হোয়াটসঅ্যাপে এআইয়ের মাধ্যমে কণ্ঠ নকল করে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে প্রতারকেরা
Published: 6th, May 2025 GMT
হোয়াটসঅ্যাপে পরিচিত ব্যক্তিদের পাশাপাশি অপরিচিত ব্যক্তিদেরও সরাসরি ফোন করা যায়। ফলে বার্তা, ছবি বা ভিডিও আদান-প্রদানের পাশাপাশি নিয়মিত অডিও-ভিডিও কল করেন অনেকেই। ব্যবহারকারীদের এ আগ্রহ কাজে লাগিয়ে সম্প্রতি হোয়াটসঅ্যাপে ভয়াবহ প্রতারণার ফাঁদ পেতেছে একদল প্রতারক। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট ব্যক্তির কণ্ঠ নকল করে পরিচিত ব্যক্তিদের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তারা।
সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের তথ্যমতে, প্রতারণার এই কৌশলটির নাম ‘হাই মাম’ স্ক্যাম। প্রথমে অচেনা নম্বর থেকে প্রতারকেরা হোয়াটসঅ্যাপে ‘হাই মাম’ বা ‘হাই ড্যাড’ লিখে বার্তা পাঠায়। বার্তায় বলা হয় এটি তাদের নতুন নম্বর, আগেরটি হারিয়ে গেছে। এরপর ধীরে ধীরে কথোপকথনের মাধ্যমে বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করা হয়। একপর্যায়ে জানানো হয়, জরুরি প্রয়োজনে কিছু টাকা দরকার, কিন্তু তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট কাজ করছে না। বিষয়টিকে আরও বিশ্বাসযোগ্য করে তুলতে এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে নির্দিষ্ট ব্যক্তির কণ্ঠ নকল করে ভয়েস মেসেজ পাঠানো হয়। ভয়েস মেসেজে সন্তানের বা প্রিয়জনের কণ্ঠ শুনে প্রতারকদের দেওয়া অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠিয়ে দেন অনেকে।
আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে কল করে কি ফোন হ্যাক করা যায়০৭ মার্চ ২০২৪এ ধরনের প্রতারণা শুধু সন্তান সেজেই করা হচ্ছে, তা না। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে সংগ্রহ করা বিভিন্ন ব্যক্তির নাম–ঠিকানা কাজে লাগিয়ে পরিচিত ব্যক্তি, বন্ধু বা সন্তান সেজেও প্রতারণার চেষ্টা করা হচ্ছে। নতুন ধরনের এই প্রতারণার বিষয়ে সাইবার নিরাপত্তাপ্রতিষ্ঠান ইসেটের উপদেষ্টা জেক মুর বলেন, ‘এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে কণ্ঠ নকল করা এখন কয়েক সেকেন্ডের ব্যাপার। আমি নিজেই আমার কণ্ঠ এআই দিয়ে তৈরি করে পাঠিয়েছিলাম আমার মাকে, তিনিও বুঝতে পারেননি এটা ভুয়া। বর্তমানে এমন সফটওয়্যার রয়েছে, যা অনলাইনে কারও প্রকাশিত কণ্ঠ অনায়াসে নকল করতে পারে। প্রতারকেরা সেই ভুয়া অডিও ক্লিপ পাঠিয়ে পরিবারের সদস্যদের প্রতারিত করছেন।’
আরও পড়ুনহোয়াটসঅ্যাপে অনাকাঙ্ক্ষিত ফোনকল ও বার্তা ব্লক করবেন যেভাবে২২ মার্চ ২০২৪হোয়াটসঅ্যাপে এ ধরনের প্রতারণা থেকে রক্ষা পেতে সতর্কতা অবলম্বনের পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, হোয়াটসঅ্যাপে টাকা চেয়ে বার্তা এলে যাচাই না করে পাঠানো যাবে না। পরিচিত ব্যক্তির নম্বরে ফোন করে নিশ্চিত হতে হবে তিনি নিজেই বার্তা পাঠিয়েছেন কি না। প্রয়োজনে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একটি ‘গোপন সংকেত বা শব্দ’ ঠিক করে রাখা যেতে পারে, যার মাধ্যমে জরুরি পরিস্থিতিতে সহজেই একে অপরের পরিচয় শনাক্ত করা যাবে।
সূত্র: ডেইলি মেইল
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ য় টসঅ য প
এছাড়াও পড়ুন:
মাইক্রোসফটের কোডের কত শতাংশ এআই দিয়ে লেখা হয়েছে জানেন
মাইক্রোসফটের কোডের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ এখন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার (এআই) মাধ্যমে তৈরি হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সত্য নাদেলা। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার মেনলো পার্কে অনুষ্ঠিত ‘লামাকন’ এআই ডেভেলপার সম্মেলনে সত্য নাদেলা জানান, বর্তমানে মাইক্রোসফটে থাকা মোট কোডের ২০ থেকে ৩০ শতাংশই এআই দিয়ে লেখা হয়েছে।
সম্মেলনে সত্য নাদেলা বলেন, ‘আমার ধারণা, আমাদের রেপোজিটরিতে থাকা কোডের প্রায় ২০ থেকে ৩০ শতাংশ এআই দিয়ে লেখা হয়েছে। এমন কিছু প্রকল্পও আছে, যেগুলোর পুরোটাই এআই বা সফটওয়্যারের মাধ্যমে তৈরি করা হয়েছে। সফটওয়্যার উন্নয়নে এআইয়ের ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে এবং ভবিষ্যতে এ নির্ভরতা আরও বাড়বে।’
সম্মেলনে মেটার কোডিং ব্যবস্থায় এআইয়ের ব্যবহারসংক্রান্ত এক প্রশ্নের উত্তরে মেটার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মার্ক জাকারবার্গ জানিয়েছেন, বর্তমানে সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান না থাকলেও আগামী এক বছরের মধ্যেই মেটার সফটওয়্যার উন্নয়নের অর্ধেক কাজ এআইয়ের মাধ্যমে সম্পন্ন হবে। জাকারবার্গ বলেন, ‘আমাদের ধারণা, আগামী বছরে মানুষের তুলনায় এআইয়ের মাধ্যমে বেশি উন্নয়ন হবে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ হার আরও বাড়বে।’
সাম্প্রতিক সময়ে প্রযুক্তি খাতে এআই দিয়ে কোড লেখার প্রবণতা নিয়ে বিস্তর আলোচনা শুরু হয়েছে। এপ্রিলে গুগলের প্রথম প্রান্তিকের আয়সংক্রান্ত আলোচনায় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সুন্দর পিচাই জানিয়েছিলেন, গুগলের নতুন কোডের প্রায় ৩০ শতাংশ এখন এআই দিয়ে লেখা হচ্ছে।
সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস