্রাক্তন স্ত্রীকে ছুরিকাঘাতে হত্যার পর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন রাকিবুল করিম (৫০) নামে এক ব্যক্তি। আত্মহত্যার আগে তিনি জমিজমার দলিলপত্র তার মেয়েকে বুঝিয়ে দেন বলে জানান ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) ভোরে নগরের গুলকীবাড়ি এলাকার একটি বাসা থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার হয়। মরদেহ দুইটি ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহত রওশন আক্তার (৪২) গুলকীবাড়ি এলাকার ওই বাসায় মেয়েকে নিয়ে সাবলেট থাকতেন। তার বাবার বাড়ি নেত্রোকোণা সদরের রাজুর বাজার এলাকায়। রাকিবুল করিম (৫০) ময়মনসিংহ নগরের সেনবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। তিনি ওমান প্রবাসী ছিলেন।
আরো পড়ুন:
জুলাই আন্দোলনের মর্মবাণী ছিল ফ্যাসিবাদ বিলোপ করে নতুন বাংলাদেশ গঠন: প্রধান উপদেষ্টা
শৌচাগারে মিলল গৃহবধূর বস্তাবন্দি লাশ
পুলিশ জানায়, রাকিবুল ও রওশন দম্পতির দুই মেয়ে। তাদের বড় মেয়ে ঢাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে ও ছোট মেয়ে ময়মনসিংহ নগরের ক্যান্টনমেন্ট কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে পড়ালেখা করে। রওশন গুলকীবাড়ি এলাকার একটি বাসায় ছোট মেয়েকে নিয়ে সাবলেট থাকতেন। পারিবারিক কলহের জেরে মাস তিনেক আগে রাকিবুল ও রওশন আক্তারের ডির্ভোস হয়।
আজ মঙ্গলবার ভোরে রওশন আক্তার যে বাসায় ভাড়া থাকেন সে বাসায় প্রবেশ করেন রাবিবুল। তিনি রওশন আক্তারকে ছুরিকাঘাত করেন। মাকে ছুরিকাঘাত করতে দেখে ছোট মেয়ে রোজা আক্তার ভয়ে অন্য একটি কক্ষে আশ্রয় নেয়। রওশন আক্তারকে হত্যার পর রাকিবুল নিজে বাসার অপর একটি কক্ষে গিয়ে ফ্যানের সঙ্গে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে পুলিশ দুইটি মরদেহ উদ্ধার করে।
নিহত রওশন আক্তারের ভাতিজা ইকবাল হোসেন শাওন বলেন, “পারিবারিক কলহের জেরে দুইজনের ডিভোর্স হয়েছিল। সকালে রওশন আক্তারের ভাড়া বাসায় ঢুকে রাকিবুল তাকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেন। পরে তিনি মেয়েকে বেঁধে রেখে অন্য একটি রুমে গিয়ে দরজা লাগিয়ে আত্মহত্যা করেন। খবর পেয়ে নেত্রকোণা থেকে এসে মরদেহ দেখতে পাই।”
বাড়িটির দায়িত্বে থাকা রকিবুল ইসলাম লিটন বলেন, “১০-১২ বছর আগে বাসাটি ভাড়া নিয়ে বসবাস করতে শুরু করেন রওশন আক্তার ও তার মেয়েরা। তার বড় মেয়ে ঢাকায় থাকত। তাদের চালচলন ভালোই ছিল। হঠাৎ এমন ঘটনা ঘটবে ভাবতে পারিনি।”
ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম) আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, “গত ২৪ জুন ওমান থেকে দেশে আসেন রাকিবুল করিম। তিনমাস আগে স্ত্রী কর্তৃক তিনি তালাকপ্রাপ্ত হন। আজ বাসায় ঢুকে প্রথমে স্ত্রীকে হত্যা করেন রাবিবুল। এরপর নিজের জমিজমার দলিলপত্র মেয়েকে বুঝিয়ে দিয়ে নিজেও আত্মহত্যা করেন।”
তিনি আরো বলেন, “হত্যাকাণ্ডের পেছনে অন্য কোনো কারণ আছে কি না আমরা খতিয়ে দেখছি।”
ঢাকা/মিলন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য মরদ হ অভ য গ এল ক র মরদ হ
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহে গারো স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, একজন গ্রেপ্তার
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে গারো স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাত ১০টার দিকে জুগলি ইউনিয়নের নয়াপাগা গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মিলন মিয়া (২১)। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় অটোরিকশাচালক। এর আগে গতকাল রাতেই মূল অভিযুক্ত আবুল বাশার (২৫) ও তাঁর সহযোগী মিলন মিয়াকে আসামি করে হালুয়াঘাট থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। তবে মামলার প্রধান আসামিকে আজ সকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি।
আরও পড়ুনহালুয়াঘাটে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ১৫ ঘণ্টা আগেপুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ওই কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরী (১৫) নবম শ্রেণিতে পড়ে। গত সোমবার দুপুরে মিলন মিয়ার (২১) সঙ্গে সে একটি পার্কে বেড়াতে যায়। বিকেলের দিকে সেখান থেকে বাড়ি পৌঁছে দিতে কিশোরীটিকে বাশারের অটোরিকশায় তুলে দেন মিলন। এ সময় বাশার হালুয়াঘাট উপজেলা শহরে পূজামণ্ডপ দেখানোর কথা বলে মেয়েটিকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন। একপর্যায়ে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে স্কুলছাত্রীটিকে ধর্ষণ করেন। এরপর রাত ১১টার দিকে গামারীতলা এলাকায় তাকে নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশাচালক চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাকে বাড়িতে নিয়ে যান।
খবর পেয়ে পুলিশ গতকাল রাতেই আবুল বাশারের (২৫) বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ওই সময় অটোরিকশাটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
হালুয়াঘাট থাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টা চলছে। তাঁর সহযোগী মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মিলন জানিয়াছেন, মেয়েটি তাঁর বন্ধু।’
এদিকে হালুয়াঘাটে গারো ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলো। আজ বেলা তিনটায় ঢাকা শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অলিক মৃ।
আজ বুধবার সকালে নিজের ফেসবুকে পেজে পোস্ট দিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ওই ঘটনার নিন্দা ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মেয়েটি জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন। মেয়েটির মা বিএনপি পরিবারের সদস্য ও গত ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিলেও অন্য গারো নারীদের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন। অবশ্যই এই ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে।