হাবিপ্রবিসাসের অফিসে ছাত্রদলের হামলা, বিচার দাবি চবিসাসের
Published: 1st, July 2025 GMT
হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির (হাবিপ্রবিসাস) অফিসে ছাত্রদলের হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (চবিসাস)।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত ৮টায় চবিসাসের দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক সোহেল রানা স্বাক্ষরিত এক যৌথ বিবৃতিতে এ দাবি করেন চবিসাস সভাপতি জানে আলম ও সাধারণ সম্পাদক মাহফুজ শুভ্র।
চবিসাস নেতৃবৃন্দ বলেন, হাবিপ্রবিসাসের অফিসে ছাত্রদলের হামলা ও ভাংচুরের মতো ন্যাক্কারজনক ঘটনা নব্য ফ্যাসিবাদের প্রতিধ্বনি। এটি নিছক কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, বরং উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ক্যাম্পাসে ভয়ভীতির পরিবেশ সৃষ্টির মাধ্যমে সাংবাদিকদের কণ্ঠরোধের চেষ্টা, যা বিশ্ববিদ্যালয়ে মুক্তচিন্তা ও সত্যনিষ্ঠ সাংবাদিকতার জন্য হুমকিস্বরূপ।
আরো পড়ুন:
সাতক্ষীরায় সাংবাদিকদের ওপর হামলা, আহত ৩০
ইতিবাচক লেখনিতে ঘুরে দাঁড়াবে পুঁজিবাজার: ডিবিএ সভাপতি
বিবৃতিতে তারা বলেন, গণমাধ্যম ও প্রতক্ষ্যদর্শী সূত্রে আমরা জানতে পেরেছি, গত রবিবার (২৯ জুন) হাবিপ্রবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক পলাশ বার্নার্ড দাস, সদস্য নাজমুল ইসলাম ইমন ও তাদের অনুসারী শামীম আশরাফী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান হলে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ২৩তম ব্যাচের শিক্ষার্থী রোকনকে অবৈধভাবে হলে ওঠানোর চেষ্টা করেন। এ ঘটনার ভিডিও পরবর্তীতে সাংবাদিক সমিতি প্রকাশ করলে সোমবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় শামীম আশরাফী বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের ওপর হামলার উদ্দেশে ৮-১২ জন সন্ত্রাসীকে নিয়ে সাংবাদিক সমিতির অফিস ভাঙচুর ও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।
চবিসাস নেতৃবৃন্দ মনে করেন, এ ধরনের হামলা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় সরাসরি হস্তক্ষেপ। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনা নব্য ফ্যাসিবাদের প্রতিধ্বনি, যা সবার জন্য অশনিসংকেত। এ হামলার পিছনে ছাত্রদল নেতাদের সরাসরি ইন্ধন দৃশ্যমান। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের সহিংসতা কেবল নিরাপত্তাকেই নয়, স্বাধীন সাংবাদিকতাকেও চরম হুমকির মুখে ফেলে।
এ ঘটনায় জড়িতদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের প্রতি আহ্বান জানায় চবিসাস। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকেও এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে চবিসাস।
ঢাকা/মিজান/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল র হ ব প রব
এছাড়াও পড়ুন:
তদন্ত ছাড়াই সাংবাদিককে মামলায় জড়ালো পুলিশ
বরিশালের গৌরনদী উপজেলার কটকস্থল এলাকায় জমি বিরোধের জেরে দুইপক্ষের দ্বন্ধের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে চাঁদাবাজি মামলার আসামি হয়েছেন মোল্লা ফারুক হাসান নামে এক সাংবাদিক।
তবে থানা পুলিশ অভিযোগের তদন্ত না করেই মামলাটি এজাহারভূক্ত করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী। এ ঘটনায় স্থানীয় সংবাদকর্মীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
আরো পড়ুন:
নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতিকে নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ
‘সিভিক ডিফেন্ডারস অব বাংলাদেশ’ ওয়েব পোর্টাল উদ্বোধন
ভুক্তভোগী মোল্লা ফারুক হাসান গৌরনদী প্রেসক্লাবের সদস্য ও দৈনিক খোলা কাগজ পত্রিকা এবং সময়ের কন্ঠস্বর অনলাইন নিউজ পোর্টালের স্থানীয় প্রতিনিধি।
মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে ভুক্তভোগী মোল্লা ফারুক হাসান অভিযোগ করে বলেন, “গত কয়েকদিন আগে কটকস্থল বাসষ্ট্যান্ড সংলগ্ন আরিফ ফিলিং স্টেশনের সামনে স্থানীয় হারুন-অর রশিদ বেপারী ও মো. হিরা মাঝি গংদের মধ্যে উত্তেজনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন থানা পুলিশ। এরপর সেখানে আমি সংবাদ সংগ্রহের জন্য যাই। পরবর্তীতে পুরো ঘটনা নিয়ে সচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।”
তিনি বলেন, “ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে হারুন-অর রশিদ বেপারী তার প্রতিপক্ষ মো. হিরা মাঝিসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। সংবাদ প্রকাশের জেরে ওই অভিযোগের মধ্যে আমার নাম জড়িয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু রহস্যজনক কারনে থানা পুলিশ ওই অভিযোগের কোনো তদন্ত না করেই আমাকে আসামি করে ফিলিং স্টেশনে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবির লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে এজাহারভূক্ত করেন।”
তিনি আরো বলেন, “যেখানে সাধারণত হুমকি-ধামকির বিষয়ে থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে আগে তদন্ত প্রসঙ্গটি উত্থাপণ করে থানা পুলিশ। সেখানে ঘটনার সময় থানা পুলিশ ওই ফিলিং স্টেশনে উপস্থিত থাকা সত্ত্বেও মনগড়াভাবে হামলা, ভাঙচুর ও চাঁদা দাবির লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তদন্ত ছাড়া তড়িঘড়ি করে আমাকে জড়িয়ে মামলা দায়ের হওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ রহস্যজনক।” মিথ্যা মামলা থেকে রেহাই পেতে তিনি (সাংবাদিক) সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এ ব্যাপারে মামলার বাদি হারুন-অর রশিদ বেপারীর ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
সাংবাদিককে আসামি করার বিষয়ে গৌরনদী মডেল থানার ওসি মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, “একটা মামলা হয়েছে। এখন তদন্ত করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
বিষয়টি নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরনদী সার্কেল) শারমিন সুলতানা রাখি বলেন, “পেট্রোল পাম্প নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষ সংবাদকর্মীদের দিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে এবং গৌরনদী থানার ওসির বিরুদ্ধে মিথ্যা মনগড়া সংবাদ প্রকাশিত করিয়েছে। একটি পক্ষ ওই ঘটনা নিয়ে প্রথমে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে অভিযোগের ভিত্তিতে মামলাটির এজাহার দায়ের করা হয়।”
তিনি বলেন, “তদন্ত করার আগেই বিভিন্ন জায়গা থেকে ফোন আসার কারণে মামলাটি এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। মামলার আসামিদের মধ্যে এক সাংবাদিক রয়েছে বলে জানা গেছে। সাংবাদিক মোল্লা ফারুক যদি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকে, তাহলে তার কিছুই হবে না।”
তিনি আরো বলেন, “ওই সাংবাদিক (মোল্লা ফারুক) আমার কাছে এসেছিল। তাকে আমি বলেছি, আপনি যদি ঘটনার সঙ্গে জড়িত না থাকেন, তাহলে আপনাকে পুলিশ খোঁজবেও না, আপনি নিশ্চিত থাকেন।”
অপরদিকে, তদন্ত ছাড়া গৌরনদী প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিক মোল্লা ফারুক হাসানকে মামলায় আসামি করায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ফোরামের (বিএমএসএফ) ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান আহমেদ আবু জাফর ও বরিশাল সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি নিকুঞ্জ বালা পলাশ, সাধারণ সম্পাদক শাহিন হাসানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দরা। তারা অনতিবিলম্বে ওই সাংবাদিককে মামলা থেকে অব্যাহতি ও দায়ী পুলিশ কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের কাছে জোর দাবি করেছেন।
এছাড়াও পৃথক বিবৃতিতে একই দাবি করেছেন বাংলাদেশ গ্রামীণ সাংবাদিক সংগঠন, গৌরনদী প্রেসক্লাব, কালকিনি সাংবাদিক ফোরাম, আগৈলঝাড়া প্রেসক্লাব ও রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতৃবৃন্দরা।
ঢাকা/পলাশ/মেহেদী