যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বই ফাউন্ডেশন ঘোষণা করেছে ৭৬তম ‘ন্যাশনাল বুক অ্যাওয়ার্ডসের’ ফাইনালিস্টদের নাম। ফিকশন, নন-ফিকশন, কবিতা, অনূদিত সাহিত্য ও নবীন সাহিত্য—পাঁচটি বিভাগে মনোনীত হয়েছেন সমকালীন মার্কিন ও বিশ্বসাহিত্যের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন লেখক। পুরস্কার দেওয়া হবে নিউইয়র্কে আয়োজিত এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে। প্রত্যেক বিজয়ী পাবেন ১০ হাজার মার্কিন ডলার, একটি ব্রোঞ্জ মেডেল ও একটি ভাস্কর্য। প্রত্যেক ফাইনালিস্ট পাবেন এক হাজার ডলার ও একটি ব্রোঞ্জ মেডেল।

ফিকশন বিভাগে মনোনীত হয়েছে রাবিহ আলামেদ্দিনের ‘দ্য ট্রু ট্রু স্টোরি অব রাজা দ্য গালিবল (অ্যান্ড হিজ মাদার)’, মেঘা মজুমদারের ‘আ গার্ডিয়ান অ্যান্ড আ থিফ’, ক্যারেন রাসেলের ‘দ্য অ্যান্টিডোট’, ইথান রাদারফোর্ডের ‘নর্থ সান: অর, দ্য ভয়েজ অব দ্য অয়েলশিপ এস্থার’ এবং ব্রায়ান ওয়াশিংটনের ‘পালাভার’।

নন-ফিকশন বিভাগে স্থান পেয়েছে ওমর এল আখাদের ‘ওয়ানডে, এভরিওয়ান উইল হ্যাভ অলওয়েজ বিন এগেইনস্ট দিস’, জুলিয়া ইয়োফের ‘মাদারল্যান্ড: আ ফেমিনিস্ট হিস্টোরি অব মডার্ন রাশিয়া, ফ্রম রেভল্যুশন টু অটোক্রেসি’, ইয়িইউন লির ‘থিংস ইন ন্যাচার মেয়ারলি গ্রো’, ক্লডিয়া রোর ‘ওয়ার্ড অব দ্য স্টেট: দ্য লং শ্যাডো অব আমেরিকান ফস্টার কেয়ার’ এবং জর্ডান থমাসের ‘হোয়েন ইট অল বার্নস: ফাইটিং ফায়ার ইন আ ট্রান্সফর্মড ওয়ার্ল্ড’।

কবিতা বিভাগে মনোনয়ন পেয়েছে গ্যাব্রিয়েল ক্যালভোকোরেসির ‘দ্য নিউ ইকোনমি’, ক্যাথি লিন চের ‘বিকামিং ঘোস্ট’, টিয়ানা ক্লার্কের ‘স্কর্চ আর্থ’, রিচার্ড সিকেনের ‘আই ডু নো সাম থিংস’ এবং প্যাট্রিসিয়া স্মিথের ‘দ্য ইন্টেনশন অব থান্ডার’।

অনূদিত সাহিত্য বিভাগে মনোনীত হয়েছে ডেনিশ লেখক সোলভে ব্যালের ‘অন দ্য ক্যালকুলেশন অব ভলিউম (তৃতীয় খণ্ড)’—অনুবাদ করেছেন সোফিয়া হার্সি স্মিথ ও জেনিফার রাসেল; আর্জেন্টাইন লেখক গ্যাব্রিয়েলা কাবেসন কামারার ‘উই আর গ্রিন অ্যান্ড ট্রেম্বলিং’—অনুবাদক রবিন মায়ার্স; ডাচ লেখক অ্যানজেট দাঞ্জের ‘দ্য রিমেম্বারড সোলজার’—অনুবাদক ডেভিড ম্যাককে; উজবেক ঔপন্যাসিক হামিদ ইসমাইলভের ‘উই কম্পিউটার: আ গজল নভেল’—অনুবাদক শেলি ফেয়ারওয়েদার-ভেগা; এবং ফরাসি লেখক নেইজ সিনোর ‘স্যাড টাইগার’—অনুবাদক নাটাশা লেহরার।

ছবি: সংগৃহীত.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অন ব দ ফ কশন

এছাড়াও পড়ুন:

চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করা হয় মুক্তিযোদ্ধা যোগেশ ও সুবর্ণাকে

রংপুরের তারাগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা ও অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক যোগেশ চন্দ্র রায় (৭৫) ও তার স্ত্রী সুর্বণা রায়কে (৬০) চাইনিজ কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে নিজ বাড়িতে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। রবিবার সকালে রহিমাপুর গ্রামের বাড়ি থেকে তাদের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।

পুলিশ জানায়, চাইনিজ কুড়াল দিয়ে যোগেশ রায়ের মাথার পেছনে এবং সুবর্ণা রায়ের কপালে কোপ মেরে মৃত্যু নিশ্চিত করে দুর্বৃত্তরা। এই হত্যাকাণ্ড পরিকল্পিত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

গ্রামবাসী ও জনপ্রতিনিধিরা জানান, যোগেশ চন্দ্র রায় উত্তর রহিমাপুর নয়াহাট মুক্তিযোদ্ধা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন ও সাবেক প্রধান শিক্ষক। ২০১৭ সালে তিনি অবসরে যান। তার দুই ছেলে চাকরির কারণে ঢাকা থাকেন। ফলে স্বামী-স্ত্রী দুজনই গ্রামে একা থাকতেন।

ঘটনাস্থলে গিয়ে রংপুরের পুলিশ সুপার, মারুফাত হোসেন গণমাধ্যমে বলেন, ‘‘শনিবার (৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টা ২২ মিনিটে ছোট ছেলে রাজেশ খান্না চন্দ্র রায়ের সঙ্গে শেষবার কথা হয় যোগেশের। রবিবার সকাল ৭টার দিকে দিনমজুর দীপক চন্দ্র রায় প্রতিদিনের মতো বাড়িতে কাজ করতে গিয়ে ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে সন্দেহ করেন। প্রতিবেশীদের ডেকে মই বেয়ে ভেতরে ঢুকে তিনি খাবার ঘরে যোগেশ রায়ের এবং রান্নাঘরে সুর্বণা রায়ের রক্তাক্ত লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।

পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আলামত সংগ্রহ করে সুরতহাল শেষে বিকেলে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। এ সময় ডিবি, সিআইডি, পিবিআই এবং র‍্যাব-১৩ এর কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ঘটনাস্থলে গিয়েছেন রংপুর-২ আসনের বিএনপির প্রার্থী মোহাম্মদ আলী সরকার এবং জামায়াতের প্রার্থী এটিএম আজহারুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় বিএনপি, জামায়াত নেতাকর্মী ও উপজেলার মুক্তিযোদ্ধারা।

এটিএম আজহারুল ইসলাম জানান, নিজ বাড়িতে মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে এভাবে কুপিয়ে হত্যা করা দেশে আইনশৃঙ্খলার পরিস্থিতির চরম অবনতির ইঙ্গিত। তাই দ্রুত এ ঘটনার রহস্য উন্মোচন করে অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন তিনি।

এ দিকে দুপুরেই কর্মস্থল থেকে ছুটে আসেন পুলিশে কর্মরত নিহতের দুই ছেলে। মেঝেতে বাবা-মায়ের মরদেহ দেখে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েন তারা। তবে বড় ছেলের স্ত্রী কল্যাণী রায় বলেন, ‘‘আমার শ্বশুর-শাশুড়ি খুব ভালো মানুষ ছিলেন। চাকরির সুবাদে আমরা ঢাকা থাকি। প্রতিনিয়ত তাদের সাথে টেলিফোনে যোগাযোগ হয় আমাদের। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেই যখন শুনি তাদের হত্যা করা হয়েছে বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারিনি।’’

শ্বশুর-শাশুড়িকে পরিকল্পিতভাবে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। দ্রুত হত্যাকারীদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন কল্যাণী রানী।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, বিজয়ের মাসে আমাদের মুক্তিযোদ্ধা ও তার স্ত্রীকে এভাবে হত্যা করা কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। দ্রুত তদন্ত করে হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান তিনি।

রংপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হোসেন বলেন, “চুরি-ডাকাতির কোনো আলামত নেই। বাড়ির উত্তর দিকের প্রাচীর টপকে ঘাতকরা ঢুকতে পারে। খুব দ্রুত ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তার করা হবে।’’

ঢাকা/আমিরুল//

সম্পর্কিত নিবন্ধ