নিউইয়র্কে মামদানিই ডেমোক্র্যাটদের মেয়র প্রার্থী
Published: 3rd, July 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের মেয়র পদে ডেমোক্রেটিক পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন জোহরান মামদানি। প্রাইমারিতে মামদানি জয় পেয়েছেন বলে গত মঙ্গলবার নিউইয়র্ক সিটি ইলেকশন বোর্ড নিশ্চিত করেছে। রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, এর মাধ্যমে প্রায় অপরিচিত এক তরুণের রাজনৈতিক উত্থানের পথ পরিষ্কার হলো।
মঙ্গলবার নিউইয়র্কের র্যাঙ্ক-চয়েস ভোটের ফল প্রকাশের পর দেখা যায়, তৃতীয় পর্বে মামদানি ৫৬ শতাংশ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তৃতীয় ধাপে জয় পেতে একজন প্রার্থীকে কমপক্ষে ৫০ শতাংশ ভোট পেতে হয়।
মামদানি (৩৩) নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য আইনসভার সদস্য হলেও স্বল্প পরিচিত হিসেবে মেয়র প্রার্থী হওয়ার প্রচারণা শুরু করেছিলেন। তিনি নির্বাচনে বর্তমান মেয়র এরিক অ্যাডামস, রিপাবলিকান প্রার্থী কার্টিস স্লিউয়া ও স্বতন্ত্র প্রার্থী জিম ওয়ালডেনের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। অ্যাডামস ২০২১ সালে ডেমোক্র্যাট প্রার্থী হিসেবে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। বিভিন্ন বিতর্কে জড়িয়ে গ্রহণযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হওয়ায় এবার তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হচ্ছেন।
মামদানির জন্ম উগান্ডায়। তিনি ভারতীয় বংশোদ্ভূত শিয়া মুসলিম পরিবারের সন্তান। নভেম্বরের নির্বাচনে জয়ী হলে তিনি নিউইয়র্ক নগরীর প্রথম মুসলিম মেয়র হবেন। তিনি ফিলিস্তিনপন্থি হিসেবে পরিচিত। স্বঘোষিত ‘গণতান্ত্রিক সমাজতন্ত্রী’। তাঁকে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘১০০ শতাংশ কমিউনিস্ট পাগল’ বলে অভিহিত করেছেন।
মামদানির এ জয় ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করেছে। দলের নেতাদের ধারণা, মামদানির দৃষ্টিভঙ্গি রিপাবলিকানদের আক্রমণের ‘সহজ লক্ষ্যস্থল’ হয়ে উঠতে পারে।
মনোনয়ন নিশ্চিত হওয়ার পর ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করা হয়, মামদানি মেয়র হয়ে অভিবাসী গ্রেপ্তার বন্ধের চেষ্টা করলে কী করবেন? উত্তরে ট্রাম্প বলেন, ‘ঠিক আছে, তেমনটি হলে আমাদের তাঁকে গ্রেপ্তার করতে হবে। দেখেন, এই দেশে আমাদের একজন কমিউনিস্টের দরকার নেই। যদি তেমন কাউকে পাই, তাহলে তাঁর দিকে আমি সতর্ক নজর রাখব।’
মামদানি এর আগে বলেছিলেন, অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযান আতঙ্কিত করছে। অভিযানকারীদের আইন মেনে চলার দিকে আগ্রহ নেই।
মামদানি নিউইয়র্কের কুইন্স বরো থেকে নির্বাচিত হয়ে অঙ্গরাজ্যটির আইনসভার সদস্য হন। মেয়রপ্রার্থী হিসেবে তিনি মার্কিন সিনেটর বার্নি স্যান্ডার্স ও ডেমোক্র্যাট প্রতিনিধি আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও কর্টেজের সমর্থন পেয়েছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র ন উইয়র ক ম মদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
এলোমেলো শিক্ষা খাত, বাড়ছে সংকট
জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডে (এনসিটিবি) প্রায় ৯ মাস ধরে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন শিক্ষা ক্যাডারের কর্মকর্তা রবিউল কবীর চৌধুরী। একই সঙ্গে তিনি প্রতিষ্ঠানটির সদস্য (শিক্ষাক্রম) এবং সদস্য (প্রাথমিক শিক্ষাক্রম)–এর দায়িত্বেও ছিলেন। ৬ নভেম্বর তিনি অবসর–উত্তর ছুটিতে গেছেন। ফলে একসঙ্গে এনসিটিবির চেয়ারম্যানসহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ পদ শূন্য হয়ে যায়।
প্রথা ভেঙে প্রতিষ্ঠানটির বাইরে থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন অতিরিক্ত সচিবকে এনসিটিবির চেয়ারম্যানের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে; কিন্তু পাঠ্যবই ছাপানোর এ মৌসুমে কার্যত নেতৃত্বহীন এনসিটিবি এখন নতুন বছরের শুরুতে সময়মতো পাঠ্যবই বিতরণ করতে পারবে কি না, তা নিয়ে সংশয় বাড়ছে।
শিক্ষা খাতের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরে (মাউশি) মহাপরিচালক নেই মাসখানেক ধরে। একজন কর্মকর্তা কেবল রুটিন দায়িত্ব পালন করছেন; কিন্তু নীতিনির্ধারণী বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারছেন না। ফলে প্রশাসনিক কাজে গতি ফিরছে না। অথচ এসব পদে পদায়ন করা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত কাজের একটি।
‘মাউশি এখন স্লো গতিতে চলছে,’ বললেন এই দপ্তরের একজন কর্মকর্তা।
এখন পর্যন্ত শিক্ষাক্রমের রূপরেখা তৈরির জন্য কোনো কমিটি হয়নি। ধারণা করা হচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে রূপরেখা আর হচ্ছে না। কারণ, আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন হওয়ার কথা।প্রশাসনিক নেতৃত্বহীনতা, শিক্ষাক্রমের অনিশ্চয়তা, শিক্ষক আন্দোলন, বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে বিশেষ করে ঢাকার সাত কলেজ নিয়ে তৈরি সংকট আর বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরসুবিধা পাওয়ায় ভোগান্তি—সব মিলিয়ে শিক্ষা খাতে এখন একধরনের এলোমেলো ও অচলাবস্থার চিত্র ক্রমে স্পষ্ট হচ্ছে।
শিক্ষাসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মতে, গণ–অভ্যুত্থানের পর মানুষ আশা করেছিল অন্তত শিক্ষা খাতে পরিবর্তন আসবে; কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকার শিক্ষাকে সবচেয়ে কম গুরুত্ব দিয়েছে। ফলে ইতিবাচক পরিবর্তনের বদলে নেতিবাচক দিকগুলো ঘুরেফিরে আলোচনায় আসছে। শিক্ষাব্যবস্থার সামগ্রিক দুর্বলতা আরও প্রকট হচ্ছে।
যদিও আন্দোলনের মুখে এরই মধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের বাড়িভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। উৎসব ভাতাও কিছু বেড়েছে। অন্যদিকে রিট আবেদনকারী ৪৫ জন প্রধান শিক্ষকের পর দেশের সব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড এক ধাপ বেড়ে দশমে উন্নীত হচ্ছে। সম্মতি দিয়েছে অর্থ বিভাগ, এখন প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির সুপারিশ নিয়ে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে।
সবশেষ প্রাথমিকে দক্ষ শিক্ষক নিয়োগের উদ্দেশ্যে দেশের প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটগুলোতে (পিটিআই) চালু হচ্ছে ১০ মাস মেয়াদি একটি ডিপ্লোমা প্রোগ্রাম। এগুলোই বর্তমান সময়ে এসে শিক্ষা খাতের কিছু ইতিবাচক দিক। তুলনামূলকভাবে প্রাথমিকে কাজ কিছুটা হচ্ছে। কিন্তু শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন কাজকর্মের অবস্থা বেশি এলোমেলো।
আন্দোলন, অস্থিরতা, কর্মবিরতি
গত কয়েক মাসে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা একের পর এক দাবি নিয়ে আন্দোলনে নেমেছেন। এতে শিক্ষাবর্ষের শেষ সময়ে পাঠদান ব্যাহত হয়েছে।
বেতন গ্রেড বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিলেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা; গত ৮ নভেম্বর শাহবাগে তাঁদের মিছিলে চড়াও হয় পুলিশ