Samakal:
2025-06-22@13:43:44 GMT

দহন দিনের দিনলিপি

Published: 5th, May 2025 GMT

দহন দিনের দিনলিপি

চৈত্রের খাঁ-খাঁ রোদ্দুর। প্রখর সূর্যের তাপ, গোসলের আগের সময়টা। নাওঘাটার ওপাশ থেকে ভেসে আসছে ঝিঁঝিঁ পোকার একটানা ডাক। চাম্পা ফুফুদের কাইডা থেকে একটা বিরক্তিকর মোরগ মাঝেমধ্যেই কুক্কুরু কুঁউউ করে ডেকে উঠছে। বাড়ির উঠানে সফেদা গাছের ফাঁক দিয়ে রোদের ছায়া পড়ে আছে, যেন সূর্যের টুকরা মাটিতে বিছিয়ে রাখা হয়েছে।
খালপাড়ের দিকে তাকাতেই চোখ পড়ল রুবেলের শ্বশুরের দিকে। অত্যন্ত পরিশ্রমী মানুষ। আজ তাঁর অনেক কাজ। ঘামে ভেজা শরীর, হাতে হাতুড়ি। ট্রলার মেরামতের কাজে ব্যস্ত। একটার পর একটা আঘাত করে যাচ্ছেন, যেন কাঠের ভেতর জীবন ঢেলে দিচ্ছেন। বাড়ির উঠানের ঠিক মাঝখানে আমরা। আমি, ফাগুন কাকা, রাফি, সমির, সাজিদ ক্রিকেট খেলায় মত্ত। চারদিকে খাঁ-খাঁ রোদ্দুরেও কারও যেন কিছুই হচ্ছে না। রোদের আলোতে গাছের ছায়ায় নতুন এক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। উভয় দৃশ্য যেন ছবির মতো। সাজিদ আউট হয়ে ব্যাটটা মাটিতে ছুড়ে দিয়ে ফিল্ডিংয়ে যাচ্ছে আর রাফি ব্যাট হাতে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিক তখনই অর্ধনির্মিত বিল্ডিং থেকে ছোট কাকি চিৎকার করে উঠলেন, ‘এত চিল্লাচিল্লি কর কেন? এই গরমে এত খেলা কিসের! বাসায় গিয়ে পড়াশোনা কর। আমার ছেলেটা একটু ঘুমাচ্ছে। উঠে গেলে সবার খবর আছে।’ আমরা তাঁর কথায় কান দিলাম না। খেলেই যাচ্ছি। শেষ ম্যাচ বলেছিলাম কিন্তু ইতোমধ্যে ছয়টা ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে। আরও খেলা হবে। যতক্ষণ দম আছে।
সে বছরটা যেন চৈত্রে আটকে গিয়েছিল। চৈত্রের দহন তীব্র থেকে তীব্রতর হলো। আমরা খেলা থামায়নি। দারুণ এক সময় কেটেছে মাঠে-ঘাটে-জলে-জঙ্গলে। 
ইশ সেই মুহূর্তগুলো! সময় কত দ্রুত চলে যায়। এখন আর উঠান দখল করে খেলতে পারি না। রোদে পুড়ে বকাঝকা খেয়ে খেলাধুলা করার দিনগুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। সেই উঠান এখন দখল করেছে ছোট কাকির সেই ছেলেটি কিংবা বাড়ির অন্য ছোট শিশুরা।
তারাও কি আমাদের মতো বকা খায়? কোনো ঘরের টিনের ওপর বল পড়লে তারাও কি আমাদের মতোই দৌড়ে ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে যায়। তারাও কি উপভোগ করছে আমাদের সেই চিৎকারমাখা শৈশব? সময় বদলায়, উঠানের গল্প বদলায়। কিন্তু স্মৃতির উঠান? সেটা ঠিক আগের মতোই রয়ে যায়। v
সুহৃদ বরিশাল (স্বরূপকাঠি)
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

পোশাক কারখানায় ডাকাতি, কোটি টাকার মালপত্র লুট

সাভারে একটি তৈরি পোশাক কারখানায় ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। গত শনিবার রাতে জিরানীর বাড়ইপাড়া এলাকার হক অ্যাপারেলস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড নামক কারখানার নিটিং সেকশন ও গুদামে এই ডাকাতির ঘটনা ঘটে।

ডাকাতরা কারখানার শ্রমিক ও নিরাপত্তাকর্মীদের বেঁধে রেখে সুতাসহ প্রায় কোটি টাকার মালপত্র লুট করে নিয়ে গেছে। এ ঘটনায় রোববার আশুলিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ডাকাত দলের সদস্যদের গ্রেপ্তার কিংবা লুট হওয়া মালপত্র উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।

কারখানার কর্মকর্তারা জানান, শনিবার রাত ৪টার দিকে ১৫-১৬ সদস্যের ডাকাত দল হক অ্যাপারেলস অ্যান্ড টেক্সটাইল লিমিটেড কারখানার মূল ভবনের পেছনের দিকের দেয়াল টপকে ভেতরে প্রবেশ করে। এ সময় সেখানে নিটিং সেকশনে কর্মরত দু’জন অপারেটরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বেঁধে ফেলে। একইভাবে কারখানাটির দু’জন নিরাপত্তারক্ষীকেও বেঁধে রাখে। পরে নিটিং শাখার দুটি কম্পিউটার ও গুদাম থেকে ১০ টন ফেব্রিক, পাঁচ টন সুতাসহ আনুমানিক এক কোটি টাকার মালপত্র লুট করে দুটি ট্রাকে তুলে নিয়ে যায় ডাকাতরা।

কারখানাটির জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) নজরুল ইসলাম বলেন, অস্ত্রধারী ডাকাত দলের কাছে দুটি পিস্তল ও রামদা ছিল। মুখে মাস্ক থাকলেও তারা গুদামের কাপড় দিয়ে পুরো মুখ ঢেকে নিয়েছিল। এ ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও ধরা পড়েনি কেউ। মালপত্রও উদ্ধার হয়নি।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, ডাকাতির খবর পাওয়ার পরপরই পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ বিষয়ে কারখানা কর্তৃপক্ষ লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। মামলা প্রক্রিয়াধীন। বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। জড়িতদের চিহ্নিত করে দ্রুত আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ