মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ীতে একটি সেতুর অভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে লাখ লাখ মানুষকে। উপজেলার দিঘিরপাড় বাজার সংলগ্ন পদ্মার শাখা নদীতে সেতু না থাকায় ট্রলারই একমাত্র যাতায়াতের ভরসা হয়ে উঠেছে দুই পাড়ের বাসিন্দাদের। সেতু নির্মাণ হলে মুন্সীগঞ্জ, শরীয়তপুর ও চাঁদপুর জেলার মানুষ কোনো সমস্যা ছাড়াই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন বলে মনে করছেন নদী পাড়ের বাসিন্দারা।
স্থানীয় বাসিন্দাদের মতে, একটি সেতু তাদের জীবনে বড় ধরনের পরিবর্তন আনতে পারে। যোগাযোগব্যবস্থা সহজ হওয়ার পাশাপাশি অর্থনৈতিক কার্যক্রমও গতিশীল হবে। দ্রুত সেতু নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন তারা।
জানা গেছে, পদ্মার শাখা নদীর দুই পাড়ের মানুষ মুন্সীগঞ্জ সদর, টঙ্গিবাড়ী উপজেলা ও রাজধানী ঢাকায় যাতায়াতের জন্য ট্রলারের ওপর নির্ভরশীল। রাতে ট্রলার না পাওয়া, অতিরিক্ত ভাড়া ও ঝড় তাদের যাতায়াতকে অত্যন্ত কষ্টসাধ্য করে তুলেছে।
আরো পড়ুন:
চকরিয়ায় ট্রেনের ধাক্কায় সেতু থেকে পড়ে ব্যবসায়ী নিখোঁজ
পদ্মা সেতুতে সোয়া ৪ কোটি টাকা টোল আদায়, যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক
শরীয়তপুর নড়িয়া উপজেলার নওপাড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা মো.
কলেজ শিক্ষার্থী রিফাত খালাসীর ভাষ্যে, “নদীর পশ্চিমপাড়ের রাস্তাও অনেক খারাপ। মোটরসাইকেলে ২০০ টাকা ভাড়া দিয়ে দিঘিরপাড়ে আসতে হয়। ট্রলারের জন্য প্রতিদিন ৩০-৪০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয়।”
দিঘিরপাড় বাজারের খেয়াঘাটে প্রতিদিন শত শত মানুষ ট্রলারে পারাপার হচ্ছেন। কেউ মুন্সীগঞ্জ শহর বা ঢাকায় যাচ্ছেন, কেউবা বাজার করতে আসছেন। নদীর পাড়ের এই ট্রলারঘাটই তাদের জীবন ও জীবিকার গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। এখানে সেতু নির্মাণ হলে মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী, শরীয়তপুরের নওপাড়া, চরআত্রা, চাঁদপুরের হাইমচর আশপাশের গ্রামের মানুষ উপকৃত হবেন। তাদের যাতায়াতে সময় ও খরচ দুই কমবে।
টঙ্গিবাড়ী উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী শাহ মোয়াজ্জেম বলেন, “দিঘিরপাড় বাজার সংলগ্ন পদ্মার শাখা নদীতে ১০০ মিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের একটি সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা করা হয়েছে। নদীর পশ্চিম পাড়ে চার কিলোমিটার দীর্ঘ একটি আরসিসি সড়ক নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে। প্রাথমিক মাটি পরীক্ষা ও সার্ভে সম্পন্ন করেছে বুয়েটের বিশেষজ্ঞ দল। এখন নকশা তৈরি করে মন্ত্রণালয়ে বরাদ্দের জন্য আবেদন করা হবে।”
ঢাকা/রতন/মাসুদ
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিশ্বের যেকোনো আদালতের মানদণ্ডে এই সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো উতরে যাবে: চিফ প্রসিকিউটর
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ আসামিদের যে সাজা দেওয়া হয়েছে, পৃথিবীর যেকোনো আদালতে এই সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করলে একই শাস্তি পাবেন।
আজ সোমবার দুপুরে রায় ঘোষণার পর এক সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন।
তাজুল ইসলাম বলেন, ‘যে ধরনের সাক্ষ্যপ্রমাণ এই আদালতে উপস্থাপিত হয়েছে, বিশ্বের যেকোনো আদালতের স্ট্যান্ডার্ডে এই সাক্ষ্যপ্রমাণগুলো উতরে যাবে এবং পৃথিবীর যেকোনো আদালতে এই সাক্ষ্যপ্রমাণ উপস্থাপন করা হলে আজ যেসব আসামিকে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে, তাঁরা প্রত্যেকেই একই শাস্তি প্রাপ্ত হবেন।’
মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম বলেন, ‘বাংলাদেশ সব আন্তর্জাতিক নর্মস, আন্তর্জাতিক স্ট্যান্ডার্ড মেইনটেইন করে ক্রাইমস এগেন্স হিউম্যানিটির মতো কমপ্লেক্স (মানবতাবিরোধী অপরাধের মতো জটিল) অপরাধের বিচার করতে সক্ষম এবং বাংলাদেশ সাফল্যের সঙ্গে সেটা করেছে।’ তিনি বলেন, ‘অপরাধী যতই ক্ষমতাশালী হোক, সে আইনের ঊর্ধ্বে নয়। বাংলাদেশ এমন একটি রাষ্ট্র, যেখানে যত বড় অপরাধীই হোক, তার অপরাধের জন্য তাকে জবাবদিহির মুখোমুখি হতে হবে এবং তার প্রাপ্য শাস্তি পেতে হবে।’
তাজুল ইসলাম আরও বলেন, এই রায়ের প্রক্রিয়া সমাপ্ত হওয়ার মাধ্যমে দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের সমাপ্তি হয়েছে। যদিও আরও অনেকগুলো মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তিনি বলেন, ‘শহীদ পরিবার, যাদের ক্ষতি কোনো কিছু দিয়ে পূরণ হবে না, তাদের সামনে অন্তত একটা ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পেরেছি। এ জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা।’