রোহিঙ্গা সংকটের এখনও কার্যকর সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়নি: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 4th, May 2025 GMT
মিয়ানমারে গৃহযুদ্ধের মধ্যে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপত্তা ও নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা না থাকায় এ সময়ের মধ্যে তাদের প্রত্যাবাসনের সম্ভাবনা অনেকটা কম বলে মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন। তিনি বলেন, দীর্ঘদিনের এই সংকটের এখনও কোনো কার্যকর সমাধান খুঁজে পাওয়া যায়নি।
আজ রোববার বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসে (বিইউপি) রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে এক সেমিনারে তিনি এমন মন্তব্য করেন।
‘বাংলাদেশে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন: আঞ্চলিক নিরাপত্তায় কৌশলগত প্রভাব ও ভবিষ্যৎ পথ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালস (বিইউপি) এবং সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের যৌথ উদ্যোগে এই সেমিনারের আয়োজন করা হয়।
তৌহিদ হোসেন বলেন, রোহিঙ্গা ইস্যুতে সংকটগুলো শান্তিপূর্ণভাবে নয়, সংঘাতের মধ্য দিয়েই সমাধান হয়, ইতিহাস তাই বলে। এ সময় ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধসহ আফ্রিকার বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর স্বাধীনতা যুদ্ধকে উদাহরণ হিসেবে দেখান উপদেষ্টা।
তিনি উল্লেখ করেন, ২০১৭ সালে রাখাইনে সামরিক বাহিনীর দমনপীড়নের মুখে বাংলাদেশে তৃতীয় দফায় রোহিঙ্গাদের ঢল নামে। এর আগেও প্রায় তিন লাখ রোহিঙ্গা বিভিন্ন সময় সীমান্ত পার হয়ে বাংলাদেশে আসে।
দ্বিপাক্ষিক প্রক্রিয়াকে ‘বৃথা’ আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা উল্লেখ করেন যে, একজন রোহিঙ্গাকেও প্রত্যাবাসন করা যায়নি। তিনি বলেন, আমরা কূটনীতি ত্যাগ করতে পারি না। কিন্তু আমাদের এই আশা ছেড়ে দিতে হবে যে, শুধু দ্বিপাক্ষিক আলোচনা সফল হবে না।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, যে কোনো প্রত্যাবাসন অবশ্যই স্বেচ্ছায় হতে হবে এবং নিরাপত্তা ও পূর্ণ নাগরিকত্বের নিশ্চয়তা থাকতে হবে। তারা এমন জায়গায় ফিরে যাবে না যেখানে তাদের জীবন ঝুঁকিপূর্ণ এবং তাদের অধিকার অস্বীকার করা হয়।
সামরিক জান্তা, আরাকান আর্মি এবং ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্টকে (এনইউজি) মিয়ানমারের প্রধান অংশীজন হিসেবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে কোনো স্থায়ী সমাধানে অবশ্যই এই তিনটি পক্ষকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বিশেষ করে আরাকান আর্মিকে, যারা এখন রাখাইন (আরাকান) রাজ্যের বিশাল অংশ নিয়ন্ত্রণ করে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: পরর ষ ট র উপদ ষ ট উপদ ষ ট
এছাড়াও পড়ুন:
এবার পাকিস্তান রেঞ্জার্স সদস্যকে আটক করল ভারত
ভারতের রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে গতকাল শনিবার পাকিস্তানের আধাসামরিক বাহিনী পাকিস্তান রেঞ্জার্সের এক সদস্যকে আটক করেছে ভারতীয় সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী (বিএসএফ)।
এর আগে জম্মু ও কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধির মধ্যে বিএসএফের এক জওয়ানকে গ্রেপ্তার করেছিল পাকিস্তানে রেঞ্জার্স। এর প্রায় দুই সপ্তাহ পর এবার পাকিস্তানের রেঞ্জার্সকে আটক করল বিএসএফ।
রবিবার (৪ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভ।
আরো পড়ুন:
দুই দেশের নাগরিকদের ফেরত দিল বিজিবি-বিএসএফ
ভারত সিরিজ যেভাবে হওয়ার কথা সেভাবেই হবে: ফাহিম
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিএসএফ জওয়ান পূর্ণম কুমার সাহুকে গত ২৩ এপ্রিল পাঞ্জাবের পাক-ভারত আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে গ্রেপ্তার করেছিল রেঞ্জার্স। পরে ভারত তীব্র প্রতিবাদ জানালেও তাকে হস্তান্তর করেনি পাকিস্তান।কার্যত এবার পাকিস্তান রেঞ্জার্সকেও আটক করল ভারত।
আটককৃত পাকিস্তানি রেঞ্জার, যার পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি, বর্তমানে বিএসএফের রাজস্থান ফ্রন্টিয়ারের হেফাজতে রয়েছে।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে অসাবধানতাবশত সীমান্ত অতিক্রমকারী বিএসএফ জওয়ানদের ফিরিয়ে দেওয়ার একটি সুপ্রতিষ্ঠিত প্রক্রিয়া রয়েছে। কিন্তু উত্তেজনা বৃদ্ধির কারণে, পাকিস্তান সাহুকে এখনও আটক রেখেছে। এদিকে, বন্দী পাকিস্তানি রেঞ্জারের সাথে ভারত কী করবে তা এখনও স্পষ্ট নয়।
সামরিক সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি জানিয়েছে, রেঞ্জারের আটকের কয়েক ঘণ্টা পরে, পাকিস্তানি সেনা পোস্টগুলো ৩-৪ মে মধ্যরাতে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর একাধিক সেক্টরে বিনা উস্কানিতে ছোট অস্ত্রের গুলি চালায়, যার মধ্যে রয়েছে কুপওয়ারা, বারামুল্লা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধার, নওশেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুর। ভারতীয় সেনা ইউনিটগুলো তাৎক্ষণিকভাবে পাল্টা প্রতিক্রিয়া জানায়।
সংবাদমাধ্যমটি আরো জানিয়েছে, সাহুর মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে, তবে পাকিস্তানি পক্ষ কোনো সময়সীমা নির্ধারণ করেনি বা তার বর্তমান অবস্থা নিশ্চিত করেনি।
২২ এপ্রিল ভারত অধিকৃত কাশ্মিরে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এ ঘটনার জন্য কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছে ভারত।
ভারতনিয়ন্ত্রিত জম্মু ও কাশ্মীরের জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র পহেলগামে গত ২২ এপ্রিলের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পটভূমিতে দুই দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।হামলায় ২৬ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই পর্যটক। এই ঘটনার জন্য কোনো প্রমাণ ছাড়াই পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছে ভারত।
ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থাও নিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সিন্ধু পানিচুক্তি স্থগিত করা, আটারি-ওয়াঘা স্থল সীমান্ত ক্রসিং বন্ধ করা, কূটনৈতিক কর্মীদের প্রত্যাহার করা এবং পাকিস্তান থেকে আমদানি নিষিদ্ধ করা। পাকিস্তানের পতাকাবাহী জাহাজের জন্য ডাক বিনিময় এবং বন্দর অ্যাক্সেসও বাতিল করা হয়েছে।
উত্তেজনা আরো বাড়িয়ে, পাকিস্তান সেনাবাহিনী শনিবার তার আবদালি ভূমি থেকে ভূমিতে নিক্ষেপযোগ্য ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের একটি পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। ভারতীয় কর্মকর্তারা, এই পদক্ষেপকে ‘প্রকাশ্য উস্কানি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
ঢাকা/ফিরোজ