Samakal:
2025-11-07@08:50:42 GMT

দহন দিনের দিনলিপি

Published: 5th, May 2025 GMT

দহন দিনের দিনলিপি

চৈত্রের খাঁ-খাঁ রোদ্দুর। প্রখর সূর্যের তাপ, গোসলের আগের সময়টা। নাওঘাটার ওপাশ থেকে ভেসে আসছে ঝিঁঝিঁ পোকার একটানা ডাক। চাম্পা ফুফুদের কাইডা থেকে একটা বিরক্তিকর মোরগ মাঝেমধ্যেই কুক্কুরু কুঁউউ করে ডেকে উঠছে। বাড়ির উঠানে সফেদা গাছের ফাঁক দিয়ে রোদের ছায়া পড়ে আছে, যেন সূর্যের টুকরা মাটিতে বিছিয়ে রাখা হয়েছে।
খালপাড়ের দিকে তাকাতেই চোখ পড়ল রুবেলের শ্বশুরের দিকে। অত্যন্ত পরিশ্রমী মানুষ। আজ তাঁর অনেক কাজ। ঘামে ভেজা শরীর, হাতে হাতুড়ি। ট্রলার মেরামতের কাজে ব্যস্ত। একটার পর একটা আঘাত করে যাচ্ছেন, যেন কাঠের ভেতর জীবন ঢেলে দিচ্ছেন। বাড়ির উঠানের ঠিক মাঝখানে আমরা। আমি, ফাগুন কাকা, রাফি, সমির, সাজিদ ক্রিকেট খেলায় মত্ত। চারদিকে খাঁ-খাঁ রোদ্দুরেও কারও যেন কিছুই হচ্ছে না। রোদের আলোতে গাছের ছায়ায় নতুন এক দৃশ্যের অবতারণা হয়েছে। উভয় দৃশ্য যেন ছবির মতো। সাজিদ আউট হয়ে ব্যাটটা মাটিতে ছুড়ে দিয়ে ফিল্ডিংয়ে যাচ্ছে আর রাফি ব্যাট হাতে নেওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে। ঠিক তখনই অর্ধনির্মিত বিল্ডিং থেকে ছোট কাকি চিৎকার করে উঠলেন, ‘এত চিল্লাচিল্লি কর কেন? এই গরমে এত খেলা কিসের! বাসায় গিয়ে পড়াশোনা কর। আমার ছেলেটা একটু ঘুমাচ্ছে। উঠে গেলে সবার খবর আছে।’ আমরা তাঁর কথায় কান দিলাম না। খেলেই যাচ্ছি। শেষ ম্যাচ বলেছিলাম কিন্তু ইতোমধ্যে ছয়টা ম্যাচ খেলা হয়ে গেছে। আরও খেলা হবে। যতক্ষণ দম আছে।
সে বছরটা যেন চৈত্রে আটকে গিয়েছিল। চৈত্রের দহন তীব্র থেকে তীব্রতর হলো। আমরা খেলা থামায়নি। দারুণ এক সময় কেটেছে মাঠে-ঘাটে-জলে-জঙ্গলে। 
ইশ সেই মুহূর্তগুলো! সময় কত দ্রুত চলে যায়। এখন আর উঠান দখল করে খেলতে পারি না। রোদে পুড়ে বকাঝকা খেয়ে খেলাধুলা করার দিনগুলো কোথায় যেন হারিয়ে গেছে। সেই উঠান এখন দখল করেছে ছোট কাকির সেই ছেলেটি কিংবা বাড়ির অন্য ছোট শিশুরা।
তারাও কি আমাদের মতো বকা খায়? কোনো ঘরের টিনের ওপর বল পড়লে তারাও কি আমাদের মতোই দৌড়ে ঝোপঝাড়ে লুকিয়ে যায়। তারাও কি উপভোগ করছে আমাদের সেই চিৎকারমাখা শৈশব? সময় বদলায়, উঠানের গল্প বদলায়। কিন্তু স্মৃতির উঠান? সেটা ঠিক আগের মতোই রয়ে যায়। v
সুহৃদ বরিশাল (স্বরূপকাঠি)
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স হ দ সম ব শ

এছাড়াও পড়ুন:

বিএনপির জনসংযোগে গুলি করে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হত্যায় দুজন গ্রেপ্তার

চট্টগ্রামে বিএনপি মনোনীত প্রার্থীর জনসংযোগে গুলি করে ‘সন্ত্রাসী’ সরোয়ার হোসেন ওরফে বাবলাকে হত্যার ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব। আজ শুক্রবার দুপুরে র‍্যাব-৭ এর চান্দগাঁও ক্যাম্পে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। সংবাদ সম্মেলনে এ ছাড়া চট্টগ্রামের রাউজানে গোলাগুলির ঘটনায় তিনজন এবং বায়েজিদে এক অটোরিকশাচালককে গুলি করার ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তারের তথ্য জানিয়েছে র‍্যাব।

সরোয়ার হত্যায় গ্রেপ্তার দুজন হলেন হেলাল হোসেন ওরফে মাছ হেলাল ও আলা উদ্দিন। গ্রেপ্তার দুজনই মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে নগরের বায়েজিদের হাজিরপুল এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান বলেন, সরোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দুজন র‍্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন। তবে সন্ত্রাসী সাজ্জাদ আলীসহ মামলার অন্য আসামিদের সঙ্গে চলাফেরা রয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। তাঁদের কাছ থেকে বিস্তারিত তথ্য জানতে রিমান্ডের প্রয়োজন রয়েছে।

গত বুধবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরের চালিতাতলী এলাকায় বিএনপির মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর জনসংযোগে গুলি করে হত্যা করা হয় সরোয়ারকে। চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের করা সন্ত্রাসীদের তালিকায় সরোয়ারের নাম রয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে অস্ত্র-চাঁদাবাজির ১৫টি মামলা। একই ঘটনায় সরোয়ার ছাড়াও পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন। এর মধ্যে বিএনপির প্রার্থী এরশাদ উল্লাহও রয়েছেন।

র‍্যাব জানায়, সরোয়ারকে গুলি করার পরদিন চালিতাতলী এলাকায় ইদ্রিস নামে এক অটোরিকশাচালককে গুলি করা হয়। এ ঘটনায় আরমান আলী নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার আসামি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, গুলি করার সঙ্গে ‘সন্ত্রাসী’ শহীদুল ইসলাম ওরফে বুইস্যা ও মিজান জড়িত।

এদিকে গত বুধবার রাতে রাউজানের বাগোওয়ান এলাকায় বিএনপির দুই পক্ষের গোলাগুলিতে পাঁচজন আহত হন। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইশতিয়াক চৌধুরী অভি, মোহাম্মদ জেকি ও মো. জনি নামে তিনজনকে র‍্যাব গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের কাছ থেকে একটি বিদেশি পিস্তল ও গুলি উদ্ধার হয়েছে বলে জানায় র‍্যাব।

সংসদ নির্বাচনের আগে গোলাগুলির ঘটনা রোধে র‍্যাব তৎপর রয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান র‍্যাব-৭-এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল হাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে রেখে প্রার্থীরা যাতে নির্বিঘ্নে জনসংযোগ করতে পারেন, সে লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদারসহ গোয়েন্দা নজরদারি বাড়িয়েছে র‍্যাব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ