গলাচিপার ইউএনওর বদলি প্রত্যাহারের দাবিতে কর্মসূচিতে বৈষম্যবিরোধীদের বাধা
Published: 5th, May 2025 GMT
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মিজানুর রহমানের বদলির আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে হওয়া কর্মসূচিতে বাধা দিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা-কর্মীরা। আজ সোমবার দুপুরে উপজেলা পরিষদ চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে এ ঘটনা ঘটে। আগেও গলাচিপার ইউএনওর বদলি ঘিরে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি হয়েছে।
ইউএনওর পক্ষে মানববন্ধনে অংশ নেওয়া গলাচিপা পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সুবিধাবঞ্চিত একটি পক্ষ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছাড়া ইউএনওকে তাড়াতে মরিয়া হয়ে উঠেছে, যার নেতৃত্বে আছেন পটুয়াখালী জেলা জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যক্ষ শাহ আলমের ছেলে শাহ জুবায়ের আবদুল্লাহসহ তাঁর লোকজন। তিনি আরও বলেন, বদলির কারণে ইউএনওর চলে যাওয়ার খবর উপজেলায় ছড়িয়ে পড়ে। যে কারণে তাঁকে এখানে রাখার জন্য আমরা মানববন্ধন করি। এতে প্রায় ৪০০ মানুষ অংশ নেন; কিন্তু কর্মসূচি শেষে অংশ নেওয়া লোকজন ফেরার পথে একটি গ্রুপ তাঁদের ভীতি ও অপদস্থ করে। এ সময় তাঁদের হাতে লোহার রড ও লাঠিসোঁটা ছিল। তবে কোনো আহতের ঘটনা ঘটেনি।’
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবদুল সোবাহান মিয়া বলেন, ‘এমনিতেই গলাচিপা উপজেলায় জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, এসি ল্যান্ডসহ অনেক পদ শূন্য আছে। এরপরে যদি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে ইউএনওকে তাড়াই, তাহলে উপজেলা পরিষদের সেবা দেওয়ার লোক থাকবে না। বর্তমান ইউএনও অত্যন্ত মানবিক ও সহনশীল, তাই তাঁকে এখানে রাখার জন্য মানববন্ধন করি। এ ছাড়া গণস্বাক্ষর তুলে বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসনের কাছে দেওয়া হবে।’
মানববন্ধনে বাধার বিষয়ে আবদুল সোবাহান মিয়া বলেন, ‘মানববন্ধন শেষে কিছু ছেলে ব্যানার নিয়ে যান। এ সময় আমরা তাঁদের প্রতিরোধ ও প্রতিহত করি।’
মানববন্ধনে বাধা দেওয়ার সময় উপস্থিত ছিলেন বরিশাল মহানগর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম সদস্যসচিব তরিকুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘গলাচিপার ইউএনও এর আগে রাঙ্গাবালী ছিলেন। এখানে এসেও তিনি অনিয়ম-দুর্নীতি করছেন। সেবাপ্রত্যাশীদের নানাভাবে হয়রানি করছেন। যে কারণে তাঁকে এখান থেকে বদলি করা হয়েছে। অথচ আজ সোমবার আওয়ামী লীগের লোকজন বিএনপি সেজে তাঁর বদলির আদেশ ঠেকাতে মানববন্ধন করেন। আমরা ওই মানববন্ধনে বাধা দিয়ে প্রতিহত করি।’
বরিশাল বিভাগীয় অতিরিক্ত কমিশনার মো.
ইউএনও মো. মিজানুর রহমান মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, শারীরিক অসুস্থতার কারণে তিনি গত ৭ এপ্রিল থেকে ২৭ এপ্রিল রাজধানীর একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। গত ১০ এপ্রিল তাঁর বদলির আদেশ হওয়ার সময় তিনি মুমূর্ষু অবস্থায় আইসিইউতে ছিলেন। সুস্থ হওয়ার পরে বদলির আদেশ জানতে পারেন তিনি। তাঁর পক্ষে-বিপক্ষে হওয়া কর্মসূচি সম্পর্কে তিনি অবগত নন। তিনি দাবি করেন, ‘কিছুদিন আগে চালের ডিলারশিপ বণ্টন নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। যাঁরা ডিলারশিপ নিতে পারেননি, তাঁরা হয়তো ক্ষুব্ধ হয়েছেন। এ ছাড়া কোনো কারণ দেখি না।’
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র রহম ন উপজ ল ল কজন আবদ ল
এছাড়াও পড়ুন:
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিতে মানবব
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার কাঁকনহাট কলেজের অধ্যক্ষ মো. সুজাউদ্দিনের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি, কলেজের অর্থ আত্মসাৎ এবং দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে রবিবার (২১ সেপ্টেম্বর) মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। বেলা ১১টা থেকে ঘণ্টাব্যাপী কাঁকনহাট সচেতন নাগরিক সমাজের ব্যানারে পৌরসভা সদরের গোডাউন মোড়ে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
এর আগে একটি মিছিল নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন অংশগ্রহণকারীরা। মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন কাঁকনহাট পৌর বিএনপির সভাপতি ও সাবেক কাউন্সিলর জিয়াউল হক। কলেজের জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মো. আলাউদ্দিনের পরিচালনায় সমাবেশে বক্তব্য দেন, কাঁকনহাট পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সালাম উদ্দিন, সাবেক কাউন্সিলর সেলিম উদ্দিন, জ্যেষ্ঠ প্রভাষক মামুন অর রশিদ, সোবহান আলী, আসাদুল্লাহ কাশেমি এবং সাবেক শিক্ষার্থী ফারুক হোসেন।
আরো পড়ুন:
ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন
দ্রুত অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম চালুর দাবি বাকৃবি শিক্ষার্থীদের
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ‘‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সাবেক স্থানীয় সংসদ সদস্য ওমর ফারুক চৌধুরীর অত্যন্ত আস্থাভাজন ছিলেন সুজাউদ্দিন। ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের প্রভাব এবং সাবেক এমপি ফারুকের দাপটে অধ্যক্ষ ৩৫ জন শিক্ষক-কর্মচারি নিয়োগ দিয়ে পাঁচ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। কলেজ তহবিলের টাকা তছরুপ করেছেন। অডিটেও তার দুর্নীতির প্রমাণ মিলেছে।’’
বক্তারা বলেন, ‘‘অধ্যক্ষ দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। স্বনামধন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটিকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। প্রতিষ্ঠানটিকে বাঁচাতে আমরা এ অবস্থার উত্তরণ চাই। অবিলম্বে অধ্যক্ষ সুজাউদ্দিনের সমস্ত অনিয়ম এবং দুর্নীতির যথাযথ তদন্ত করতে হবে। অন্যথায় আমরা আরো কঠোর আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হব।’’
মানববন্ধনে উত্থাপিত অভিযোগ সম্পর্কে অধ্যক্ষ মো. সুজাউদ্দিন বলেন, ‘‘অভিযোগ আসতেই পারে। তবে এটি প্রমাণ করতে হবে। অভিযোগ কেন করা হচ্ছে, আমি বুঝতে পারছি না। আমি পাঁচ দিনের ছুটিতে আছি। এ সময় এ ধরনের কর্মসূচি পালন করা বিব্রতকর।’’
ঢাকা/কেয়া/বকুল