ইরান-সমর্থিত হুতিরা ইসরায়েলি বিমানবন্দর ও সামরিক স্থাপনার পাশাপাশি একটি মার্কিন যুদ্ধ জাহাজকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। বৃহস্পতিবার হুতিদের পক্ষে এ দাবি করা হয়েছে।

হুতিদের সামরিক মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানিয়েছেন, হুতিরা তেল আবিবের দক্ষিণে ‘বেন গুরিওন বিমানবন্দরে... একটি ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে.

.. এবং একটি সামরিক লক্ষ্যবস্তু লক্ষ্য করে’ হামলা চালিয়েছে।

এর আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, ‘ইসরায়েলি ভূখণ্ডে প্রবেশের আগে’ ইয়েমেন থেকে ছোড়া দুটি ক্ষেপণাস্ত্র তারা প্রতিহত করেছে।

ইয়াহিয়া সারি বলেছেন, বিদ্রোহীরা “লোহিত সাগরে শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজগুলোকেও লক্ষ্যবস্তু করেছিল, যার মধ্যে আমেরিকান বিমানবাহী রণতরী (ইউএসএস হ্যারি এস) ট্রুম্যানও ছিল। আমাদের দেশের বিরুদ্ধে চলমান মার্কিন আগ্রাসনের প্রতিশোধ হিসেবে এই হামলা চালানো হয়েয়ছে।”

১৫ মার্চ যুক্তরাষ্ট্র হুতিদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা চালিয়ে ‘বৃহৎ পরিসরে অভিযান’ শুরু করে। গাজা যুদ্ধের জেরে বিদ্রোহীরা পুনরায় আক্রমণ শুরু করার হুমকি দেওয়ার পর ওয়াশিংটন লোহিত সাগর এবং এডেন উপসাগরের গুরুত্বপূর্ণ জাহাজ রুটে জাহাজের উপর গুলি চালানো বন্ধ না করা পর্যন্ত হুতিদের ওপর ব্যাপক শক্তি প্রয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

ঢাকা/শাহেদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে কতটা এগিয়ে চীন

চীন চলতি মাসে প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সমাপ্তি উপলক্ষে বিশাল সামরিক কুচকাওয়াজের আয়োজন করেছে। সেখানে যুদ্ধজাহাজ–বিধ্বংসী  হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রদর্শনী করেছে তারা। এ প্রদর্শনীর মাধ্যমে একটি পরোক্ষ সতর্কবার্তাও দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ ভবিষ্যতে কোনো সংঘাত হলে যুক্তরাষ্ট্রের ১ হাজার ৩০০ কোটি ডলারের বিমানবাহী রণতরি সমুদ্রের তলদেশে হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বিরোধী হিসেবে শুধু চীনই নয়, রাশিয়াও এ ধরনের অস্ত্র তৈরিতে বিনিয়োগ করছে। তারাও হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র তৈরিতে অগ্রগতি অর্জন করেছে। উচ্চগতি ও চলাচলের বিশেষ ক্ষমতার কারণে এগুলো গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তু ধ্বংসে আদর্শ অস্ত্র বলে বিবেচনা করা হয়।

তবে চীনের তুলনায় যুক্তরাষ্ট্র হাইপারসনিক অস্ত্র তৈরিতে এখনো পিছিয়ে আছে। যদিও বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশটি এ ক্ষেত্রে উন্নতি করছে। ওয়াশিংটনভিত্তিক চিন্তন প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) জ্যেষ্ঠ ফেলো টম কারাকো বলেন, ‘আমরা যখন সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমে ব্যস্ত ছিলাম, তখন চীন এ–জাতীয় প্রযুক্তি নিয়ে গুরুত্বসহকারে কাজ করেছে। তারা এ বিষয়ে এগিয়ে রয়েছে ঠিক। তবে আমরাও দ্রুত উন্নতি করছি।

হাইপারসনিক অস্ত্র শব্দের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি গতিতে ছুটতে পারে। এ বৈশিষ্ট্যের কারণে এগুলোর বিশেষ সামরিক সুবিধা রয়েছে। তবে এতে যে তাপ উৎপন্ন হয়, তা অনেক সময় নকশায় সমস্যার সৃষ্টি করে।

বিশ্বজুড়ে এখন হাইপারসনিক অস্ত্রের দুটি প্রধান ধরন নিয়ে গবেষণা চলছে। এর একটি হলো রকেটচালিত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র, আর অন্যটি হলো হাইপারসনিক গ্লাইড যান। এগুলো বায়ুমণ্ডলে উৎক্ষেপিত রকেট থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে হাইপারসনিক গতিতে চলে।

এ দুই ধরনের ক্ষেপণাস্ত্রের গতি ও গতিপথ পরিবর্তনের ক্ষমতা রয়েছে। ফলে প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দিয়ে এগুলোকে আটকানো কঠিন হয়ে দাঁড়িয়েছে। এসব ক্ষেপণাস্ত্রের আদর্শ লক্ষ্যবস্তু হলো অত্যন্ত সুরক্ষিত স্থান বা এমন জায়গা, যেখানে আঘাত করতে সঠিক সময় গুরুত্বপূর্ণ। যেমন বিমানবাহী রণতরি বা উচ্চপদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের ওপর এসব ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো যেতে পারে।

চীন ও রাশিয়া হাইপারসনিক অস্ত্রপ্রযুক্তিতে উন্নতি করছে বলে মনে করা হয়। তবে মাঝেমধ্যে বিভিন্ন অতিরঞ্জিত দাবির কারণে তাদের প্রকৃত সামর্থ্য যাচাই করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

৩ সেপ্টেম্বরের সামরিক কুচকাওয়াজে চীন বিভিন্ন ধরনের হাইপারসনিক অস্ত্র প্রদর্শন করেছে। এগুলোর মধ্যে ওয়াইজে-১৭, ওয়াইজে-১৯ এবং ওয়াইজে-২০ ক্ষেপণাস্ত্র অন্তর্ভুক্ত ছিল। সংঘাতের সময় যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধজাহাজ ডুবিয়ে দিতে বেইজিং এসব ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করতে পারে।

এসব ক্ষেপণাস্ত্রের সব নকশা এখনো পরীক্ষা–নিরীক্ষার ধাপ অতিক্রম করেনি। বিভিন্ন সময় সামনে আসা তথ্য অনুযায়ী, ২০২০ সাল থেকে চীন তাদের সেনাবাহিনীতে ডিএফ-জেডএফ হাইপারসনিক গ্লাইড যান সরবরাহ শুরু করেছে।

এ নিয়ে চীনের গভীর মনোযোগের আরেকটি নিদর্শন হলো হাইপারসনিক অস্ত্র তৈরি ও পরীক্ষায় তাদের ব্যাপক বিনিয়োগ। ২০১৮ সালে তৎকালীন জ্যেষ্ঠ মার্কিন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা মাইকেল গ্রিফিন এক সম্মেলনে বলেছিলেন, গত দশকে যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে চীন ২০ গুণ বেশি হাইপারসনিক পরীক্ষা চালিয়েছে।

রুশ বিমানবাহিনীর মিগ-৩১ যুদ্ধবিমানে বসানো হয়েছে কিনঝাল হাইপারসনিক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রের প্রতিযোগিতায় যুক্তরাষ্ট্রের চেয়ে কতটা এগিয়ে চীন