অর্থ লেনদেনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ হাইকোর্টের
Published: 4th, May 2025 GMT
অনলাইনে জুয়ার বিজ্ঞাপন, প্রচার এবং আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্টদের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকা সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রোববার এ বিষয়ে রুল জারিসহ এই আদেশ দেন।
রুলে অনলাইন জুয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ইন্টারনেট গেটওয়ে, লিংক, অ্যাপ্লিকেশন এবং বিজ্ঞাপন ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন গুগল, ইয়াহু, ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, বিগোলাইভ, টিকটক, লাইকি, গুগল প্লেস্টোরসহ সব ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম থেকে অপসারণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অনলাইন জুয়া বন্ধে এবং জড়িতদের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রিটে উল্লেখিত বিবাদী ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিআইএফইউ), পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) অগ্রগতি প্রতিবেদনসহ এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ কাউছার, নাঈম সরদার এবং বায়েজীদ হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার।
গত ১৬ এপ্রিল উল্লেখিত বিবাদীদের অনলাইন জুয়া খেলার সকল ওয়েবসাইট, লিংক, গেটওয়ে অবিলম্বে বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আইনি নোটিশ দেন মানবাধিকার সংগঠন ল এন্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট। পরে এ বিষয়ে কোনো সাড়া না পেয়ে গত মাসের শেষ দিকে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সংগঠনটির পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব রিট করেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সমক ল
এছাড়াও পড়ুন:
শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলায় ‘অ্যামিকাস কিউরি’ নিয়োগ ট্রাইব্যুনালের
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলায় সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের আইনি সহায়তাকারী) হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
আজ বৃহস্পতিবার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল এক আদেশে এই নিয়োগ দেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারপতি মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
মামলার অপর আসামি গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জের শাকিল আকন্দ বুলবুল ওরফে মো. শাকিল আলম (৪০)।
শুনানি শেষে প্রসিকিউটর গাজী মোনাওয়ার হুসাইন তামীম সাংবাদিকদের বলেন, বিচারের স্বচ্ছতা, আসামিদের আবার সুযোগ দেওয়া ও আইনের সঠিক ব্যাখ্যা গ্রহণের জন্য ট্রাইব্যুনাল আজ একটি আদেশ দিয়েছেন। সেটি হলো, এই মামলায় মতামত গ্রহণের জন্য, ট্রাইব্যুনালকে সহায়তার জন্য অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ। সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ ওয়াই মশিউজ্জামানকে অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। ট্রাইব্যুনাল স্বপ্রণোদিত হয়ে তাঁকে এই নিয়োগ দিয়েছেন। মামলার পরবর্তী শুনানি ২৫ জুন।
মামলার প্রেক্ষাপট তুলে ধরে গাজী মোনাওয়ার বলেন, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মামলা তদন্তাধীন থাকা অবস্থায় এই দুই আসামির কিছু কথোপকথন তদন্ত সংস্থার দৃষ্টিগোচর হয়। সেখানে এক আসামি অপরজনকে বলছেন, ‘২২৭ জনকে হত্যা করার লাইসেন্স পেয়ে গেছি।’ শুধু তা–ই নয়, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তাকেও হুমকিস্বরূপ কথাবার্তা কথোপকথনে প্রকাশিত হয়। তদন্তকারী কর্মকর্তা রেকর্ডটি সংগ্রহ করেন। সেটি সঠিক কি না, তার যাচাই প্রতিবেদন তিনি গ্রহণ করেন। এতে দেখা গেছে, কথোপকথন এই দুজন আসামির।
গাজী মোনাওয়ার বলেন, প্রসিকিউশনের আবেদনের ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল আসামিদের সশরীরে উপস্থিত হয়ে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু তাঁরা ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হয়ে জবাব দেননি। স্বচ্ছতার জন্য তাঁদের হাজির হতে ট্রাইব্যুনাল দুটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেন। বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আজ এ বিষয়ে শুনানি বা আদেশের দিন ধার্য ছিল। দুই আসামির কেউ আজও ট্রাইব্যুনালে উপস্থিত হননি। ট্রাইব্যুনাল আজকেই আদেশ দিতে পারতেন, আইন সেটি কাভার করে। কিন্তু স্বচ্ছতা, আসামিদের আবার সুযোগ দেওয়ার জন্য, আইনের সঠিক ব্যাখ্যা গ্রহণের জন্য ট্রাইব্যুনাল আজ অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দিয়েছেন।