সাভারে অ্যাম্বুলেন্সে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ হয়ে চারজন নিহতের ঘটনায় দুজন গ্রেপ্তার
Published: 11th, January 2025 GMT
ঢাকার সাভারে বাসের ধাক্কায় অ্যাম্বুলেন্সে অগ্নিকাণ্ডে চারজন নিহতের ঘটনায় উভয় পরিবহনের চালকদের গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাঁদের আজ শনিবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন টাঙ্গাইলের গোপালপুর থানার সুতী লাংগল জোরা গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে জাহিদ হাসান (২১)। তিনি অ্যাম্বুলেন্সচালক। অপরজন দিনাজপুরের বীরগঞ্জ থানার চাওলিয়া গ্রামের মৃত গোলাম সরোয়ারের ছেলে জহিরুল ইসলাম (৪৮)। তিনি শ্যামলী পরিবহনের চালক।
সাভার হাইওয়ে থানা–পুলিশ জানায়, গত বুধবার রাতে গোপালপুর থেকে রাজধানীর একটি হাসপাতালে অসুস্থ ছেলে ফুয়াদ সিদ্দিকীকে চিকিৎসা করানোর জন্য অ্যাম্বুলেন্সে আসছিলেন ফারুক হোসেন সিদ্দিকী ও মহসিনা বেগম দম্পতি। ওই দিন রাত দুইটার দিকে তাঁদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্সটি সাভার উপজেলায় পুলিশ টাউন এলাকায় পৌঁছালে সড়ক বিভাজকের সঙ্গে অ্যাম্বুলেন্সটির ধাক্কা লাগে। পরে পেছন থেকে ঝুমুর ও শ্যামলী পরিবহনের দুটি বাস সেটিকে ধাক্কা দেয়। এতে আগুন ধরে যায় অ্যাম্বুলেন্সটিতে। এ ছাড়া বাস দুটিতেও আগুন ধরে যায়। এ সময় সেখান দিয়ে যাওয়া খড় বহনকারী একটি ট্রাকেও আগুন ধরে যায়। বাস দুটি থেকে যাত্রীরা দ্রুত নেমে যান। এ সময় অন্তত সাতজন আহত হন। অ্যাম্বুলেন্সে দগ্ধ হয়ে ফারুক, মহসিনা বেগম, ফুয়াদ সিদ্দিকীসহ মহসিনার বড় বোন মাহফুজা বেগম ওরফে সীমা আগুনে দগ্ধ হয়ে মারা যান।
পুলিশ জানায়, এ ঘটনায় সাভার হাইওয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মো.
সাভার হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সওগাতুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে জাহিদ ও জহিরুলকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ শনিবার বেলা একটার দিকে তাঁদের আদালতে পাঠানো হয়। ঝুমুর পরিবহনের চালককে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ইন্টারনেটের গতিতে নতুন রেকর্ড গড়ল জাপান
ইন্টারনেটের গতি নিয়ে নতুন মাইলফলক ছুঁয়েছে জাপান। দেশটির ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশনস টেকনোলজি (এনআইসিটি) দাবি করেছে, তারা পরীক্ষামূলকভাবে প্রতি সেকেন্ডে ১ দশমিক শূন্য ২ পেটাবিট গতিতে তথ্য স্থানান্তর করতে সক্ষম হয়েছে, যা এ পর্যন্ত বিশ্বে সর্বোচ্চ।
এই গতির অর্থ হলো, এক সেকেন্ডেই পুরো নেটফ্লিক্স লাইব্রেরি কিংবা হাজার হাজার বার ইংরেজি উইকিপিডিয়ার বিশাল তথ্যভান্ডার ডাউনলোড করে নেওয়া যাবে। গবেষণা দলের ভাষ্য অনুযায়ী, পরীক্ষাটি পরিচালিত হয়েছে এনআইসিটির ফটোনিক নেটওয়ার্ক ল্যাবরেটরির উদ্যোগে। এতে অংশ নেয় জাপানের প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠান সুমিতোমো ইলেকট্রিক ও ইউরোপের কয়েকটি গবেষণাপ্রতিষ্ঠান। পরীক্ষায় ব্যবহার করা হয় ১৯ কোরবিশিষ্ট একটি বিশেষ অপটিক্যাল ফাইবার কেব্ল, যার ব্যাস মাত্র শূন্য দশমিক ১২৫ মিলিমিটার। প্রচলিত ইন্টারনেট কেব্লের মতোই। ডেটা পাঠানোর জন্য গবেষকেরা ব্যবহার করেন ৮৬ দশমিক ১ কিলোমিটার দীর্ঘ ফাইবার লুপ, যা ১৯টি পৃথক কোরে ২১ বার পুনরাবৃত্তি করে মোট ১ হাজার ৮০৮ কিলোমিটার দূরত্বে ১৮০টি স্বতন্ত্র তথ্যপ্রবাহ একযোগে পাঠানো হয়। এতে প্রতি কিলোমিটারে প্রতি সেকেন্ডে ১ দশমিক ৮৬ এক্সাবিট তথ্য স্থানান্তরের হার রেকর্ড হয়, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।
গবেষণায় ব্যবহৃত কেব্লটি তৈরি করেছে সুমিতোমো ইলেকট্রিক এবং এনআইসিটি নির্মাণ করেছে তথ্য প্রেরণের পূর্ণাঙ্গ প্রেরণব্যবস্থা। এতে ব্যবহৃত হয়েছে উন্নত মানের ট্রান্সমিটার, রিসিভার ও অন্যান্য উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উপকরণ। এনআইসিটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা প্রমাণ করতে চেয়েছি, বর্তমান অবকাঠামো ব্যবহার করেই দীর্ঘ দূরত্বে আলট্রা–হাই স্পিড ইন্টারনেটের সংযোগ সম্ভব।’
তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট গ্যাজেট–এর হিসাব অনুযায়ী, এই গতিতে ইংরেজি উইকিপিডিয়ার প্রায় ১০০ গিগাবাইট তথ্য মাত্র এক সেকেন্ডে ১০ হাজার বার ডাউনলোড করা সম্ভব। একই সময়ে নামিয়ে ফেলা যাবে উচ্চ রেজল্যুশনের ৮কে ভিডিও ফাইলও। এই গবেষণার তাৎপর্য প্রসঙ্গে প্রযুক্তিবিদেরা বলছেন, কেবল অবকাঠামো বদলানো ছাড়াই ইন্টারনেটের গতি বিপুলভাবে বাড়ানো যে সম্ভব, তা আবারও প্রমাণ করল জাপান। বিশ্বজুড়ে ভিডিও স্ট্রিমিং, ক্লাউড কম্পিউটিং ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাভিত্তিক প্রযুক্তির প্রসারে ডেটা ব্যবহারের পরিমাণ দ্রুত বাড়ছে। এমন বাস্তবতায় উচ্চগতির নির্ভরযোগ্য সংযোগ নিশ্চিত করতে ফাইবার অবকাঠামোর সক্ষমতা বাড়ানোর এই প্রচেষ্টা গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তবে এই প্রযুক্তি সাধারণ ব্যবহারকারীদের জন্য কবে নাগাদ উন্মুক্ত হবে, তা এখনো নিশ্চিত করেনি এনআইসিটি।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস