পশ্চিমবঙ্গের অভিনয়শিল্পী স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায় ও পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়ের প্রেমের গল্প কমবেশি সবারই জানা। দুজনের প্রেমের স্থায়িত্ব ছিল প্রায় বছর দুয়েক। ১৬ বছর আগে স্বামীর সঙ্গে স্বস্তিকার যখন ডিভোর্সের মামলা চলছে, সেই কঠিন সময়েই পাশে পেয়েছিলেন পরমব্রতকে।

সম্প্রতি ইউটিউব চ্যানেল ‘স্ট্রেট আপ উইথ শ্রী’–তে পরমব্রত কথা বলেন স্বস্তিকার সঙ্গে বহুল চর্চিত বিচ্ছেদ নিয়ে। পরমব্রত ও স্বস্তিকা নিজেদের সম্পর্ক লুকাননি। এমনকি বিচ্ছেদের পরেও একে অপরকে নিয়ে কথা বলতে দ্বিধা করেন না।

পরমব্রত জানান, স্বস্তিকার সঙ্গে সম্পর্ক থেকে বেরিয়ে আসার সিদ্ধান্ত তারই ছিল। একটা সময় নিজেই অব্যাহতি চেয়ে প্রেম থেকে সরে আসেন তিনি।


পরমব্রত ও স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়

পরমব্রত ভাষ্য, ‘আমাদের প্রায়ই দেখা হয়, কথা হয়। আমরা দুই বছর একসঙ্গে ছিলাম। সেই দুই বছরের মধ্যে একটা বড় সময় এমন ছিল, যেটা খুব সুন্দর ছিল। সেটাকে আমি সারা জীবন সুন্দর স্মৃতি হিসেবে মনে রেখে দেব। আরেকটা যেটা ছিল, সেটা খুব অশান্ত ছিল। আমার বলতে কোনো বাধা নেই, একটা সময়ে এসে আমি নিজেই অব্যাহতি চাই।’

পরমব্রত বলেন, ‘সেই সময়ের আমি, আর আজকের আমির মধ্যে অনেকটা পার্থক্য আছে। সেই সময় ওর সঙ্গে কথা বলতে একটা অস্বস্তি হতো। স্বস্তিকারও মানুষ হিসেবে অনেক বিবর্তন ঘটেছে। আমি যে স্বস্তিকাকে চিনতাম, যখন আমরা একসঙ্গে ছিলাম, সেই স্বস্তিকা আর এই স্বস্তিকার মধ্যে অনেকটা ফারাক।’

প্রেম ভাঙা মানেই যে বিচ্ছেদ, যোগাযোগ বন্ধ, তিক্ততা জিইয়ে রাখা- এ সবে বিশ্বাসী নন স্বস্তিকা। ২০২৩ সালে ২৭ নভেম্বর মাসে পিয়া চক্রবর্তীকে বিয়ে করেছেন পরমব্রত। বিয়ের মাস তিনেক পর পরমব্রতর বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রীর সঙ্গে দেখাও করে এসেছেন স্বস্তিকা।


পরমব্রতর স্ত্রী পিয়া চক্রবর্তী ও স্বস্তিকা মুখোপাধ্যায়

সেই ছবি শেয়ার করে তিনি লেখেন, ‘আয়, বেঁধে বেঁধে থাকি।’ পাল্টা পিয়াও লেখেন, ‘আমরা চঞ্চল আমরা অদ্ভুত।’

এক সাক্ষাৎকারে স্বস্তিকা বলেন, ‘পরমের কথা ভাবলে, ওর সঙ্গে কাটানো ভাল সময়টাই মনে পড়ে। সেই জন্য হয়তো সে দিন বাড়ি ফেরার সময় ওকে জড়িয়ে ধরে বলতে পারলাম যে, ‘ভাল থাকিস’। ও-ও বলল, বাড়িতে ডাকবে। পিয়াকে চক্রবর্তী আমি অনেক বছর ধরে চিনি। আমার খুব ভাল লাগে ওকে। পরমকে বললাম, ‘ডাকিস, তোর জন্য না হলেও পিয়ার জন্য যাব।’ সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স বস ত ক ম খ প ধ য য়

এছাড়াও পড়ুন:

একটি আপেল যেভাবে বদলে দিয়েছে মহাবিশ্বের ধারণা

বিজ্ঞানী আইনস্টাইনের সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী আইজ্যাক নিউটনের মহাকর্ষ বলকে স্থান–কালের বক্রতা দিয়ে প্রতিস্থাপন করেছিল। এর মাধ্যমে সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্ব আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানকে অন্য এক মাত্রায় নিয়ে যায়। যখনই আপনি একটি কাপ ফেলে দেন বা নদীতে জোয়ার আসতে দেখেন, তখনই মহাকর্ষের প্রমাণ পাওয়া যায়। আবার আপনার ওজন মাটির ওপর চাপ সৃষ্টি করছে বলে অনুভব করার বিষয়টি মহাকর্ষের অভিজ্ঞতা বলা যায়। প্রাকৃতিক বিভিন্ন বলের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত হলেও মহাকর্ষ বলকে সবচেয়ে রহস্যময় বলা হয়। এই বল আমাদের পৃথিবীর কক্ষপথে ধরে রাখে। বলা যায়, মহাবিশ্বের সব গ্যালাক্সির ভাগ্য নির্ধারণ করে এই বল।

প্রকৌশলীরা স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ, কক্ষপথের অবস্থান মঙ্গলে মিশন পরিকল্পনার সময় মহাকর্ষ বলের ওপর নির্ভর করেন। মাটির নিচের পানির ভান্ডার বা হিমবাহের বরফ গলে যাওয়া শনাক্ত করতেও ব্যবহার করা হচ্ছে মহাকর্ষ বলের তথ্য। অনেক আগে এই মহাকর্ষ বল সম্পর্কে মানুষের তেমন ধারণা ছিল না। আইজ্যাক নিউটন বিজ্ঞানের অন্যতম গভীর এই বল সম্পর্কে বেশ বিস্তারিত ধারণা প্রবর্তন করেন। তিনিই প্রথম প্রশ্ন করেন, কোন বলের কারণে গাছের আপেল মাটিতে পড়ে? কোন শক্তির জোরে চাঁদ পৃথিবীর চারপাশে কক্ষপথে অবস্থান করছে?

বিজ্ঞানী নিউটন ও আপেলগাছ নিয়ে বেশ জনপ্রিয় গল্প প্রচলিত আছে। ১৬৬৬ সালের দিকে নিউটন লিংকনশায়ারে তাঁর পারিবারিক বাড়ির বাগানে অবস্থানের সময় স্বাভাবিক এক ঘটনা পর্যবেক্ষণ করেন। একটি আপেলকে গাছ থেকে পড়তে দেখেন তিনি। সেই ঘটনা নিউটনকে নতুন ভাবনার সুযোগ করে দেয়। তিনি ভাবতে থাকেন, একটি আপেল যদি মাটিতে পড়ে তাহলে চাঁদও কি পড়ে যাচ্ছে? সেই চিন্তা থেকেই মহাকর্ষ বলের সর্বজনীন সূত্র আবিষ্কার করেন নিউটন। তাঁর ভাষ্যে, মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তু অন্য প্রতিটি বস্তুকে এমন একটি বল দিয়ে আকর্ষণ করে যা তাদের ভরের সমানুপাতিক ও তাদের দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক। বিজ্ঞানী নিউটন পৃথিবী ও মহাবিশ্বের গতি ব্যাখ্যা করেন এই সূত্রের মাধ্যমে।

আরও পড়ুনপৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্র নয় বলে প্রমাণিত হয় যে ছবির কারণে০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫

১৯১৫ সালে বিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন তাঁর সাধারণ আপেক্ষিকতার তত্ত্বের মাধ্যমে মহাবিশ্ব সম্পর্কে নতুন ধারণা দেন। তিনি যুক্তি দেন যে মহাকর্ষ বস্তুকে একসঙ্গে টেনে আনা কোনো বল নয়, বরং ভর ও শক্তি দ্বারা স্থান–কালের নিজস্ব বাঁক বা বক্রতা। বিভিন্ন গ্রহ চলছে মহাজাগতিক কাঠামোর বক্রতা অনুসরণ করে। এটি বোঝার একটি কার্যকর উপায় হচ্ছে স্থান–কালকে একটি টান টান কাপড়ের মতো কল্পনা করা। এর ওপর একটি ভারী টেনিস বল রাখলে কাপড়টি কিছুটা দেবে যায়। তখন কাছাকাছি থাকা সব ছোট বস্তুকে সেই দেবে যাওয়া অবস্থানের দিকে নেমে যাবে। ঠিক একইভাবে তারা ও গ্রহের মতো বিশাল বস্তুকে স্থান–কাল বাঁকিয়ে দেয়। এতে চারপাশের সবকিছু চলতে থাকে।

রহস্যময় মহাকর্ষ বল বেশ দুর্বলতম বল। এই বল সব পদার্থের ওপর, সব রকম দূরত্বজুড়ে কাজ করে। কখনোই বন্ধ হয় না। মহাজগৎকে শাসন করলেও মহাকর্ষ বল প্রকৃতির অন্যান্য বলের তুলনায় আশ্চর্যজনকভাবে দুর্বল। একটি প্রোটন ও একটি ইলেকট্রনের মধ্যেকার তড়িৎচৌম্বকীয় আকর্ষণ মহাকর্ষ বলের চেয়ে প্রায় ১ হাজার ৩৬ গুণ শক্তিশালী। এ কারণেই পরমাণু, অণু ও তাদের রসায়ন তড়িৎচৌম্বকত্ব দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়।

আরও পড়ুনমহাবিশ্ব দ্রুত সম্প্রসারণ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা১৩ জুলাই ২০২৫

নিউটনের সেই আপেলবাগান থেকে পাওয়া প্রশ্ন ও আইনস্টাইনের বক্র স্থান–কাল ধারণার মাধ্যমে আমাদের মহাবিশ্ব সম্পর্কে ধারণা বদলে গেছে। মহাকর্ষ বল দৈনন্দিন জীবন থেকে শুরু করে চরম মহাজাগতিক ঘটনা পর্যন্ত সবকিছু শাসন করে। এই বল গ্রহকে আকার দেয়। ধূমকেতুকে পরিচালনা করে। বিভিন্ন গ্যালাক্সিকে একসঙ্গে বেঁধে রাখে। মহাজগতের সবচেয়ে ঘন কোণে এই বল নিউট্রন তারা ও ব্ল্যাকহোলের মতো বহিরাগত বস্তু তৈরি করে। আইনস্টাইনের তত্ত্ব অনেক আগেই এসব বিষয়ে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছবিতে টলিউড তারকাদের দুর্গাপূজা
  • নাটোরে একসঙ্গে পাঁচ সন্তান প্রসব প্রসূতির
  • একসঙ্গে পাঁচ সন্তানের জন্ম দিলেন রেশমা
  • বিশ্বব্যবস্থা: যুক্তরাষ্ট্র সরে গেলে বাকি পশ্চিমাদের এগিয়ে আসতে হবে
  • রণবীর, রানী থেকে পরমব্রত—তারকারা কে কোথায়
  • একটি আপেল যেভাবে বদলে দিয়েছে মহাবিশ্বের ধারণা