সোনারগাঁয়ে ব্যবসায়ী অপহরণ, হাতুড়িপেটার পর মুক্তিপণে মুক্তি
Published: 9th, October 2025 GMT
সোনারগাঁয়ের মিরেরটেক বাজার থেকে মো. মুকবিল হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর হাতুড়ি পেটার অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার ভোরে ব্যবসায়িক কাজে ঢাকা যাওয়ার পথে সে অপহরণের শিকার হন। এ ঘটনার পর অপহৃতের পরিবারের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা মুক্তিপল আদায় করে অপহরণকারীরা।
বর্তমানের অপহৃত ব্যবসায়ী সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এঘটনায় অপহৃত ব্যবসায়ীর ছোট ভাই শাহ আলম বাদি হয়ে গত বুধবার রাতে দু’জনকে আসামি করে সোনারগাঁ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
জানা যায়, উপজেলার জামপুর ইউনিয়নের আলমপুরা গ্রামের মৃত আব্দুল বাছেদের ছেলে মো.
গত মঙ্গলবার ভোরে ঢাকা যাওয়ার পথে ওই ইউনিয়নের মিরেরটেক বাজার এলাকায় পৌছালে আগে থেকে উৎ পেতে থাকা একই এলাকার আব্দুল মান্নানের ছেলে আতাবুর রহমান ও রুস্তম আলীর ছেলে পনির হোসেনসহ অজ্ঞাতনামা ৫-৬ জনের একটি দল ব্যবসায়ী মুকবিল হোসেনকে টেনে হেচড়ে জোরপূর্বক কালো রঙের একটি মাইক্রোবাসে উঠিয়ে চোখ ও হাত পা বেধে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে যায়।
এসময় তার সঙ্গে থানা নগদ ১০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। এক পর্যায়ে তাকে শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাতুড়ি পেটা করে। এতে তার হাত, পা, বুক ও পিঠে জখম হয়। পরে তার স্ত্রীর কাছে এক লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
অপহরণকারীরা ব্যবসায়ীর পরিবারের কাছ থেকে তার বিকাশ নাম্বারে ৬০ হাজার টাকা পাঠায়। মুক্তিপণ দেওয়ার পর ব্যবসায়ীকে ওইদিন বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে দেওয়ানবাগে হাত, পা ও চোঁখ বাধা অবস্থায় ফেলে যায়।
পরে অপহৃত ব্যবসায়ী মহাসড়কের চলাচলরত লোকজনের সহযোগিতায় হাত, পা ও চোঁখের বাধন খুলে তাদের মোবাইলে পরিবারকে ডেকে আনেন। এক পর্যায়ে তাকে উদ্ধার করে প্রথমে একটি বেসরকারী হাসপাতাল পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়।
দু’দিন চিকিৎসা শেষে বুধবার বাড়িতে আসলে পুনরায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। পরে তাকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় অপহৃত ব্যবসায়ীর বড় ভাই শাহ আলম বাদি হয়ে সোনারগাঁ থানায় বুধবার রাতে অভিযোগ দায়ের করেন।
অপহৃত ব্যবসায়ী মো.মুকবিল হোসেন জানান, তাকে আতাবুর রহমান ও পনির হোসেন মীরেরটেক এলাকায় মাইক্রোবাসে জোরপূর্বক ধাক্কা দিয়ে তুলে নেয়। পরে গাড়িতে আরো ৫-৬জন ছিল। হাত,পা ও চোখ বেধে তাকে কোথায় নিয়ে গেছেন তা জানেন না।
এক পর্যায়ে তাকে হাতুড়ি পেটা করে তার মোবাইল ফেলে পরিবারের কাছ থেকে ৬০হাজার টাকা বিকাশে নিয়েছেন। এঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দাবি করেন।
অভিযুক্ত পনির হোসেনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, জমি সংক্রান্ত বিরোধে তাদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনিও অপহরণের ঘটনা শুনেছেন। এঘটনার সঙ্গে তাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই।
সোনারগাঁ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. রাশেদুল হাসান খান বলেন, অপহৃত ব্যবসায়ীর ভাই থানায় অভিযোগ দিয়েছেন। ঘটনার আদ্যোপান্ত পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে। তদন্ত শেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ব যবস য় ন র য়ণগঞ জ অপহ ত ব যবস য় ব যবস য় র স ন রগ পর ব র ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
টেকনাফে সন্ধ্যায় খেলার মাঠ থেকে ছয় শিশু–কিশোরকে অপহরণ
কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ায় খেলার সময় ছয় শিশু–কিশোরকে অপহরণ করেছে অস্ত্রধারী দুর্বৃত্তরা। পরে তাদের মধ্যে দুজন কৌশলে পালিয়ে এলেও চারজন এখনো জিম্মি রয়েছে।
এ ঘটনা ঘটে আজ রোববার সন্ধ্যা ৬টার দিকে বাহারছড়া ইউনিয়নের দক্ষিণ শিলখালী পূর্বপাড়ায়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাফেজ আহমদ।
স্থানীয় ইউপি সদস্য হাফেজ আহমদ জানিয়েছেন, সন্ধ্যায় শিশু–কিশোরদের খেলাধুলার সময় পাহাড় থেকে নেমে আসা দুর্বৃত্তরা অস্ত্রের মুখে ছয়জনকে জিম্মি করে গহিন পাহাড়ে নিয়ে যায়। তাদের বয়স ১৩ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে।
হাফেজ আহমদ বলেন, ‘স্থানীয় বাসিন্দারা পুলিশকে অবহিত করেছে। আমরা ও পুলিশ মিলে অপহৃত শিশুদের উদ্ধারে পাহাড়ে তল্লাশি চালাচ্ছি। রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত চার শিশুর খোঁজ মেলেনি। মুক্তিপণ আদায়ের উদ্দেশ্যেই অপহরণ করা হয়েছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।’
বাহারছড়া পুলিশ তদন্তকেন্দ্রের ইনচার্জ পরিদর্শক দুর্জয় বিশ্বাস বলেন, ‘শিশু–কিশোরদের অপহরণের খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তবে রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কেউ আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেনি। অপহৃত শিশুদের উদ্ধারে আমরা কাজ করছি।’
কক্সবাজার জেলা পুলিশ ও ভুক্তভোগীদের তথ্য অনুযায়ী, গত ২১ মাসে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ২৭২ জনকে অপহরণ করা হয়েছে। অধিকাংশই মুক্তিপণের বিনিময়ে ফিরে এসেছে।