অনলাইনে জুয়ার বিজ্ঞাপন, প্রচার এবং আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে ৩০ দিনের মধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্টদের অগ্রগতি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি কাজী জিনাত হক ও বিচারপতি আইনুন নাহার সিদ্দিকা সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রোববার এ বিষয়ে রুল জারিসহ এই আদেশ দেন।

রুলে অনলাইন জুয়ার সঙ্গে সম্পৃক্ত সব ইন্টারনেট গেটওয়ে, লিংক, অ্যাপ্লিকেশন এবং বিজ্ঞাপন ইন্টারনেট সার্চ ইঞ্জিন গুগল, ইয়াহু, ফেসবুক, ইউটিউব, হোয়াটসঅ্যাপ, বিগোলাইভ, টিকটক, লাইকি, গুগল প্লেস্টোরসহ সব ইলেকট্রনিক সংবাদমাধ্যম থেকে অপসারণে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি অনলাইন জুয়া বন্ধে এবং জড়িতদের কার্যক্রম সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য একটি মনিটরিং সেল গঠনের কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে রিটে উল্লেখিত বিবাদী ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব, তথ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিআইএফইউ), পুলিশের মহাপরিদর্শককে (আইজিপি) অগ্রগতি প্রতিবেদনসহ এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে। 

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তার সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ কাউছার, নাঈম সরদার এবং বায়েজীদ হোসাইন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বদিউজ্জামান তপাদার।

গত ১৬ এপ্রিল উল্লেখিত বিবাদীদের অনলাইন জুয়া খেলার সকল ওয়েবসাইট, লিংক, গেটওয়ে অবিলম্বে বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য আইনি নোটিশ দেন মানবাধিকার সংগঠন ল এন্ড লাইফ ফাউন্ডেশন ট্রাস্ট। পরে এ বিষয়ে কোনো সাড়া না পেয়ে গত মাসের শেষ দিকে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় সংগঠনটির পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব রিট করেন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সমক ল

এছাড়াও পড়ুন:

আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই ১৮৭ শিক্ষার্থীর তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা নিতে নির্দেশ

সাভারের আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই ১৮৭ শিক্ষার্থী সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল—এই তিন বিষয়ে পরীক্ষায় বসতে পারবেন। তাঁদের ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া ভূগোল ও পরিসংখ্যান পরীক্ষা আবারও নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৭ ও ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য সমাজকর্ম বিষয়ে ১৮৭ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি ফাহমিদা কাদের ও বিচারপতি সৈয়দ জাহেদ মনসুরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ রোববার রুলসহ এ আদেশ দেন। ২০২৫ সালের এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা গত ২৬ জুন শুরু হয়।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির ১৮৭ এইচএসসি পরীক্ষার্থীর সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল পরীক্ষার আয়োজনে নিষ্ক্রিয়তা চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. বাকির হোসেন মৃধা গত সপ্তাহে রিটটি করেন। আদালতে রিটের পক্ষে তিনি নিজেই শুনানি করেন। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান ও তানিম খান এবং সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইকরামুল কবির।

আদেশের পর আইনজীবী মো. বাকির হোসেন মৃধা প্রথম আলোকে বলেন, আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ১৮৭ শিক্ষার্থী কলেজটির ভুলের কারণে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল পরীক্ষা দিতে পারছিলেন না। কলেজটির এই বিষয়গুলোর অনুমতি ছিল না। যে কারণে নিজে আবেদনকারী হয়ে জনস্বার্থে রিটটি করেন। এই ১৮৭ জন শিক্ষার্থীর ওই তিন বিষয়ের পরীক্ষা নিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এখন ১৮৭ শিক্ষার্থী পরীক্ষাগুলো দিতে পারবেন।

সাভারের আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে। গত ১৪ জুলাই এক বিজ্ঞপ্তিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড জানায়, আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উচ্চমাধ্যমিক পাঠ্যক্রমে ঐচ্ছিক বিষয় হিসেবে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল বিষয়ে পাঠদানের কোনো অনুমোদন না থাকায় পরও কলেজ কর্তৃপক্ষ ১৮৬ জন শিক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন এবং ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষার ফরম পূরণ করেছে কলেজের অনুমোদনপ্রাপ্ত ভিন্ন তিনটি বিষয়ে। কলেজ কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা শুরুর অনেক আগেই পরীক্ষার্থীদের প্রবেশপত্র পেয়েছে এবং তাতে সমাজকর্ম, পরিসংখ্যান ও ভূগোল বিষয়ে পরীক্ষাদানের সুযোগ না থাকা সত্ত্বেও বোর্ডের সঙ্গে তারা কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি।

আদেশের বিষয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মুহাম্মদ শফিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘১৮৭ শিক্ষার্থীর ক্ষেত্রে ইতিমধ্যে হয়ে যাওয়া ভূগোল ও পরিসংখ্যান পরীক্ষা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ৭ ও ১০ আগস্ট অনুষ্ঠিতব্য সমাজকর্ম বিষয়ে ১৮৭ শিক্ষার্থীকে পরীক্ষায় বসতে অনুমতি দিতেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনা বাস্তবায়ন বিষয়ে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডকে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।’

ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের গত ১৪ জুলাইয়ের বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, আবশ্যিক পাঁচটি পত্রের পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর ৯ জুলাই ২০২৫ তারিখে কলেজ কর্তৃপক্ষ (আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়) বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করে ১৮৬ জন পরীক্ষার্থীর রেজিস্ট্রেশন কার্ড ও প্রবেশপত্র পরিবর্তন করে দেওয়ার জন্য মৌখিকভাবে অনুরোধ করে। ইতিমধ্যে পূর্বনির্ধারিতসংখ্যক প্রশ্নপত্র সব কেন্দ্র সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠিয়ে দেওয়ায় বোর্ডের পক্ষে কিছু করার ছিল না। আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয় ছাড়াও ঢাকা বোর্ডের আওতাধীন আরও ৬টি কলেজে একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে। তবে তাঁদের সংখ্যা মাত্র ২২। অন্যদিকে আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৮৬ জন। উদ্ভূত পরিস্থিতির জন্য কলেজ কর্তৃপক্ষ শতভাগ দায়ী।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আসামিদের আপিল শুনানি চলছে
  • নালায় পড়ে নারীর মৃত্যু: দায়িত্বে অবহেলা তদন্তে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি চেয়ে রিট
  • দুদকের মামলায় অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ পরিদর্শক কারাগারে
  • শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান খানের একই আইনজীবী নিয়ে বার্গম্যানের প্রশ্ন
  • আশুলিয়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সেই ১৮৭ শিক্ষার্থীর তিনটি বিষয়ে পরীক্ষা নিতে নির্দেশ
  • নারায়ণগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সংবর্ধনা ও বার্ষিক ক্রীড়া পুরস্কার বিতরণ
  • কুমিল্লার গোমতী নদীর জায়গায় থাকা ৫০৮ অবৈধ দখল-স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ