জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কাজ চলছে মির্জা খালের বহদ্দারহাট মোড় থেকে চান মিয়া সড়কেও। বুধবার এ এলাকাটি সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, এখানকার অবস্থা একেবারে ভয়াবহ। এমনিতে জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কারণে সড়কে যানবাহন চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে, তার ওপর সড়কটির অবস্থা খুবই নাজুক। সড়কে কার্পেটিংয়ের চিহ্ন মাত্র নেই। সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে ছোট-বড় গর্ত। চান মিয়া সড়ক ও আশপাশের এলাকাটি নগরীর অন্যতম ঘিঞ্জি এলাকাগুলোর একটি। কিন্তু সড়কের দুরবস্থা ও জলাবদ্ধতার কারণে অনেকেই এলাকা ছেড়ে অন্যত্র চলে যাচ্ছেন। বহদ্দারহাট বাজার ফেলে কয়েকশ গজ যাওয়ার পর দেখা গেল খাল থেকে মাটি অপসারণ করা হচ্ছে এক্সক্যাভেটর দিয়ে। এ জন্য খালে মাটির বাঁধ দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ রেখে সেই পানি পাইপের মাধ্যমে সরাসরি রাস্তায় ফেলা হচ্ছে। সেই পানিতে সড়কের অবস্থা কাহিল।
এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চান মিয়া রোডে সিএনজি অটোরিকশা চালান প্রিয়তোষ চৌধুরী। তিনি সমকালকে বলেন, ‘চান মিয়া সড়কে যানবাহন চলাচলের মতো অবস্থা নেই। এমনিতেই সড়কটির খারাপ অবস্থা। জলাবদ্ধতা প্রকল্পের কারণে আরও নাজুক অবস্থা হয়েছে। কেউ কোনো কাজ করেন না। আমরা গাড়ি চালকরাই মাঝেমধ্যে বড় বড় গর্ত ইট-কংকর দিয়ে ভরাট করে যানবাহন চালু রেখেছি।’
শমসেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো.
প্রকল্পের ওই অংশে কাজ পাওয়া এইচএন এন্টারপ্রাইজের সাই ইঞ্জিনিয়ার সাজ্জাদুল আলম সমকালকে বলেন, ‘খালের মাটি দ্রুত অপসারণ করে রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণের জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। বর্ষার আগেই যাতে কাজ শেষ করা যায়, সে জন্য দিনরাত কাজ চলছে।’ খালে বাঁধ দেওয়ার কারণে বৃষ্টি হলে কী অবস্থা হবে? জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমরা বাঁধের পাশে এক্সক্যাভেটর রেখেছি। বৃষ্টিপাতের কারণে জলাবদ্ধতার শঙ্কা দেখা দিলে এক্সক্যাভেটর দিয়ে বাঁধ অপসারণ করে পানি চলাচলের সুযোগ করে দেওয়া হবে।’
চট্টগ্রামের জলাবদ্ধতা নিরসনে ১৪ হাজার ৩৪৯ কোটি টাকা ব্যয়ে চারটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে তিন সংস্থা। এর মধ্যে সিডিএ দুটি, সিটি করপোরেশন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড একটি করে প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রকল্পগুলোর কাজ চলছে ৫ থেকে ১১ বছর ধরে। ইতোমধ্যে খরচ হয়েছে ৮ হাজার ৩১২ কোটি টাকা। প্রকল্পগুলোর কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক প রকল প র ক ক জ চলছ অবস থ
এছাড়াও পড়ুন:
ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনায় প্রস্তুত ট্রাম্প
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গতকাল বৃহস্পতিবার বলেছেন, ইরান তাদের ওপর আরোপ করা যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে। তিনি তাদের এই অনুরোধের বিষয়ে আলোচনা করতে প্রস্তুত।
মধ্য এশিয়ার নেতাদের সঙ্গে এক নৈশভোজে ট্রাম্প বলেন, ‘সত্যি বলতে, ইরান জিজ্ঞাসা করে আসছে, নিষেধাজ্ঞাগুলো তুলে নেওয়া যায় কি না। ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের খুবই কঠোর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। এটি পরিস্থিতিকে সত্যিই কঠিন করে তুলেছে।’
মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘আমি সেটা শুনতে প্রস্তুত এবং আমরা দেখব কী হয়। তবে আমি এর জন্য উন্মুক্ত।’
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে পারমাণবিক কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ করে আসছে। ইরান অবশ্য জোর দিয়ে বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে। কোনো পরমাণু অস্ত্র অর্জন তাদের উদ্দেশ্য নয়।
তেহরান বছরের পর বছর ধরে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কবলে রয়েছে। বিশেষ করে ২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র তেহরানের সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে আসে। এরপর ইরানের ওপর আরও কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয় এবং আগের নিষেধাজ্ঞা পুনরায় আরোপ করা হয়।
গত জুনের মাঝামাঝি সময়ে, ইসরায়েল ইরানের ওপর নজিরবিহীন আগ্রাসন শুরু করে। দেশটির ওপর বোমা হামলা চালায়। এতে দুই দেশের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধের আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল। এই সংঘাতের সময় যুক্তরাষ্ট্রও ইরানের কয়েকটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালিয়েছিল।
ইসরায়েলের হামলার জবাবে ইরান পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালালে দুই দেশের মধ্যে সংঘাত বেঁধে যায়। দুই দেশের ওই সংঘাত ১২ দিন স্থায়ী হয়েছিল। ইসরায়েলের হামলার কারণে এপ্রিল মাসে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে শুরু হওয়া পারমাণবিক আলোচনা ব্যাহত হয়েছিল।
ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ইরান একসময় ‘মধ্যপ্রাচ্যের দাপুটে শক্তি’ ছিল। কিন্তু এখন তাদের ‘পারমাণবিক অস্ত্র’ পাওয়ার আর কোনো সম্ভাবনা নেই।
গত জানুয়ারিতে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসা এই রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট বারবার বলেছেন, এই হামলায় ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। তবে ক্ষতির পুরো মাত্রা এখনো অজানা।
সেপ্টেম্বরে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানি প্রক্রিয়াটি শুরু করার পর তথাকথিত ‘স্ন্যাপব্যাক’ ব্যবস্থার অধীনে জাতিসংঘ তেহরানের বিরুদ্ধে আবার নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করে।
এসব ব্যবস্থা ইসলামিক প্রজাতন্ত্রের পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র কার্যকলাপ সংক্রান্ত যাবতীয় লেনদেন নিষিদ্ধ করেছে।
যুক্তরাষ্ট্র-ইরান পারমাণবিক আলোচনার বেশ কয়েক দফা অনুষ্ঠিত হয়েছে ওমানে। এই দেশটি উভয় পক্ষকে আলোচনায় ফিরে আসার আহ্বান জানিয়েছে। এই আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে, নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার বিনিময়ে ইরানের পারমাণবিক কার্যক্রমকে সীমিত করে একটি নতুন চুক্তিতে পৌঁছানো।