কুষ্টিয়ায় শারমিন সুলতানা নামের এক নারী চিকিৎসককে তার চেম্বার থেকে টেনে-হিঁচড়ে সড়কে এনে মারধরের ঘটনা ঘটেছে। প্রতারণার নানা অভিযোগ এনে একদল নারী ওই চিকিৎসককে মারধর করেন। পরে পুলিশ এসে চিকিৎসককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। আজ সোমবার দুপুরে শহরের লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সামনে এ ঘটনা ঘটে। 

চিকিৎসক শারমিন সুলতানার স্বামী কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কর্মরত।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অর্জন দাস আগরওয়ালা সড়কে লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়মিত রোগী দেখেন চিকিৎসক শারমিন সুলতানা। আজ দুপুরে চেম্বারে আসার পর আগে থেকে সেখানে অবস্থান করা একদল নারী তার ওপর হামলা করে। ৬-৭ জন নারী এতে অংশ নেয়। এ সময় চেম্বার থেকে টেনে-হিঁচড়ে সড়কের ওপর নিয়ে আসে তারা।

হামলার কয়েকটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ৫ মিনিটের একটি ভিডিওতে দেখা যায়, ৬-৭ জন নারী ভুক্তভোগী চিকিৎসক শারমিন সুলতানাকে টেনে-হিঁচড়ে সড়কের ওপর নিয়ে আসছে। সেখানে তাকে মারধর করা হচ্ছে। 

নারীদের কয়েকজন অভিযোগ করে, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে বিদেশে লোক পাঠানো ও চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাদের মাধ্যমে টাকা নেন ওই চিকিৎসক। পরে চাকরি দিতে পারেননি ওই নারী চিকিৎসক। আবার টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না। এ কারণে তাকে ধরতে এসেছেন তারা। 

লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কয়েকজন কর্মচারী জানান, তারা ঠেকানোর চেষ্টা করলে ওই নারীরা হামলা চালায়। স্থানীয়রা ইন্ধন দিয়ে নারীদের দিয়ে হামলা চালিয়েছে। চিকিৎসককে বেদম মারধর করা হয়েছে। তাদের যদি কোনো অভিযোগ থাকে পুলিশকে জানাতে পারত।

এ দিকে হামলার সময় পুলিশে খবর দেওয়া হয়। পরে কুষ্টিয়া মডেল থানা থেকে পুলিশের একটি দল এসে চিকিৎসক শারমিন সুলতানাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়। এরপর সেখানে চিকিৎসকরা ভিড় করেন।

চিকিৎসক শারমিন সুলতানার স্বামী কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক ডা.

মাসুদ রানা বলেন, ‘আমার স্ত্রীর বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হচ্ছে সেগুলোর কোনো ভিত্তি নেই। তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে। আমার স্ত্রী কোনো দিন মেহেরপুরে যাইনি। ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আমার স্ত্রীকে আজ কল করে ডেকে নিয়ে যান। সেখানে আগে থেকেই ওইসব নারীরা বসেছিল। এরপর তারা হামলা করে। আমি খবর শুনে সেখানে গেলে আমার ওপরও হামলার চেষ্টা চালানো হয়। আমি সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।’ 

কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, নারী চিকিৎসককে মারধর করা হচ্ছে এমন খবর পেয়ে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। ঘটনাস্থল থেকে নারী চিকিৎসককে উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। যেসব অভিযোগে তার ওপর হামলা হয়েছে তার স্বপক্ষে কোনো কাগজপত্র আছে কি-না সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। 

রাতে চিকিৎসকদের একটি দল থানায় যায়। তারা নারী চিকিৎসকের ওপর হামলার নিন্দা জানান। এ ঘটনায় দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি করেন তারা।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম রধর ড য় গনস ট ক স ন ট র চ ক ৎসকক র ওপর র একট

এছাড়াও পড়ুন:

প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ

নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে আবারও সড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ মিছিল ও জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা তাদের ওপর প্রধান শিক্ষকের লেলিয়ে দেওয়ার বহিরাগতদের হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন স্লোগান দেয়। আজ বুধবার সাড়ে ১০টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা এসব কর্মসূচি পালন করে।

এর আগে আজ সকালে প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের তদন্তে গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা বিদ্যালয়ে যাওয়ার আগে সেখানে শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়। তখন প্রধান শিক্ষকের পক্ষ হয়ে বহিরাগত একদল তরুণ ও বিদ্যালয়ের কর্মচারী শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালান। তাঁরা শিক্ষার্থীদের রড দিয়ে আঘাত করেন। এতে মো. তামিম ও ইয়াসিন আরাফাত নামের দুই শিক্ষার্থী আহত হয়।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানায়, শিক্ষিকাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, শিক্ষার্থীদের কোচিং করতে বাধ্য করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের জড়িত প্রধান শিক্ষক রিয়াদ মাহমুদের অপসারণ ও বিচারের দাবিতে বেশ কিছুদিন ধরে তারা আন্দোলন করছে। তাদের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসনের তরফ থেকে এরই মধ্যে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আজ সকালে ওই তদন্ত কমিটি সরেজমিনে বিদ্যালয়ে তদন্ত করেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী তাদের প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে জেলা শহর মাইজদীতে সুধারাম থানার পাশে সড়কে অবস্থান নেয়। প্রায় এক ঘণ্টা সময় ধরে শিক্ষার্থীরা সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। এ সময় পুলিশ ও সেনবাহিনীর কর্মকর্তারা সেখানে গিয়ে শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সরিয়ে দেয়।

অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য প্রধান শিক্ষক মাহমুদ রিয়াদকে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও তিনি ফোন ধরেননি। ফলে শিক্ষার্থীদের ওপর বহিরাগতদের দিয়ে হামলার বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

কথা হয় তদন্ত কমিটির প্রধান জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ফাহিম হাসান খানের সঙ্গে। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, তিনি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ সরেজমিনে তদন্ত করেছেন। সব পক্ষের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন।

জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিয়াক আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, নোয়াখালী উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। তদন্তের মধ্যেই আজ শিক্ষার্থীরা তাঁর কার্যালয়ের সামনে কর্মসূচি পালন করেছে। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগও তিনি পেয়েছেন। সবকিছু তদন্তের আওতায় আসবে। কমিটির প্রতিবেদনের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবিতে নোয়াখালীতে শিক্ষার্থীদের সড়ক অবরোধ