বিশ্ব অ্যাজমা দিবস আজ। প্রতিবছর মে মাসের প্রথম মঙ্গলবার দিবসটি পালিত হয়। এর মূল উদ্দেশ্য হলো অ্যাজমা সম্পর্কে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, রোগ নির্ণয় ও ব্যবস্থাপনার গুরুত্ব তুলে ধরা এবং রোগীদের জীবনমান উন্নত করা। এ বছর বিশ্ব অ্যাজমা দিবসের প্রতিপাদ্য: ‘ইনহেলার চিকিৎসা সবার নাগালে রাখুন’।

তবে বর্তমানে চিকিৎসার সহজলভ্যতার পাশাপাশি এটি নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। শুধু সচেতন না থাকার কারণে অনেকেই এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন। যেমন দিনের বেশির ভাগ সময় আমরা ঘরে কাটালেও ঘরের দেয়াল নিয়ে তেমন একটা সচেতন থাকি না।

অভ্যন্তরীণ বায়ুদূষণের কারণ ও স্বাস্থ্যঝুঁকি

২০০৯ সালে প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রথম অভ্যন্তরীণ বায়ু গুণমান নির্দেশিকায় ঘরের আর্দ্রতা ও ড্যাম্পকে অন্যতম স্বাস্থ্যঝুঁকির উৎস হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। এতে বলা হয়, ভেজা ও স্যাঁতসেঁতে বাড়িতে বসবাসকারীদের অ্যাজমা বা শ্বাসকষ্টের ঝুঁকি প্রায় ৭৫ শতাংশ বেশি। কারণ, এই ড্যাম্পের কারণে বাতাসে ছড়ায় ক্ষতিকর অণুজীব, কোষাংশ ও রাসায়নিক উপাদান; যেগুলো শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের শরীরে প্রবেশ করে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ইউরোপীয় দপ্তরের অসংক্রামক রোগ ও পরিবেশ ইউনিটের প্রধান ড.

সারডান ম্যাটিক নির্দেশিকায় বলেন, ‘যেহেতু মানুষ তাদের দৈনন্দিন জীবনের অধিকাংশ সময় বাড়ি, অফিস, স্কুল, স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র বা অন্যান্য ভবনে কাটায়, তাই স্বাস্থ্য রক্ষায় ও সুস্থতার খাতিরে এসব স্থানের দেয়ালের মান ঠিক রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপদেষ্টা ড. মিখাল ক্রিজানাওস্কি বলেন, ‘নির্দেশিকায় থাকা পরামর্শগুলো অভ্যন্তরীণ বায়ুর গুণমান নিশ্চিত করতে একটি বৈজ্ঞানিক মানদণ্ড তৈরি করে দিয়েছে।’

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সূত্রমতে, শুধু ইউরোপীয় ইউনিয়নেই প্রতিবছর নির্মাণসামগ্রীর রাসায়নিক, দহন ও আর্দ্রতার কারণে প্রায় ২০ লাখ ‘হেলদি লাইফ ইয়ারস’ হারিয়ে যায়, যা অকালমৃত্যু বা অ্যাজমা এবং হৃদ্‌রোগের মতো দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন রোগের কারণে হয়ে থাকে। উন্নত দেশগুলোতে শিশুর অ্যাজমার ১৩ শতাংশ ক্ষেত্রেই এর পেছনে দায়ী ভেজা ও স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ। বাংলাদেশেও এই সমস্যা অহরহ বললেই চলে। যার ফলে শিশু, বৃদ্ধসহ অনেকেই ভুগছেন অ্যাজমা কিংবা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যায়।

অ্যাজমা প্রতিরোধে ঘরের বাতাস বিশুদ্ধ রাখার উপায়

ঘরে বায়ু চলাচল নিশ্চিতকরণ: প্রতিদিন কিছু সময় ঘরের দরজা-জানালা খোলা রাখুন, যেন পর্যাপ্ত আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে।

ভেন্টিলেশনের ব্যবহার: রান্নাঘর ও শৌচাগারে এগজস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন, যেন ঘরের দূষিত বাতাস সহজেই বেরিয়ে যেতে পারে।

ঘর স্যাঁতসেঁতে না রাখা: দেয়ালের কোনা, জানালা বা সিঙ্কের নিচে জমা পানি দ্রুত পরিষ্কার করুন, যাতে ঘর স্যাঁতসেঁতে হয়ে না ওঠে।

ড্যাম্প দেখলেই ব্যবস্থা: ঘরের দেয়ালে ড্যাম্প দেখলেই তা পরিষ্কার করুন এবং মূল কারণ অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিন।

সর্বোপরি, অ্যাজমা থেকে সুরক্ষা পেতে অন্য সবকিছুর পাশাপাশি ঘরের যত্ন নেওয়া অত্যন্ত জরুরি। খেয়াল রাখতে হবে, ঘরের দেয়ালগুলো যেন কোনোভাবেই স্যাঁতসেঁতে বা ড্যাম্প না হয়। চাইলে এই সমস্যার স্থায়ী ও কার্যকর সমাধান হিসেবে বাড়িতে রং করার সময় ব্যবহার করতে পারেন বার্জার ড্যাম্পগার্ড। এটি ঘরের দেয়ালে জমে থাকা গভীর আর্দ্রতা রোধ করে ড্যাম্প তৈরি হতে দেয় না এবং বাতাসকে রাখে দীর্ঘ মেয়াদে স্বাস্থ্যকর। এতে অ্যাজমা কিংবা শ্বাসকষ্টজনিত অন্যান্য সমস্যা থেকে দীর্ঘ মেয়াদে সুরক্ষা পাওয়া যায় খুব সহজেই।

প্রয়োজন নীতিনির্ধারকের ভূমিকা ও সম্মিলিত উদ্যোগ

অ্যাজমা থেকে সুরক্ষায় শুধু এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে ঘরের বাসিন্দাদের সচেতনতাই যথেষ্ট নয়। সরকার, নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ও নীতিনির্ধারকদের সক্রিয় ভূমিকা প্রয়োজন। যেমন বাড়ি নির্মাণের সময় যথাযথ নিরোধক ব্যবহার, পরিবেশবান্ধব নকশা, নির্মাণ কোড মানা এবং নিয়মিত তদারকি নিশ্চিত করতে হবে। অ্যাজমা প্রতিরোধে এবং সুস্থ জীবনের জন্য সচেতনতা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনি কার্যকর সমাধান বেছে নেওয়াও জরুরি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ঘর র দ য় ল ব যবহ র সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

জুলাই গণঅভ্যুত্থান দিবসে স্মৃতিস্তম্ভে জেলা বিএনপির পুষ্পস্তবক অর্পণ

৩৬ জুলাই (৫আগস্ট) গণঅভ্যুত্থান দিবস উপলক্ষে শহরের হাজীগঞ্জে নির্মিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি। 

বুধবার ( ৫ আগস্ট) সকালে শহরের হাজীগঞ্জে নির্মিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদ স্মৃতিস্তম্ভে এই শ্রদ্ধা নিবেদন জেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দ। 

এসময়ে উপস্থিত ছিলেন, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যাপক মামুন মাহমুদ, যুগ্ম আহ্বায়ক মাশুকুল ইসলাম রাজিব, জেলা মহিলাদলের সভানেত্রী রহিমা শরীফ মায়াসহ জেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ