Samakal:
2025-05-06@00:00:47 GMT

দহন দিনের দিনলিপি

Published: 5th, May 2025 GMT

দহন দিনের দিনলিপি

চৈত্রের খাঁ-খাঁ রোদ্দুর। প্রখর সূর্যের তাপ, গোসলের আগের সময়টা। নাওঘাটার ওপাশ থেকে ভেসে আসছে ঝিঁঝিঁ পোকার একটানা ডাক। চাম্পা ফুফুদের কাইডা থেকে একটা বিরক্তিকর মোরগ মাঝেমধ্যেই কুক্কুরু কুঁউউ করে ডেকে উঠছে। বাড়ির উঠানে সফেদা গাছের ফাঁক দিয়ে রোদের ছায়া পড়ে আছে, যেন সূর্যের টুকরা মাটিতে বিছিয়ে রাখা হয়েছে।
খালপাড়ের দিকে তাকাতেই চোখ পড়ল রুবেলের শ্বশুরের দিকে। অত্যন্ত পরিশ্রমী মানুষ। আজ তাঁর অনেক কাজ। ঘামে ভেজা শরীর, হাতে হাতুড়ি। ট্রলার মেরামতের কাজে ব্যস্ত। একটার পর একটা আঘাত করে যাচ্ছেন, যেন কাঠের ভেতর জীবন ঢেলে দিচ্ছেন। বাড়ির উঠানের ঠিক মাঝখানে আমরা। আমি, ফাগুন কাকা, রাফি, সমির, সাজিদ ক্রিকেট খেলায় মত্ত। চারদিকে খাঁ-খাঁ রোদ্দুরেও কারও যেন কিছুই হচ্ছে না। রোদের আলোতে গাছের ছায়ায় নতুন এক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। উভয় দৃশ্য যেন ছবির মতো। সাজিদ আউট হয়ে ব্যাটটা মাটিতে ছুড়ে দিয়ে ফিল্ডিংয়ে যাচ্ছে আর রাফি ব্যাট হাতে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিক তখনই অর্ধনির্মিত বিল্ডিং থেকে ছোট কাকি চিৎকার করে উঠলেন, ‘এত চিল্লাচিল্লি কর কেন? এই গরমে এত খেলা কিসের! বাসায় গিয়ে পড়াশোনা কর। আমার ছেলেটা একটু ঘুমাচ্ছে। উঠে গেলে সবার খবর আছে।’ আমরা তাঁর কথায় কান দিলাম না। খেলেই যাচ্ছি। শেষ ম্যাচ বলেছিলাম কিন্তু ইতোমধ্যে ছয়টা ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে। আরও খেলা হবে। যতক্ষণ দম আছে।
সে বছরটা যেন চৈত্রে আটকে গিয়েছিল। চৈত্রের দহন তীব্র থেকে তীব্রতর হলো। আমরা খেলা থামায়নি। দারুণ এক সময় কেটেছে মাঠে-ঘাটে-জলে-জঙ্গলে। 
ইশ সেই মুহূর্তগুলো! সময় কত দ্রুত চলে যায়। এখন আর উঠান দখল করে খেলতে পারি না। রোদে পুড়ে বকাঝকা খেয়ে খেলাধুলা করার দিনগুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। সেই উঠান এখন দখল করেছে ছোট কাকির সেই ছেলেটি কিংবা বাড়ির অন্য ছোট শিশুরা।
তারাও কি আমাদের মতো বকা খায়? কোনো ঘরের টিনের ওপর বল পড়লে তারাও কি আমাদের মতোই দৌড়ে ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে যায়। তারাও কি উপভোগ করছে আমাদের সেই চিৎকারমাখা শৈশব? সময় বদলায়, উঠানের গল্প বদলায়। কিন্তু স্মৃতির উঠান? সেটা ঠিক আগের মতোই রয়ে যায়। v
সুহৃদ বরিশাল (স্বরূপকাঠি)
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

বিরে শিফা: একটি অলৌকিক কুয়ার গল্প

মদিনা থেকে প্রায় ১০২ কিলোমিটার দূরে বদর যুদ্ধের প্রান্তরের কাছে একটি কুয়া রয়েছে, যার নাম বিরে শিফা বা নিরাময় কুয়া। কুয়ার নামের মধ্যেই লুকিয়ে আছে এর মহিমা। আরবি ‘বির’ অর্থ কুয়া এবং ‘শিফা’ অর্থ নিরাময় বা আরোগ্য। এই কুয়ার পানি রোগমুক্তি ও সুস্থতার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। বদর যুদ্ধের পর এই কুয়ার পানি মহানবী (সা.)-এর একটি অলৌকিক মুজিজার মাধ্যমে বিষাক্ত ও লবণাক্ত অবস্থা থেকে সুপেয় ও সুস্বাদু পানিতে পরিণত হয়। আজও এই কুয়ার পানি মুসলমানদের জন্য রোগমুক্তির আশীর্বাদ হিসেবে বিবেচিত হয়।

বিরে শিফা কুয়াটি মদিনা থেকে বদর যাওয়ার পথে মূল সড়ক থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার ভেতরে একেবারে বদর যুদ্ধের প্রান্তরের কাছাকাছি এলাকায় অবস্থিত। বদর যুদ্ধ ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। এই যুদ্ধে মুসলমানরা সংখ্যায় কম হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহর সাহায্যে বিজয় লাভ করে। যুদ্ধ শেষে মহানবী (সা.) এবং তাঁর সাহাবিরা মদিনায় ফিরে আসার পথে পানির সংকটে পড়েন। তখন তাঁরা বিরে শিফা কুয়ার কাছে এসে পৌঁছান।

বিরে শিফা কুয়া, মদিনা

সম্পর্কিত নিবন্ধ