Samakal:
2025-08-05@11:48:12 GMT

নাজুক সড়কে ভাড়া দ্বিগুণ

Published: 3rd, May 2025 GMT

নাজুক সড়কে ভাড়া দ্বিগুণ

জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ চলছে মির্জা খালের বহদ্দারহাট মোড় থেকে চান মিয়া সড়কেও। বুধবার এ এলাকাটি সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এখানকার অবস্থা একেবারে ভয়াবহ। এমনিতে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কারণে সড়কে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে, তার ওপর সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক। সড়কে কার্পেটিংয়ের চিহ্ন মাত্র নেই। সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। চান মিয়া সড়ক ও আশপাশের এলাকাটি নগরীর অন্যতম ঘিঞ্জি এলাকাগুলোর একটি। কিন্তু সড়কের দুরবস্থা ও জলাবদ্ধতার কারণে অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। বহদ্দারহাট বাজার ফেলে কয়েকশ গজ যাওয়ার পর দেখা গেল খাল থেকে মাটি অপসারণ করা হচ্ছে এক্সক্যাভেটর দিয়ে। এ জন্য খালে মাটির বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ রেখে সেই পানি পাইপের মাধ্যমে সরাসরি রাস্তায় ফেলা হচ্ছে। সেই পানিতে সড়কের অবস্থা কাহিল।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চান মিয়া রোডে সিএনজি অটোরিকশা চালান প্রিয়তোষ চৌধুরী। তিনি সমকালকে বলেন, ‘চান মিয়া সড়কে যানবাহন চলাচলের মতো অবস্থা নেই। এমনিতেই সড়কটির খারাপ অবস্থা। জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কারণে আরও নাজুক অবস্থা হয়েছে। কেউ কোনো কাজ করেন না। আমরা গাড়ি চালকরাই মাঝেমধ্যে বড় বড় গর্ত ইট-কংকর দিয়ে ভরাট করে যানবাহন চালু রেখেছি।’
শমসেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো.

ইলিয়াস নামে জানান, ‘বহদ্দারহাট মোড় থেকে কিছুদিন আগেও টেম্পু ভাড়া ছিল ১০ টাকা। এখন সড়কের দুরবস্থার কারণে দ্বিগুণ ২০ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হচ্ছে। আগে এই পথ যেতে রিকশা ভাড়া ছিল ৩০ টাকা। এখন নেওয়া হয় ৫০ থেকে ৬০ টাকা। এ থেকেই বোঝা যায় সড়কটির কী করুণ দশা।’
প্রকল্পের ওই অংশে কাজ পাওয়া এইচএন এন্টারপ্রাইজের সাই ইঞ্জিনিয়ার সাজ্জাদুল আলম সমকালকে বলেন, ‘খালের মাটি দ্রুত অপসারণ করে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। বর্ষার আগেই যাতে কাজ শেষ করা যায়, সে জন্য দিনরাত কাজ চলছে।’ খালে বাঁধ দেওয়ার কারণে বৃষ্টি হলে কী অবস্থা হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বাঁধের পাশে এক্সক্যাভেটর রেখেছি। বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতার শঙ্কা দেখা দিলে এক্সক্যাভেটর দিয়ে বাঁধ অপসারণ করে পানি চলাচলের সুযোগ করে দেওয়া হবে।’
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৪ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তিন সংস্থা। এর মধ্যে সিডিএ দুটি, সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি করে প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে ৫ থেকে ১১ বছর ধরে। ইতোমধ্যে খরচ হয়েছে ৮ হাজার ৩১২ কোটি টাকা। প্রকল্পগুলোর কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক প রকল প র ক ক জ চলছ অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

নিজস্ব অর্থ-শ্রমে সড়ক সংস্কার তরুণদের, দুই গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব

বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার রহমতপুর ইউনিয়নের দোয়ারিকা গ্রামে ধসে পড়া একটি গুরুত্বপূর্ণ পাকা সড়ক নিজস্ব অর্থ ও স্বেচ্ছাশ্রমে মেরামত করেছেন গ্রামের ৫০ জন তরুণ। আজ শনিবার সকাল থেকে শুরু করে দিনভর চলে এই মেরামতকাজ। ফলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পেল দোয়ারিকা ও মানিককাঠি গ্রামের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এবার জুন মাস থেকেই বরিশাল অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা শুরু হয়। জুলাই মাসজুড়ে ধারাবাহিক প্রবল বর্ষণের ফলে রহমতপুর-দোয়ারিকা পুরাতন ফেরিঘাট সড়কের মানিককাঠি অংশে প্রায় ৫০০ মিটার পাকা সড়ক হঠাৎ করেই ধসে পড়ে। এর ফলে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে দুই গ্রামের বাসিন্দারা। মানুষের যাতায়াত ও যানবাহন চলাচল—সবই বন্ধ হয়ে যায়। দুর্ভোগে পড়েন দুই গ্রামের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ।

দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয়রা সড়কটি মেরামতের জন্য জনপ্রতিনিধি, প্রশাসন ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের (এলজিইডি) দৃষ্টি আকর্ষণের চেষ্টা করেন। কিন্তু কোনো কার্যকর উদ্যোগ না নেওয়ায় দোয়ারিকার একদল তরুণ ও যুবকেরা এগিয়ে আসেন এই দুর্ভোগ লাগবে। তাঁরা নিজেদের অর্থায়নে স্বেচ্ছাশ্রমের সড়কের এই অংশ মেরামতের উদ্যোগ নেন।

দোয়ারিকা গ্রামের কলেজশিক্ষার্থী পারভেজ হাওলাদার বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার সমস্যা নিয়ে ভুগছি। নানা জায়গায় ধরণা কাজ হয়নি। তাই নিজেরাই সিদ্ধান্ত নিই রাস্তা সংস্কার করে দুর্ভোগ লাঘবের। ইটের খোয়া, বালু কিনে এনে ধসে পড়া অংশে ফেলি। এতে অন্তত সড়কটি মানুষের চলাচল উপযোগী হয়েছে।’

এই স্বেচ্ছাশ্রমে অংশ নেওয়া তরুণদের মধ্যে ছিলেন ছাত্র, কৃষক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও বেকার যুবকেরাও। কেউ টাকা দিয়ে সাহায্য করেছেন, কেউবা কাঁধে মাটি, কেউবা কোদাল চালিয়ে ঘাম ঝরিয়ে শ্রম দিয়ে এই কাজ সফল করেছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি সত্যিই গর্বিত যে আমাদের ছেলেরা নিজের গ্রামে চলাচল অনুপযোগী সড়ক নিজেদের অর্থ-শ্রম দিয়ে সংস্কার করেছে। এটা আমাদের নতুন প্রজন্মের সচেতনতার জন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তবে আমরা চাই, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের পক্ষ থেকে সড়কটি টেকসইভাবে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নিক।’

দোয়ারিকা ও মানিককাঠি বাবুগঞ্জের জনবহুল দুটি গ্রাম। কৃষিকাজ, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা ও বাজারে যাতায়াতের জন্য এই একটি সড়কের ওপর পুরো অঞ্চলের মানুষ নির্ভরশীল। সড়ক ধসে পড়ার কারণে অনেকে বাধ্য হয়ে দুই কিলোমিটার ঘুরে বিকল্প পথ ব্যবহার করে স্কুল–কলেজ ও উপজেলা সদরে যেতে হতো, যা অনেক সময় রোগী বা স্কুলপড়ুয়া শিশুদের জন্য হয়ে উঠেছিল বিপজ্জনক ও কষ্টকর।

স্থানীয় বাসিন্দা রশিদা বেগম বলেন, ‘আমার ছোট ছেলেটা স্কুলে যেতে পারে না তিন দিন ধরে। যে রাস্তা দিয়ে যেতে হতো, সেটা একেবারে গর্ত হয়ে গেছে। আবার বর্ষাকাল, হাঁটুপানি। সরকার যদি আমাদের কষ্ট বুঝত, তাহলে এত দিনেও রাস্তা ঠিক হতো।’

চর সাধুকাঠি ফাজিল মাদ্রাসার শিক্ষক মনিরুজ্জামান বলেন, ‘সড়কটির প্রায় ৫০০ ফুট ধরে ধসে পড়ে খানাখন্দ হয়ে তাতে পানি জমে যাওয়ায় চলাচলের সম্পূর্ণ অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। এতে আমাদের শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় আসতে কাদাপানিতে একাকার হয়ে যেত।’ তিনি বলেন, ‘এ ছাড়া উপজেলা সদরে যেতে আমাদের দুই গ্রামের বাসিন্দাদের একমাত্র সড়কপথ এটা। ধসে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হওয়ায় এর ওপর দিয়ে কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারত না। স্থানীয় তরুণ-যুবকেরা নিজেদের অর্থায়নে ও স্বেচ্ছাশ্রমে সড়কের এই অংশ মেরামত করায় এখন সাময়িক দুর্ভোগ লাঘব হবে। এটা অবশ্যই তাঁদের প্রশংসনীয় উদ্যোগ।’

এ বিষয়ে এলজিইডির বাবুগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী কাজী এমামুল হকের দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মুন্সিগঞ্জে সড়কের কাদাপানিতে ধানগাছ লাগিয়ে প্রতিবাদ, সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ
  • মেরামতের দুই মাসেই ফের বেহাল মানিকপুর সড়ক
  • নেত্রকোণা-শিধলী সড়ক যেন মরণ ফাঁদ 
  • পাহাড়ধসে মারিশ্যা-দীঘিনালা সড়কে যান চলাচল বন্ধ
  • টেকসই সংস্কারে মনোযোগ দিন
  • সড়কের কাজে অনিয়ম, অস্বীকার করায় এলজিইডি কর্মচারীকে মারধর
  • নিজস্ব অর্থ-শ্রমে সড়ক সংস্কার তরুণদের, দুই গ্রামের মানুষের দুর্ভোগ লাঘব