বুমরার না খেলা স্টেইনের কাছে পাগলামি, বিশ্বাস হয় না শাস্ত্রীর
Published: 3rd, July 2025 GMT
ইংল্যান্ড সিরিজে বুমরা তিনটি ম্যাচের বেশি খেলবেন না—এই ঘোষণা আগেই দিয়ে রেখেছিল ভারতের টিম ম্যানেজমেন্ট। যশপ্রীত বুমরা নিজেও এ কথা বলেছেন। এর পরও সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টে ভারতের একাদশে বুমরা না থাকাতে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন সাবেক ক্রিকেটাররা।
হেডিংলিতে প্রথম টেস্টে ভারত ৫ উইকেট হেরেছে। সিরিজে ফেরার জন্য তাই এজবাস্টন টেস্ট জেতার বিকল্প নেই। আর এই ম্যাচের আগে সাত দিন বিশ্রামে ছিলেন বুমরা। তবু কেন গুরুত্বপূর্ণ এই টেস্টে খেলছেন না বুমরা, তা বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে ভারতের সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রীর।
স্কাই স্পোর্টসকে শাস্ত্রী বলেছেন, ‘ভারতের সাম্প্রতিক পারফরম্যান্স হিসেবে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা টেস্ট ম্যাচ। আপনি নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তিনটি হেরেছেন, এখানে প্রথম টেস্টও হেরেছেন, স্বাভাবিকভাবেই আপনি আবার জয়ের পথে ফিরতে চান; কিন্তু দলে বিশ্বের সেরা ফাস্ট বোলার আছেন এবং সাত দিন বিশ্রামের পরও আপনি তাকে বসিয়ে রাখেন—বিশ্বাস করা সত্যিই কঠিন।’
ভারতের সাবেক কোচ রবি শাস্ত্রী.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কাফকার পৃথিবী ও তার লুকানো বিদ্রুপ
ফ্রানৎস কাফকাকে নিয়ে সবচেয়ে মোক্ষম ভাস্কর্যটি আছে প্রাগের ওল্ড টাউন আর ইহুদি কোয়ার্টারের একদম মাঝামাঝি জায়গায়। মাথাবিহীন একটা দেহের কাঁধে বসে আছেন মাথাওয়ালা কাফকা। ক্লান্ত চোখ। ডান হাতের তর্জনী কিছু নির্দেশ করছে।
ইয়ারোস্লাভ রোনার এই ভাস্কর্যটির অবস্থান খেয়াল করার মতো, যা একসঙ্গে ধারণ করেছে কাফকার দ্বৈততা ও দ্বিধার মনস্তত্ত্ব; পরিবার ও সমাজের প্রতি এক রকমের দায়বদ্ধতার বিপরীতে তার বিচ্ছিন্নতার ভারী বোধ। রোনা নির্মিত ভাস্কর্যটির কাছেই এক ধারে আছে স্প্যানিশ সিনেগগ, যেমন আরেক পাশে চার্চ অব দ্য হোলি স্পিরিট। দুটি কথোপকথন নামে লেখকের একটি ছোটগল্প থেকে অনুপ্রাণিত এই ভাস্কর্য আসলে তার নায়কদের নিয়ে আমাদের প্রচল ধারণাকেই ইশারা করে: সমাজ ও সিস্টেমের ইঁদুরধরা কলে ফেঁসে যাওয়া ভঙ্গুর সব মানুষ, যাদের জগৎ ধূসর ও মাথায় ব্যাপক যন্ত্রণা দৃশ্যত মাথাকেই গায়েব করে দিয়েছে, আবার চাকুরে জীবন তাকে দিয়েছে দায়িত্ব, নিজেকে নিয়ে ভাবার জন্য মাথা না থাকুক, সমাজের আরোপিত দায়িত্ব পালনের জন্য তাই তাদের আরেকটি সত্তার অনুগত মাথা বহাল না থাকলে চলে না।
আমাদের অতি সিরিয়াস পাঠে, অতি পাঠে, অতিরিক্ত গবেষণায় কাফকা হয়তো প্রায় ছিবড়ে হয়ে গেছেন। তবু তিনি আজও প্রাসঙ্গিকতা হারাননি। বরং এই মিম কালচার ও গুজবের পৃথিবীতে আমাদের গ্লানি শুষে নেওয়ার চেষ্টা করে যেই কালো কৌতুক ও অবিরাম বিদ্রুপের স্রোত—প্রায় একশ বছর ধরে পঠিত হতে থাকা জার্মানভাষী লেখক হয়তো তার লেখায় ডেডপ্যান কমেডির আবরণে ভারিক্কি কিছু নয়, বরং লুকিয়ে রেখে গিয়েছিলেন জীবন নিয়ে আরও গভীর বিদ্রুপের ইশারা। একটু ভিন্নপাঠের চেষ্টা করলে তা ধরা যেতে পারে, যে, কাফকা হয়তো অত সিরিয়াসও নন, তার অস্বস্তিকর লেখাগুলো এক ধরনের রম্যই, জীবনের উপায়হীনতার প্রতি ছুড়ে দেওয়া বাঁকা হাসি।
মানুষ সিস্টেমের নিষ্পেষণ থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখতে নানান উপায়ে লড়াই করে। প্রতিবাদ, সমালোচনা, গোষ্ঠীগত লড়াই। কিন্তু যখন সে উপায়ও তার থাকে না, সে করে আত্মবিদ্রুপ। যেমন, এখানে বর্ণবাদিতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে মানুষ নিজেও এক সময় বর্ণবাদিতে পরিণত হয়ে যায়। মত প্রকাশের স্বাধীনতার দীর্ঘ লড়াই সফলতার দ্বারপ্রান্তে এসে আবিষ্কার করে সে নিজেই আর ভিন্নমত সহ্য করার অবস্থায় নেই; ব্যর্থতা ঢাকতে তখন সেও আত্মবিদ্রুপের বর্ম গায়ে তোলে। উন্মুক্ত পুঁজি ও তার মেকানিজম এমন একটা নাজুক জায়গায় নিয়ে মানুষকে দাঁড় করিয়েছে, যেখানে ভালো ও মন্দের প্রভেদকে একটা অকার্যকর ধারণা মনে হয়, সকলেই যার যার জায়গা থেকে নিজেকে ভিকটিম মনে করতে পারে। জীবন নানান উপায়ে তাকে ট্র্যাজিকমেডির দিকেই ঠেলছে প্রতিনিয়ত। যেন বা কাফকায়েস্ক জগতেরই আরও একটা কানাগলিতে সে উপায়হীন ঢুকে পড়ছে।
প্রাগে কাফকার স্ট্যাচু